তাজ ল্যাবরেটরীজ ইউনানির বিরুদ্ধে কেমিক্যাল যুক্ত ঔষধ সামগ্রী তৈরী ও বাজারজাতের অভিযোগ

অপরাধ স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি : কেরানীগঞ্জের তাজ ল্যাবরেটরীজ ইউনানি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেমিক্যাল যুক্ত ঔষধ সামগ্রীর উতপাদন ও বাজারজাতের এক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, অভিযোগ অনুযায়ী জানা গেছে তাজ ল্যাবরেটরীজ ইউনানির মালিক তাজ বাবু দীর্ঘদিন যাবত রাজধানীর বাবুবাজার এলাকায় কেমিক্যাল ব্যবসার সাথে জড়িত থেকে তার কোম্পানিতে ঔষধ সামগ্রী তৈরিতে বাংলাদেশ ইউনানি ফর্মুলা অনুযায়ী ঔষধ তৈরি না করে শুধুমাত্র কালার,ফ্লেভার ও কেমিক্যাল দিয়ে ঔষধ সামগ্রী তৈরি করে তা বাবুবাজার সহ সারাদেশের ঔষধের পাইকারি বাজারে নাম মাত্র দামে বিক্রি করছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুযায়ী ইউনানি ঔষধ কোম্পানিতে ঔষধ তৈরি কালে দেশীয় ও বিদেশি ভেষজ, বনজ ও ফলজ গাছগাছড়া দিয়ে ঔষধ সামগ্রী তৈরি ও বাজারজাতের নিয়ম নীতি অনুসরণ না করে, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের টেস্টিং ক্রাইটেরিয়া অমান্য করে ঔষধ সামগ্রী তৈরি ও বাজারজাত করছে।


বিজ্ঞাপন

ঔষধ কোম্পানির মালিক ও ঔষধ ব্যাবসায়ীদের একটি সুত্রের দাবি তাজ ল্যাবরেটরীজ ইউনানির তৈরি যৌন উত্তেজক সিরাপ, ট্যাবলেট ও ক্যাপসুলে মানব দেহে ভয়ংকর প্রতিক্রিয়ার প্রভাব বিস্তার করে এমন সব কেমিক্যাল ব্যাবহার করা হয় এর মধ্যে কেফেইন, আফিম উদবুদ্ধ অপিয়াম – অপিয়েট ও ভায়াগ্রার উপাদান এস.এস (সিল্ডনাফিল সাইট্রেড) উল্লেখযোগ্য এবং ভিটামিন সিরাপ, ট্যাবলেট ও ক্যাপসুলে ডেক্সামিথাসন গ্রুপের কেমিক্যাল ও সিপ্রহেপ্টাডিন এর ব্যাবহার করছে।
বেশকিছু দিন পূর্বে তাজ ল্যাবরেটরীজ ইউনানির তৈরিকৃত টি- নিশাত নামক ক্যাপসুলের নমুনা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রিত ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরিক্ষার জন্য প্রেরণ করা হলে উক্ত ট- নিশাত নামক ক্যাপসুলে সিল্ডেনাফিল সাইট্রেড শনাক্ত হয় যাহা প্রতিনিয়ত সেবনে মানব দেহে ভয়ংকর প্রতিক্রিয়া ফেলে। এর প্রভাবে মানব দেহের লিভার, কিডনি ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি রয়েছে শতভাগ।


বিজ্ঞাপন

২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক এক তালিকায় দেখা যায় তাজ ল্যাবরেটরীজ ইউনানির ৪১ টি ঔষধের অনুমোদন করা হয়েছে।
তবে ওই ৪১ টি ঔষধের লেবেল কার্টনের খসড়া ও চুড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে কিনা সে বিষয় রয়েছে যথেষ্ট সংশয়।

এ ছাড়া টি- জিনসিন ও নিউরোজিন (শরবত জিনসিন) নামক ৪৫০ এম.এল যৌন উত্তেজক সিরাপ একই ডিএআর নাম্বার ব্যবহার করে দুই নামে যথাক্রমে টি- জিনসিন ও নিউরোজিন নামে একই শরবত জিনসিন তৈরি ও বাজারজাত করলেও অনুমোদন করা হয়েছে নিউরোজিন নামে যার ভিএআর নাম্বার ইউ-০৭-এ-০২২। তাজ টি ক্যাল – ডি ( কুস্তা খারে মোহরা) ক্যালসিয়াম এন্ড ভিটামিন ডি ৩০ টি ক্যাপসুল ১ বক্স। এর মধ্যে শুধু মাত্র ক্যালসিয়াম কার্বোনেট ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। জেস্টান নামক ৪৫০ এম.এল সিরাপ এর নাম ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তালিকার পাওয়া যায় নাই। তবে জেস্ট্যাব (কূরছ পুদিনা) নামক ক্যাপস্যুল এর নামের তালিকা পাওয়া গেছে তবে কূরছ পুদিনা একক ভেষজ এতে শুধুমাত্র পুদিনা পাতা চুর্ণ ও সহায়ক উপাদানের উপস্থিতি থাকার কথা থাকলেও উক্ত জেস্ট্যাব ক্যাপসুলে কি আছে তা পরিক্ষা করলে জানা জাবে। ফ্লাটুলা ( আরক হাজিম) নামক ৪৫০/২০০/১০০ এম.এল সিরাপ এর বিষয় ও সন্ধেহ আছে। স্ট্রালেক্স (কুরুছ রেহমিন) ৩০ টি ক্যাপসুল এর বক্স যার ডিএআর নাম্বার ইউ-০৭-এ-০২৪। এজভাস নামক ১০০ এম.এল এলকোহল মুক্ত ও তন্দ্রাচ্ছন্ন মুক্ত সিরাপ খেলে মাথা ঝিম ধরে এবং ঘুম আসে। তাজ স্পিরু প্লাস ( স্পিরুলিনা) ক্যাপসুল, এই স্পিরুলিনা তৈরি করতে হলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুযায়ী স্পিরুলিনা প্লান্ট থাকা অবশ্যক অথবা বিদেশ থেকে স্পিরুলিনার কাচামাল ( এক ধরনের শেওলা যা পানিতে জন্মে) আমদানি করতে হবে। তাজ ল্যাবরেটরীজ ইউনানির কারখানায় কি স্পিরুলিনার প্লান্ট আছে? না তারা বিদেশ থেকে স্পিরুলিনা তৈরির কাচামাল আমদানি করে? এ বিষয়ে কি সংশ্লিষ্ট ফাইল অফিসার বা স্থানীয় ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক ও ঔষধ পরিদর্শক কি অবগত আছেন? তাজ ট্রাইজিং ( জিংগো বিলোবা) ৩০ টির ১ বক্স ক্যাপসুল। জিংগো বিলোবা ও একক ভেষজ এতে শুধুমাত্র জিংগো বিলোবা চুর্ণ বা শুস্কসার থাকার কথা কি আছে তাজ ট্রাইজিং ক্যাপসুলে? সংশ্লিষ্টরা কি জানেন? ডায়াবেক ( কূরুছ গার্লিট্যাব) ক্যাপসুল এবং শরবত মিছালির ট্রেড নাম ব্যাবহার করা হচ্ছে টি – পুদিনা নামে আবার জেস্ট্যাব ক্যাপসুলের শাস্ত্রীয় নাম কুরুছ পুদিনা দেওয়া আছে। এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য তাজ ল্যাবরেটরীজ ইউনানির মালিক তাজ বাবুর বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য প্রকাশ করা সম্ভব হলো না।