বাংলাদেশকে রাশিয়া থেকে অস্ত্র ক্রয় করতে নিষেধ করলো আমেরিকা

Uncategorized আন্তর্জাতিক

কুটনৈতিক বিশ্লেষক ঃ যুক্তরাষ্ট্রের আস্থাশীল অংশীদার নয় এমন দেশগুলোর সঙ্গে খাতির বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি বনি ডেনিস জেনকিনস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা ক্যাটাগরিক্যালি রাশিয়া থেকে সমরাস্ত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের নিরুৎসাহিত করেন। মার্কিন প্রতিনিধিরা যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ডিফেন্স ইনিশিয়েটিভের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি এখানে বহুপক্ষীয় প্রতিরক্ষা কাঠামো তৈরিতেও জোর দেন। তারা এই চিন্তার প্রচার এবং এটিকে কার্যকর করার জন্যই রাশিয়া থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা ক্রয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক করে দিয়েছে।

মার্কিন আইন ক্যাটসার অধীনে ইরান, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার সঙ্গে বড় ধরনের লেনদেন বিশেষ করে সামরিক লেনদেন নিষিদ্ধ। কোনো দেশ ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে তার ওপরও যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে উন্নতমানের মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফট সুকোই প্লেন বা অন্যান্য সমরাস্ত্র কেনার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে। প্রতিবেশী মিয়ানমার ওই নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনছে।
তবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের এই সতর্কবার্তাকে পরামর্শ হিসেবে নিয়েছে।ঢাকা এই পরামর্শ ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে। তবে অস্ত্র ক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ হবে সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং দেশের স্বার্থ বিবেচনায় রেখে।যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ক্যাটসা বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে যেসব বিষয়ে ক্রয় চুক্তি বা রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে বা ক্রয়ের বিষয়টি পাইপলাইনে রয়েছে, তার ভবিষ্যৎ যেন হুমকির মুখে না পড়ে সেই নেগোসিয়েশনে রয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান সামরিক তথা নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও জোরদারে বদ্ধপরিকর যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে ঢাকা-ওয়াশিংটন সিরিজ আলোচনা চলছে। মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্ব সংলাপ, যাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সমরাস্ত্র ক্রয়ের গোপনীয়তা রক্ষার চুক্তি জিসোমিয়ার আপডেট ড্রাফট হস্তান্তর করা হয়।

ব্যাক টু ব্যাক দু’টি সংলাপের ধারাবাহিকতায় আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সংলাপ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ওই সংলাপে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র মিলিটারি টু মিলিটারি রিলেশনকে আরও জোরদার করার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই মনে করে বিদ্যমান বিশ্ব বাস্তবতায় দুই দেশের নিরাপত্তা সহযোগিতা মজবুত করা জরুরি। উভয়ে প্রতিরক্ষা তথা নিরাপত্তাকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে জ্ঞান করে। সুনির্দিষ্টভাবে নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ফোরাম ‘নিরাপত্তা সংলাপ’-এর সাম্প্রতিক আলোচনার বিস্তারিত জানিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।


বিজ্ঞাপন