রাজশাহীতে ডিবি পুলিশের অভিযান ১৩৫০ পিস ব্যথানাশক ট্যাবলেট ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট সহ দুই সহোদর গ্রেফতার

Uncategorized অপরাধ

বিশেষ প্রতিবেদক ঃ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট ব্যাথা-বেদনা নাশক এই ঔষধ টি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক বেস কয়েক বছর পূর্বেই সরকারী হাসপাতাল ও প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে। অথচ ঔষধের ফার্মেসি বা বাজারে এই ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট এর মজুদ শেষ ই হচ্ছে না। রাজশাহীতে ১৩৫০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট সহ দুই সহোদর গতকাল শনিবার রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা শাখা ডিবি’র হাতে গ্রেফতার হয়েছে। এর আগেও রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা শাখা ডিবি’র হাতে নকল ভেজাল ন্যাপ্রক্সিন ট্যাবলেট এসবি ল্যাবরেটরীজ এর পাওয়ার -৩০ ক্যাপসুল। এরপর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশের পৃথক পৃথক দল মিটফোর্ডের পাইকারি ঔষধের বাজার থেকে এবং ফকিরাপুল থেকে নকল মোনাস ১০ প্যান্টেনিক্স ২০ ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে। ওই চক্রের নিজস্ব ঔষধের কারখানা চুয়াডাঙ্গা থেকেও বিপুল পরিমাণ নকল ভেজাল ঔষধ সহ ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের মালিক গিয়াস উদ্দিন ও তার সহোযোগিদের গ্রেফতার করা হয়। শুধু তাই নয় ঝিনাইদহ থেকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক নকল ভেজাল জিম্যাক্স ৫০০, ন্যাপ্রক্সিন ৫০০ ট্যাবলেট উদ্ধার করে।
র‍্যাব ফোর্সেস ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), সিআইডি পুলিশ, ডিবি পুলিশ, এনএসয়াই, ভোক্তা অধিকার সারাদেশে নকল ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ উদ্ধার করেই চলছে তাহলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাজ কি? সঙ্গত কারণেই এ প্রশ্ন উঠতেই পারে। দেশের জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের গুরুত্ব অপরিসীম। ঔষধের উৎপাদন ও বিপননের তদারকির দায়িত্ব ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মনারীরা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব কতোটা পালন করছেন। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বর্তমান মহাপরিচালক দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি ইউনানি, আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির মালিকদের নিয়ে মিটিং করেছেন। উক্ত মিটিংয়ের মুল এজেন্ডা ছিল এলোপ্যাথিক ঔষধের মোড়ক সামগ্রীর নকল করা যাবে না কিন্তু ঔষধের বেশকিছু পাইকারি ও খুচরা ফার্মেসীতে গিয়ে দেখা যায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক নিষিদ্ধ রেনিটিডিন এর আদলে হুবহু রেনিটিডিন এর মোড়কের মতো করে গ্যাস্টিক এর ট্যাবলেট বিপনন করছে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির মালিক পক্ষ। এছাড়াও  সেকলো, লোসেক্টিল সহ বিভিন্ন নামী দামি কোম্পানির নামি দামি ব্রান্ডের ঔষধ নকল হচ্ছে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানিতে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসব কোম্পানতে  হানা দিয়ে উদ্ধার করেছে নাামি দামী ব্রান্ডের ঔষধ।  ওমিপ্রাজল, ইসমিপ্রাজল, প্যান্টাপাজল ও র‍্যাবিপ্রাজল এর সাথে মিল রেখে গ্যাস্টিক ও আলসারের ঔষধ সামগ্রীর উতপাদন ও বাজারজাত করছে দেদারসে। এবিষয়ে পত্র পত্রিকা সহ ইলেকট্রনিক মিডিয়া রিপোর্ট হলেও টনক নড়ে না ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের। এসব ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক  গ্যাস্টিক ও আলসারের ঔষধ সামগ্রীর মোড়ক সামগ্রীর অনুমোদনের জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ইউনানি বিশেষজ্ঞ ও আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞ  কর্তৃক মোড়ক সামগ্রীর অনুমোদনের জন্য নথিপত্র তৈরিসহ মোড়ক সামগ্রীর অনুমোদনের সুপারিশ / নোট পঠানোর সময় কি রেনিটিডিন, সেকলো ও লোসেক্টিলের এর সদৃশ্য মোড়ক সামগ্রীর অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেন? থেকে যায় অনেক অনেক প্রশ্ন। ব্যাথা নাশক ট্যাবলেট ন্যাপ্রক্সিন এর আদলে মোড়ক সামগ্রী ব্যাবহার করছে অনেক ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। এসব কি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা দেখন না?  কি করেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ঔষধের বাজার মনিটরিং টিম?  সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্মকর্তারা কি এসব জানেন না? এসব মোড়ক সামগ্রীর অনুমোদন ই বা হয় কিভাবে?  প্রশ্নের পর প্রশ্ন থেকে যায় অনেক অনেক প্রশ্ন এর উত্তর কোথায়?    এবার আসা যাক রাজশাহীর ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার এর বিষয়ে,  রাজশাহীতে গ্রেফতারকৃত দুই ভাই মো: মাসুদ রানা (২৮) ও মো: রুবেল আলী (২০) রাজশাহী মহানগরীর দামকুড়া থানার চর মাজারদিয়াড় গ্রামের মো: হাজমত আলীর ছেলে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার ২৩ এপ্রিল, বিকেলে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো: আরেফিন জুয়েলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো: আব্দুল্লাহ আল মাসুদের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক মো: মশিয়ার রহমান এসআই এএসএম সাইদুজ্জামান ও তার টিম মহানগর এলাকায় মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও বিশেষ অভিযান ডিউটি করছিলো। এসময় তারা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, রাজপাড়া থানার শ্রীরামপুর টি-বাঁধ এলাকায় দুই ব্যক্তি ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করছে। উক্ত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশের ঐ টিম বিকেল পৌনে ৪ টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আসামী মো: মাসুদ রানা ও মো: রুবেল আলীকে গ্রেফতার করে। এসময় আসামিদের কাছ থেকে ১৩৫০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার হয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী সরকারি হাসপাতাল ও প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি নিষিদ্ধ এই ব্যাথানাশক ট্যাবলেট যেন ঔষধ কোম্পানি ও ঔষধ ব্যাবসায়ীদের কাছে আলাদিনের চেরাগের মতো হয়ে উঠেছে।সচেতন মহলের মতে এসব ঔষধ কোম্পানির বিতর্কিত ঔষধ বন্ধ করা না হওয়ার কারণে স্বনামধন্য এলোপ্যাথিক কোম্পানি ব্যাবসায়ীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অপরদিকে ধধংস হচ্ছে দেশের বুনিয়াদি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি তথা ট্রেডিশনাল মেডিসিনের বাজার ঠিকমতো মনিটরিং এর অভাব কোনভাবেই মাথাতুলে দাড়াতে পারছে না ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ শিল্প। 


বিজ্ঞাপন