নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা কর্তৃক ডাকাতি মামলার রহস্য উদ্ঘাটন এবং জড়িত ২জন আসামী গ্রেফতার সহ ছিনতাই কৃত মোটর সাইকেল ও হেলমেট উদ্ধার করেছে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।
মামলার বাদী রিদওয়ানুল হক গত ৯ ডিসেম্বর ২০২১ সালে রাত অনুমান সাড়ে ৮ টার সময় সীতাকুণ্ড খানাধীন বায়েজিদ লিংক রোড হইয়া তাহার ব্যবহৃত মোটর সাইকেল নং-চট্টমেট্রো-ল-১৬-৫২৮২ যোগে বাসায় ফেরার পথে ঘটনাস্থল বায়েজিদ লিংক রোড ৪নং ব্রিজের উপরে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তাহার মোটর সাইকেলটি বন্ধ হইয়া যায়। বাদী মোটর সাইকেলটির কি ত্রুটি হয়েছে তা দেখতেছিল ।
ঐ সময় অজ্ঞাতনামা আসামীরা বাদীকে চারদিক হইতে ঘেরাও করিয়া টানা হেঁচড়া করে রাস্তা থেকে অনুমান ১৫ ফুট নিচের দিকে নামাইয়া ফেলে। আসামীরা বাদীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, মোটর সাইকেল PulsarNS160, চট্ট-মেট্রো-ল-১৬-৫২৮২, চাবি ও হেলমেট ছিনাইয়া নেয়। বাদীর মোবাইলে বিকাশ থেকে টাকা নেওয়ার জন্য বাদীকে চাপ প্রয়োগ করে এবং প্রায় ২ ঘন্টা আটক করিয়া বাদীর নিকট ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা মুক্তিপণ দাবী করে।
বাদী মুক্তিপণ দিতে অস্বীকার করায় বাদীকে শারীরিকভাবে মারধর করতঃ ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে বাদীর ব্যবহৃত মোটর সাইকেল, হেলমেট ও মোবাইল ফোন ছিনাইয়া নিয়া আসামীরা পালিয়ে যায়। এবিষয়ে সীতাকুন্ড থানায় মামলা দায়ের করা হয় যার মামলার নং-২৪, তাং-১১/০১/২০২২ইং, ধারা-৩৪২/৩৯৪/৩৭৯/১০৯ পেনাল কোড।
মামলার বাদী রিদওয়ানুল হক এই বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে আদালত সীতাকুণ্ড থানায় মামলা রুজু পূর্বক পিবিআই, চট্টগ্রাম জেলার নিকট তদন্তভার ন্যস্ত করেন। তৎপ্রেক্ষিতে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার এসআই (নিঃ) মোঃ কামাল আব্বাসকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তিনি গত ১৬ জানুয়ারী ২০২২ এই চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে সোর্স নিয়োগ এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
মামলাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্তের লক্ষ্যে পিবিআই প্রধান অ্যাডিশনাল আইজিপি কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম সার্বিক দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মোঃ কামাল আব্বাস এর নেতৃত্বে এবং পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান, পিপিএম-সেবা এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করিয়া বর্ণিত মামলার তদন্তে প্রকাশিত আসামী রুবেল আহম্মেদ শাহিন (৩০), পিতা-রফিকুল মাওলা, মাতা-রহিমা বেগম, সাং-হারামিয়া, সুলতান টেডলের বাড়ী, ৫নং ওয়ার্ড, ইউপি- হারামিয়া, থানা- সন্দ্বীপ, জেলা চট্টগ্রামকে গুপ্তচরের দেওয়া তথ্য মতে সীতাকুণ্ড থানাধীন কুমিরা ঘাট হইতে গত ২১ মে, রাত অনুমান ৯ টার সময় গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত আসামী রুবেল আহম্মেদ শাহিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করিয়া তাহার দেওয়া তথ্য মতে অপর তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোহাম্মদ পারভেজ (৩১), পিতা-মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দিন, মাতা জোস্না আরা বেগম, সাং-মুছাপুর, নুরুল হুদা মেম্বারের বাড়ী, ওয়ার্ড নং ২, ইউপি-মুছাপুর, থানা-সন্দ্বীপ, জেলা চট্টগ্রামকে ২২ মে, সকাল ০৯.৪৫ ঘটিকার সময় সন্দ্বীপ থানাধীন আলী মিয়ার বাজারস্থ সুমনের ফার্মেসী দোকানের সামনে হইতে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামী রুবেল আহম্মেদ শাহিনের দেখানো এবং বাদীর সনাক্ত মতে সন্দ্বীপ থানাধীন আলী মিয়ার বাজারস্থ সুমনের ফার্মেসীর দোকানের সামনে হইতে বাদীর মালিকানাধীন Pulsar NS160, কালার Red, নাম্বার চট্ট-মেট্রো-ল-১৬-৫২৮২, ইঞ্জিন নং-JEYCKE30943, চা – MD2A92CYOKCE91210 মোটর সাইকেলটি গ্রেফতারকৃত আসামী মোহাম্মদ পারভেজ এর দখল ও হেফাজত হইতে উদ্ধারপূর্বক জব্দ করেন। জব্দকৃত মোটর সাইকেলটি বাদীর মোটর সাইকেল মর্মে সনাক্ত করেন। উল্লেখ্য যে, উক্ত মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ইতোপূর্বে ০৪ জন আসামী গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের মধ্যে হতে ১ জন আসামী আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি প্রদান করে। মামলার ঘটনার সময় আসামীগণ কর্তৃক লুষ্ঠিত বাদীর মালিকানাধীন হেলমেটও উদ্ধার পূর্বক জব্দ করেছিল।
ঘটনার সহিত সম্পৃক্ত অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে এবং মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রহিয়াছে।