দাকোপ ( খুলনা) প্রতিনিধিঃ খুলনার দাকোপের বাজুয়া – দিগরাজ খেয়াঘাটের বেহাল দশা যেন দেখার কেউ নাই। এলাকাবাসীর ভাষায় এভাবে চলবে আর কতকাল। বাজুয়া-দিগরাজ খেয়াঘাটের আজকের যাত্রীদের ভাটার সময় পারাপাররত অবস্থা থেকে তোলা ছবি।
এভাবেই যুগ যুগ ধরে এই এলাকার মানুষ পার হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার জন্য খেয়া পার হয়ে থাকে। বাজুয়ায় আসতে অথবা বাজুয়া থেকে দেশের কোথায়ও যেতে হলে এভাবেই সকলকে খেয়া পার হতে হয় ভাটার সময়। জানা যায় এই খেয়া-ঘাট আন্তজেলা খেয়াঘাট।
বছরে সরকার এই ঘাট থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে। তারপরেও প্রতিদিন যাত্রীরা এভাবে পার হয়ে থাকলেও দেখার কেউ নাই। শুধু তাই না ভাটার সময় পার হতে হলে হয় কাঁদা ভেঙে ট্রলার উঠতে বা নামতে হয় আর যারা কাঁদা ভাঙতে চায় না তারা কাঁদে করে ১০ টাকা দিয়ে উঠতে বা নামতে হয়।
আর কোন সময় যদি মাঝিদের মায়া লাগে তখন ট্রলার বেধে রাখে দুই তিনটা তারপর থেকে যাত্রীরা পার হয়ে যায়। এছাড়া পারাপাররত যাত্রীরা জানায় ঘাটের রেট চার্ট না টানিয়ে ইচ্ছে মতো টাকা আদায় করলেও দেখার কেউ নাই। এলাকার জনগণের প্রশ্ন বলি হচ্ছে টা কি।
পারাপাররত যাত্রীদের কাছ থেকে জানা যায় বাজুয়া- দিগরাজ খেয়াঘাটে পার হতে গেলে দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত টোল। জলদি ট্রলার দিয়ে যাত্রী পার করে জন প্রতি নিচ্ছে ৫ টাকার জায়গায় ১০ টাকা, মোটরসাইকেল ১০০ টাকা, বাইসাইকেলসহ লোক ২৫ টাকা আর মাল থাকলে তো কথা নাই বিভিন্ন লোকের কাছে বিভিন্ন রকম।
যাত্রীরা বলেন সরকারি রেট চার্টে আছে খেয়াঘাটের ট্রলার দিয়ে পার করে যাত্রী প্রতি নিতে হবে ৫ টাকা। মোটরসাইকেল সহ যাত্রী ১০ টাকা, বাইসাইকেলসহ যাত্রী ৮ টাকা সেখানে ঘাটের তো কোন ট্রলার নাই জলদি ট্রলার দিয়ে ঘাটের যাত্রীদের পার করে আসছে সেই করোনা ভাইরাস শুরু হওয়া থেকে আজ পর্যন্ত।
বাজুয়ার যাত্রীরা জানতে চায় সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ও দায়িত্ব রত প্রশাসন ও আওয়ামীলীগের বড় বড় নেতাদের কাছে এই ভাবে চলবে আর কতদিন। এলাকার জনগণ জানতে চায় লকডাউন তুলে দেওয়ার পর থেকে সারাদেশের নৌযান ও সড়ক পরিবহনের ভাড়া কমানো হয়েছে তবে বাজুয়া- দিগরাজ খেয়াঘাটের ভাড়া কেন সরকারি রেট চার্ট হিসেবে নেওয়া হবে না।
এছাড়া কৈলাশগঞ্জের বুড়িরডাবুর বাজারের মাছ ব্যবসায়ী অরুন সরকার বলেন আরো অভিযোগ রয়েছে ঘাটে কোন সরকারি রেট চার্ট নাই তাই খেয়াল খুশি মতো টাকা আদায় করছে ঘাট ইজারাদাররা। আমি প্রতিদিন দিগরাজে আসি মাছ বিক্রয় করতে ও যাওয়ার সময় বরফ নিয়ে যাই কি বলবো এই ঘাটের কথা এরা মনে যা চায় তাই নিয়ে থাকে প্রতিবাদ করতে চাইলে মাঝিরা ও ঘাটের লোকেরা মারতে আসে জানিনা এরা এতো সাহস কোন জায়গা থেকে পায়।
আমরা জনগণ এদের কাছে জিম্মি হয়ে গেছি। তিনি বলেন কার কাছে অভিযোগ করলে এর প্রতিকার পাবো বলেন। একই কথা বলেন প্রতিদিন এই ঘাট দিয়ে পার হওয়া যাত্রী চুনকুড়ি গ্রামের রাজেস খান তিনি বলেন এদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি বলতে পারেন সাংবাদিক ভাই কার কাছে অভিযোগ করলে এর হাত থেকে আমরা মুক্তি পাবো। প্রতিদিন যা আয় করি তা যদি পথেই দিয়ে যেতে হয় তাহলে কি ভাবে আমরা চলবো আমার মনে হয় বাংলাদেশে এরকম ভাড়া কোন ঘাটে নাই।
প্রতিবাদ করে কোন কাজ হয় না এদের বিরুদ্ধে এরা টাকা দিয়ে সব কিছু ম্যানেজ করে নেয়। আর যারা আইন প্রয়োগ করবে তারাও নিরব প্রশাসনের নাখের ডুগায় থেকে এরা এভাবে জুলুম করে যাচ্ছে দিনের পর দিন কিভাবে। সকলের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘাটের যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কথা জানতে চাইলে জলদি ট্রলার মাঝিরা বলে ১০ টার অর্ধেক দিতে হয় ঘাট ইজারাদারকে আর অর্ধেক পাই আমরা।
একই কথা বলেন ঘাটে টাকা আদায়কারি তিনি বলেন ঘাটে ডাক বেশি তাই ঘাটের ট্রলার দেওয়া যাচ্ছে না জলদি ট্রলার দিয়ে টাকা নিতে হচ্ছে আমাদের করার কিছু নাই। জানা যায় এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী পার হয়ে থাকে আর ঘাটের অবস্থারও বেহাল দশা, দীর্ঘ বাঁশের সাকুর উপর দিয়ে যাত্রীদের ট্রলারে উঠতে গিয়ে ভোগান্তির শেষ নাই, যেন দেখার কেউ নাই।
এক কথায় মরার পর খারার ঘাঁ। খুলনা বিভাগীয় কমিশন অফিস সূত্রে জানা যায় বাজুয়া- দিগরাজ খেয়াঘাট এটা আন্ত-জেলা খেয়াঘাট। বছরে এই ঘাটের ডাক প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। যাত্রীদের দাবি সরকার যেখানে এই ঘাট দিয়ে বছরে এতো টাকা রাজস্ব আদায় করছে আর সেই ঘাটের অবস্থা এই। দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিন্টু বিশ্বাসের কাছে জানালে তিনি বলেন অভিযোগ সত্য হলে অতিরিক্ত টোল আদায় করার কারণে অচিরেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তাই যাত্রীরা সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি দাকোপের গণ- মানুষের নেতা দাকোপের কৃতি সন্তান এ্যাডঃ গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি বলেন ঘাটের জন্য আমি উপরে আলাপ করেছি খুব তাড়াতাড়িই বরাদ্দ হলে ঘাটের কাজ শুরু হবে। বাজুয়ার সকল মানুষের দাবি সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে একটা ঘাট চাই একটা ঘাট চাই।