আজকের দেশ নিউজ ঃ উত্তরার ১৩ নং সেক্টরে আবাসিক বাসায় শামসুদ্দিন আহম্মেদ নামে এক বয়স্ক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন সহ ঘটনার সাথে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ মুসলিম ও আবু সাফি।
রবিবার ১০ এপ্রিল, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ, ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকাসহ উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে ডিবি উত্তরা জোনাল টিম। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে একটি সাটার গান, ৪ রাউন্ড গুলি, লুন্ঠিত এক ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
সোমবার ১১ এপ্রিল, দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার, বিপিএম (বার)।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ১৫ মার্চ উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১৩ নং সেক্টরের ১২ নং রোডের একটি বাসায় শামসুদ্দিন আহম্মেদ নামের এক ব্যক্তি মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের শিকার হন। এ ঘটনার পরের দিন ভিকটিমের ছেলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার দিন ভিকটিম শামসুদ্দিন আহম্মেদের স্ত্রীর আপন ভাতিজা তানভির কয়েকজনকে সাথে নিয়ে তাদের বাসায় বেড়াতে আসে। ভিকটিমের স্ত্রী রাশিদা বেগম তাদের জন্য খাবার রান্না করে বাইরে গেলে তানভির ও সাথে আসা মুসলিম, আবু সাফি টাকা স্বর্ণালংকার লুন্ঠন করতে শুরু করে। বাসায় থাকা ৭৪ বছর বয়সী শামসুদ্দিন বাধা দিলে তারা তাকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। তাদের গ্রেফতার সম্পর্কে তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই ডিবি উত্তরা জোনাল টিম থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে। প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে সিরাজগঞ্জ থেকে মুসলিমকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তার দেয়া তথ্যমতে গ্রেফতার করা হয় আবু সাফিকে। আর তার হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয় একটি সাটার গান, চার রাউন্ড গুলি এবং বাসা থেকে লুন্ঠন করা স্বর্ণালংকার ও নগদ চার হাজার টাকা। অপরাধের মোটিভ সম্পর্কে ডিবি কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃত মুসলিম ও সাফি তানভিরের বন্ধু। তারা প্রত্যেকেই বেকার, ঋণগ্রস্থ ও নেশা করে। তারা মূলত অনেক টাকা পয়সার লোভে ওই বাসায় আসে। আপনজনের সহায়তায় এ ধরণের ঘৃণিত অপরাধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ রকম ঘটনা প্রায়শই ঘটছে। এজন্য আত্মীয়স্বজনের সাথে অপরিচিত কেউ বাসায় আসলে আমাদের সাবধান হওয়া উচিত।
আমাদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে। সন্তানরা কী করে, কোথায় যায়, কার সাথে মিশে পিতা-মাতা হিসেবে তার প্রতিটি খোঁজ খবর রাখার আহ্বান জানান তিনি। গ্রেফতারকৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান ডিবির এ পুলিশ কর্মকর্তা। ডিএমপির গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার কাজী শফিকুল আলম, বিপিএম (সেবা) মহোদয়ের নির্দেশনায় অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার আছমা আরা জাহান এর তত্ত্বাবধানে উত্তরা জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বদরুজ্জামান জিল্লু, বিপিএম এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।