বাইরে থেকে কোনো পশু আসবে না, দেশে উৎপাদিত পশুই আমাদের জন্য যথেষ্ট-,শ,ম,রেজাউল করিম

Uncategorized অন্যান্য

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ ‘দেশে কোরবানির পশু পর্যাপ্ত, বিদেশ থেকে আনার দরকার নেই’ প্রাণিসম্পদ উৎপাদনে দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, আমরা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। কোরবানির জন্য থেকে ভারত, মিয়ানমার বা কোনো দেশ থেকে একটা পশুও আনার দরকার নেই। পর্যাপ্ত পশু দেশে আছে। বিদেশ থেকে অবৈধপথেও যেন পশু আসতে না পারে সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, কোরবানির পশু নিয়ে সংশয়ের কোনো কারণ নেই। দেশে উৎপাদিত পশুই কোরবানির জন্য যথেষ্ট। প্রাণিসম্পদ উৎপাদনের এ গর্বের জায়গা আমরা কোনোভাবে নষ্ট হতে দেবো না। বাইরে থেকে কোনো পশু আসবে না, দেশে উৎপাদিত পশুই আমাদের জন্য যথেষ্ট।

গতকাল বুধবার (১৫ জুন) গাজীপুরের শ্রীপুরে এসিআই অ্যানিমেল জেনেটিক্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কোরবানির সময় প্রতিটি হাট তদারকির জন্য ভেটেরিনারি চিকিৎসক থাকবেন। হাটে তারা অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন। রোগাক্রান্ত কোনো পশু বা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ইনজেকশন দেওয়া পশু হাটে আসলে সেটি শনাক্ত করা সম্ভব হবে। গোখাদ্যের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভরশীল থাকলে এগিয়ে যাওয়া কঠিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, গোখাদ্যের জন্য বিদেশনির্ভরতা কমাতে হবে। সরকার চায় গোখাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশে শিল্প স্থাপন হোক। এ শিল্প স্থাপনে কর অব্যাহতিসহ সরকার নানা সুযোগ-সুবিধা দেবে। পাশাপাশি কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উৎপাদন বাড়লে এবং ব্যবসায়ীরা কম মুনাফা করলে মাংসের দাম কমবে বলেও জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদে অভাবনীয় সাফল্যের জায়গায় এসেছে। এই খাতে সরকারের অনেকগুলো গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসিআইসহ অন্যান্য বেসরকারি খাতকেও সরকার সবসময় উৎসাহিত করছে। বেসরকারিখাত কৃত্রিম প্রজননের জন্য বাইরে থেকে উন্নত জাতের পশু আমদানি করছে, ল্যাবরেটরি স্থাপন করছে। কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উৎপাদিত উন্নত জাতের পশু থেকে মাংস ও দুধ বেশি উৎপাদন করা সম্ভব হবে। সরকার চায় এ কার্যক্রম সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে। তৃণমূল পর্যায়ে এ খাতের উৎপাদন বাড়াতে মানসম্পন্ন সিমেন উৎপাদন প্রয়োজন, কৃত্রিম প্রজননের বৈজ্ঞানিক প্রয়োগ প্রয়োজন। সরকারের পাশাপাশি এসিআইয়ের এ ধরনের কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণ করা দরকার।

শ ম রেজাউল বলেন, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তারা দেশের প্রাণিসম্পদ খাতকে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় এবং বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমৃদ্ধ করছে। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে কৃষির বিস্তার না হলে দেশ থমকে যাবে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসায় বাংলাদেশ মাছ, মাংস ও ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। অদূর ভবিষ্যতে দুধেও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে। তার সরকার মনে করে, মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে, তাদের সাহায্য করতে হবে। তারা স্বাবলম্বী হলে দেশ স্বাবলম্বী হবে।

তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ খাতের খামারিদের সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করছে। সরকার চায় প্রাণিখাদ্য, মাছের খাদ্য দেশে উৎপাদন হোক। এক্ষেত্রে এসিআইয়ের মতো অন্যান্য বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে। এসিআই কৃত্রিম প্রজননের সিমেন সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও খামারিদের সরবরাহ করছে। কৃত্রিম প্রজননের সুবিধা নেওয়া খামারিদের যেন কষ্ট না হয়, সেটা এসিআইকে লক্ষ্য রাখার জন্য আহ্বান জানান মন্ত্রী।

শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, বর্তমান সরকার বেসরকারি খাতবান্ধব সরকার। দেশ ও দেশের বাইরে থেকে যারা বিনিয়োগ করতে চান তাদের জন্য সরকার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপ্রতিরোধ্য গতিতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এখন মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন হয়েছে। অথচ একটা মহল আছে, দেশের ভালো দেখলে তাদের ভালো লাগে না। তারা পদ্মা সেতু নিয়েও অপপ্রচার করছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়াতে হবে। শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ালে দেশ সমৃদ্ধ হবে। বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান আরও বিকশিত হবে। সবার মুখে হাসি ফুটবে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে যারা অগ্নিসন্ত্রাস, পেট্রলসন্ত্রাস এবং দেশ ধ্বংসের রাজনীতি করে, তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে। এসিআই অ্যাগ্রি বিজনেসের প্রেসিডেন্ট ড. ফা হ আনসারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা।
অনুষ্ঠানে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম, গাজীপুরের কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা ইয়াসমিন, শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির হিমু বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়াও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, এসিআই লিমিটেডের কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা এবং প্রাণিসম্পদ খাতের উদ্যোক্তা ও খামারিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। এর আগে এসিআইয়ের জেনেটিক্স ল্যাব ও ব্রিডিং স্টেশন পরিদর্শন করেন মন্ত্রী।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *