বিআরটিএ, ঢাকা মেট্রো সার্কেল-১, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, ধামরাই ও নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার রেল স্টেশনে অনিয়ম – দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে দুদকের অভিযান

Uncategorized আইন ও আদালত

!! দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে সোমবার ৭টি অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং ৩ টি অভিযান পরিচালনা করা সহ ৪ টি দপ্তরে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে !!


 নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বিআরটিএ, ঢাকা মেট্রো সার্কেল-১ এ গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করতে সহকারী পরিচালক (রেজিস্ট্রেশন) খালেদ মাহমুদ এর বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগসহ উক্ত অফিসে রেজিস্ট্রেশন, নাম পরিবর্তন, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানে কালক্ষেপণ করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রণজিৎ কুমার কর্মকার এবং মোঃ রুহুল আমিন এর সমন্বয়ে গঠিত এনফর্সমেন্ট টিম সোমবার ৬ জুন, একটি অভিযান পরিচালনা করেছে। দুদক টিম অভিযোগ যাচাই ও সত্য উদঘাটনের জন্য সরেজমিনে বিআরটিএ, মিরপুর, ঢাকা মেট্রো সার্কেল-১ কার্যালয়ে প্রথমে ছদ্মবেশে তথ্য সংগ্রহ ও সেবাগ্রহিতাদের সাথে কথা বলে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা ও বিভিন্ন নথি পর্যালোচনা করে।
সেবা গ্রহীতাদের সাথে আলোচনা করে জানা যায় যে, এখানে প্রতিটি কাজ করতে দালাল ধরতে হয় এবং দালাল ছাড়া কোন কাজ প্রায় অসম্ভব। ফাইল নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রীতার প্রমাণ পাওয়া যায়। এনফোর্সমেন্ট টিম এতদ্বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর অনুরোধ করেন। অভিযানে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ যাচাইপূর্বক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, ধামরাই, ঢাকা আওতাধীন সড়ক নির্মাণের কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে দুদক সজেকা, ঢাকা-১ এর সহকারী পরিচালক জিএম আহসানুল কবির এর নেতৃত্বে আজ অপর একটি এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযান কালে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে “পল্লী ও সড়ক ও কালভার্ট মেরামত কর্মসূচী” এর আওতায় ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলাধীন হরিদাসপুর হতে বেঙ্গুরা সড়ক চেইনেজ (০০-৪৮৪) মিটার বা প্রায় আধা কিলোমিটার রক্ষণাবেক্ষন কাজ এলজিইডি সম্পন্ন করে যার চুক্তি মূল্য ছিল ৩৮,২৯০১৭.৭৫ টাকা। মোসার্স তাবিয়া এন্টারপ্রাইজ, প্রোঃ মোহাম্মদ মোমতাজুল খান, ১৮৬/৯, তেসকুনি পাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উক্ত রক্ষণাবেক্ষন কাজটি করেন। উক্ত স্কীমের আওতায় রাস্তাটি ২৫ মিলি পুরুত্বের কার্পেটিং, কাঁচা রাস্তা প্রশস্তকরণ এবং তার উপর এইচবিবি (ইটের সলিং) এর কাজ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সরেজমিন পরিদর্শনে কার্পেটিং এর কাজের মান এবং ব্যবহৃত ইটের মান ভাল পাওয়া যায়। কোন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের তথ্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় নতুন বালু মাটির উপর যে সমস্ত স্থানে ইটের সলিং করা হয়েছে তার কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টির পানির ঢলে মাটি সরে গিয়ে সলিং নষ্ট হয়েছে। রাস্তার পার্শ্ববর্তী বাড়িগুলো উচুতে অবস্থিত হওয়ায় বৃষ্টির সময় ঐ সমস্ত বাড়ির পানির ঢল রাস্তার উপর দিয়ে গড়িয়ে বিপরীত দিকে নামার কারনে মাটি সরে গিয়ে সলিং নষ্ট হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলীকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান যে, নতুন মাটি ধরে রাখার জন্য রাস্তার পাশ দিয়ে গাইডওয়াল বা প্যালাসাইডিং নির্মাণ করতে হয়। গাইডওয়াল বা প্যালাসাইডিং এর জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ ছিল না। জীমের আওতায় সীমিত পরিসরে কয়েকটি স্থানে প্যালাসাইডিং এর কাজ ধরা ছিল এবং সেগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। ইতোপূর্বে ঠিকাদারকে দিয়ে নষ্ট হওয়া এইচবিধি সলিং ২বার মেরামত করা হয়েছে। গত ৩ দিন পূর্বে প্রবল বৃষ্টিতে পানির ঢলে রাস্তার কিছু কিছু জায়গার মাটি সরে যাওয়ায় ইটের সলিং পুনরায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঠিকাদারকে সেগুলো মেরামতের জন্য বলা হয়েছে। ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ঠিকাদারের জামানতের ১০% টাকা জমা রয়েছে। রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হলে তিনি আগামী ২৮/০২/২০২৩ তারিখ পর্যন্ত সেগুলো মেরামতের জন্য বাধ্য থাকবেন। অভিযান প্রসঙ্গে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করবেন এনফোর্সমেন্ট টিম।

নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার রেল স্টেশনে কর্মরত রাশেদ ইসলাম, বুকিং মাস্টার ও শিহাব, বুকিং মাস্টারের পরস্পর যোগসাজশে কাউন্টারে টিকিট বিক্রি না করে কালোবাজারে টিকিট বিক্রির অভিযোগে দুদক, সজেকা, রংপুর হতে সহকারী পরিচালক হোসাইন শরীফ এর নেতৃত্বে ও নব্য যোগদানকৃত উপ-সহকারী পরিচালক জয়ন্ত সাহা, মমিন উদ্দিন, রূবেল হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম সোমবার ৬ জুন, এনফোর্সেমেন্ট পরিচালনা করেছে। এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনাকালে রেকর্ডপত্র যাচাই-বাছাই, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য রেকর্ড ও সরেজমিনে কয়েকজনের যাত্রীর সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। উক্ত স্টেশনের বুকিং মাস্টার ও টিকিট কালোবাজারীদের পরস্পর যোগসাজশে আর্থিক লাভের কারণে দীর্ঘদিন ধরে জনসাধারণের সাথে প্রতারণা করছেন। টিমের সদস্যগণ টিকিট সংগ্রহকারী সেজে কয়েকজন কালোবাজারীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। সংগৃহীত রেকর্ডপত্র যাচাই অন্তে সুপারিশ সহ প্রতিবেদন কমিশন বরাবর দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।

এছাড়াও দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) আগত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক কমিশনকে অবহিত করার জন্য ০৪টি দপ্তরে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *