ঢাকার রাস্তায় ঝুঁকির কারণ হবে মোটরসাইকেল

অপরাধ অর্থনীতি আইন ও আদালত এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন ঢাকা রাজধানী

বিশেষ প্রতিবেদক: সারাদেশে এখন মোটরসাইকেল সংখ্যা ২৭ লাখ। খোদ রাজধানীতেই এ সংখ্যা ৭ লাখ। এর সবই বিআরটিএ থেকে রেজিস্ট্রেশন নেওয়া। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া ঢাকার বাইরে আরো লক্ষাধিক মোটরসাইকেল চলাচল করছে। ৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভায় বিআরটিএ মোটরসাইকেল বাড়ার এ তথ্য প্রকাশ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার জন্য এটি বড় ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
চলতি বছর এ পর্যন্ত বিআরটিএ থেকে মোটরসাইকেল নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে ৬২ হাজার। আর সারা দেশে এ পর্যন্ত নিবন্ধন নেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫০টি মোটরসাইকেল।
মোটরসাইকেল এভাবে বাড়ার বিষয়ে বিআরটিএ জানায়, ঢাকায় ২০১৫ সাল থেকে বিআরটিএ-তে মোটরসাইকেল নিবন্ধন নেওয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। যেখানে আগে সারা বছরে মোটরসাইকেল নিবন্ধন নেওয়ার সংখ্যা ছিল ৩০ হাজারের মতো সেখানে ২০১৬ সালে নিবন্ধন নেয় অর্ধলক্ষাধিক মোটরসাইকেল। এ সংখ্যা ২০১৭ সালে হয় ৭৫ হাজার। ২০১৮ সালে তা ১ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়।
বিআরটিএ’র হিসেবে এখন রাজধানীতে বৈধ মোটরসাইকেলের সংখ্যা সাত লাখ। রাইড শেয়ারিং সেবা চালুর পর নতুন করে তিন লাখ মোটরসাইকেল বেড়েছে। বাড়তে থাকা এ সংখ্যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মোটরসাইকেল এখন মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে কোনো কিছুই ধ্বংস না করে তাকে একটি নীতিমালার মধ্যে আনতে হবে।
বিআরটিএ রাইড শেয়ারিং নীতিমালার আলোকে কয়েকটি কোম্পানিকে নিবন্ধন দিয়েছে। নিবন্ধন পাওয়া এসব কোম্পানি এখনো বিআরটিএ-তে তাদের মোটরসাইকেল সংখ্যার তথ্য জমা দেয়নি।
এমনকি বিআরটিএর নীতিমালা অনুযায়ী মোটরসাইকেল কোম্পানিগুলোর প্রযুক্তিগত তথ্য বিআরটিএ-তে জমা দেওয়ার কথা। যা এখনো দেয়নি উবার পাঠাও সহ রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো।
বিআরটিএ’র নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরসাইকেল কেনা যাবে না। মোটরসাইকেল নিবন্ধন করতে এলে তাকে আগে দেখাতে হবে ড্রাইভিং লাইসেন্স।
বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট-এআরআইর হিসাবে ২০১৭ সালে রাজধানীতে ৪৮টি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় ৫৩ জন নিহত এবং ১৯ জন আহত হন। এ বছরের অক্টোবর শেষ হওয়ার আগেই সেই সংখ্যা পেরিয়ে গেছে। এ সময়ে ঢাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় অর্ধশতাধিক মৃত্যু এবং বহুলোক আহত হয়েছেন। কেউ কেউ পঙ্গুও হয়েছেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর পরিকল্পনা বিভাগের (বুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ২০১৭ সালে রিভাইস স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান (আরএসটিপি) অনুযায়ি মোটরসাইকেল ঢাকার জন্য সমাধান নয়, এটা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলা হয়েছে।
গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক ড শামসুল ইসলাম বলেন, সরকারের গণপরিবহনের ভালো বিকল্প তৈরি করতে পারেনি বলে মোটরসাইকেল বেড়ে যাচ্ছে। তবে মোটরসাইকেল অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ একটি বাহন। যেখানে দুর্ঘটনায় ৩০ শতাংশ বেশি শরীরের ক্ষয়ক্ষতি হয়।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *