সরিষাবাড়ীতে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না ফসলি জমিতে করে গড়ে উঠেছে ইটভাটা,স্বাস্থ্য ঝুকি চরমে

Uncategorized অপরাধ

সরিষাবাড়ী(জামালপুর) প্রতিনিধি ঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ইটভাটা। ফসলি জমি নষ্ট ও ঘন বসতি এলাকায় ইটভাটা নির্মাণ নিষেধ থাকলেও গড়ে উঠছে একের পর এক ইটভাটা।

ফলে উজাড় হয়ে যাচ্ছে বনাঞ্চল ও মূল্যবান গাছসহ কৃষিজমি। এতে বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে পরিবেশ। অন্যদিকে ইটভাটা থেকে নিগর্ত কালো ধোঁয়ার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি সহ হুমকির মুখে রয়েছে জীববৈচিত্র্য।

তবে এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের।

জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ২০ টির মত ইটভাটা থেকে নির্গত হচ্ছে পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ধোঁয়া। অধিকাংশ ইটভাটায় কয়লার বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে গাছের গুড়ি।এসব ভাটায় সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগী এলাকার লোকজন। আবাদি জমির টপসয়েল যাচ্ছে ইট ভাটাগুলোতে।

আর কিছু কৃষক ইট ভাটায় উপরিভাগের মাটি দেয়ার কারণে জমিগুলো পরিণত হচ্ছে খাদে। এতে পাশের উর্বর জমিগুলো ভেঙে পড়ায় বাধ্য হচ্ছে অন্য কৃষকরা ইটভাটায় মাটি দিতে । ইটভাটার ফলে গাছের ফলমূলসহ আবাদি ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এতে কৃষি খাতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এসব ইটভাটার মাটি, ইট, কয়লা ও গাছ বহনকারী কৃষিকাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর যানবাহন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

এতে গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। গাড়ি চলাচলের সময় ও ইটভাটার সামনে রাস্তায় থাকা মাটির স্তর ও ধূলাবালির কারণে যাতায়াতে ভোগান্তি সহ প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

অথচ অবৈধ এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণ নিয়ে প্রশ্ন সাধারণ জনগণের মাঝে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ তে উল্লেখ আছে, ইটভাটায় ফসলি জমির উপরের মাটি ব্যবহার করলে প্রথমবারের জন্য দুই বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানা ও দ্বিতীয় বার একই অপরাধের জন্য ভাটা কর্তৃপক্ষকে ২ থেকে ১০ বছরের জেল এবং ২ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। অনুমোদন না নিয়ে ইটভাটা স্থাপন করলে এক বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা যাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বদরুল হাসান বলেন, ইটভাটা থেকে নির্গত এই দূষিত উপাদান মানবদেহে শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে প্রবেশ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বেশি দেখা যায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা বলেন,এ বিষয়ে আমরা অবগত আছি,প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জামালপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মাসুদ রানা জানান,তদন্ত করে ঢাকায় প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পর্যায়ক্রমে সরিষাবাড়ীতেও নিয়ম অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।