নিজস্ব প্রতিবেদক : ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, আইসিটি প্রযুক্তিতেই সীমাবদ্ধ থাকা নয়, ডিজিটাল প্রযুক্তিই হবে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মূলশক্তি। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে আইটি শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে দক্ষ ডিজিটাল মানবসম্পদ হিসেবে তৈরি করতে হবে। এ লক্ষ্যে তিনি ফাইভ-জি নির্ভর ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির গবেষণা, উন্নয়ন ও দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। শিক্ষার্থীদের বাস্তব অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে ইন্টার্নশিপ বাধ্যতামূলক করার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী। গতকাল শনিবার ঢাকায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মোস্তাফা জব্বার। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস ডার্টমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আতাউর করিমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আর বক্তব্য দেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টি চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, রবির সিইও রিয়াজ রশিদ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম এবং যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস এঅ্যান্ডএম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ এস আলম বক্তব্য দেন। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখান। ২০২১ সালে গর্ব করে বলতে পারি আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে বাস করছি। এরই ধারাবাহিকতায় করোনাকালে অচল জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে পেরেছি। এ সময় উন্নত বিশ্বের অনেক দেশে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্বক ছিল, সেখানে দেশ শতকরা ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, আগামী দিনের শিক্ষা হবে লিখিত ও এমসিকিউ পদ্ধতিতে অর্থাৎ অনলাইনে এবং ক্লাসরুমে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারি নেতৃত্বে এরইমধ্যে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদনকারী এবং রপ্তানিকারীদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে বাংলাদেশ। আমরা নাইজেরিয়া ও নেপালে কম্পিউটার ও ল্যাপটপ রপ্তানি করছি। যুক্তরাষ্ট্রে ফাইভ-জি মোবাইল রপ্তানি করা হচ্ছে। মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশ এখন সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও ভারতে ইন্টারনেট ব্যান্ডউডথ রপ্তানি করছে এবং ভুটানে ব্যান্ডউডথ রপ্তানি প্রক্রিয়াধীন। যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়েও বঙ্গবন্ধু বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, আইটিও এবং ইউপিইউ সদস্য পদ অর্জন, টিঅ্যান্ডটি বোর্ড গঠন, কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্বারোপ কিংবা প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করে ডিজিটাল বিপ্লবের বীজ বপন করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৮ বছরে বঙ্গবন্ধুর বপন করা সেই বীজটিকে একটি মহিরূহে রূপান্তর করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ অতীতের তিনটি শিল্পবিপ্লব মিস করে প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছরেরর পশ্চাৎপদতা অতিক্রম করে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্বের যোগ্যতা অর্জন করেছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে দক্ষ ডিজিটাল মানবসম্পদ তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।