কুমিল্লা প্রতিনিধি ঃ কুমিল্লা সিটি করপোরেশন( কুসিক) এর নির্বাচন শান্তিপূর্ণ , ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ: সিইসি
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সিইসি বলেন, ‘সার্বিক দিক বিবেচনায় বলা যায়, কুমিল্লা সিটিতে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। ভোটারদের কাছ থেকেও তেমন কোনো অভিযোগ আসেনি। এ সিটিতে (কুমিল্লা) প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে। খুব বিরূপ মন্তব্যও আমরা পাইনি।’
গতকাল বুধবার (১৫ জুন) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে ব্রিফিংয়ে সিইসি এসব কথা বলেন।
ধীরগতিতে ভোটগ্রহণ নিয়ে অভিযোগ ওঠার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার গণমাধ্যম কে বলেন, ‘ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) স্লো ছিল না। যারা বয়স্ক ভোটার, তাদের একটু সমস্যা হয়েছে। যারা ভোট দিতে অভ্যস্ত না, তাদের বুঝতে সময় লেগেছে। যারা ইভিএমে অভ্যস্ত, ভোট দিয়েছেন বুঝেছেন, তাদের ১৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড লেগেছে।
কেউ কেউ বলেছেন, ইভিএমের মাধ্যমে তাদের একটু অসুবিধা হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, যারা একটু বয়স্ক, তাদের জন্য ব্যক্তি বিশেষের ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়েছে। সাধারণভাবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটটা ভালো হয়েছে।’
এমপি আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারের বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রথমত সংসদ সদস্যের বিষয়টি আমার দৃষ্টিতে পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজড।
এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করবো না। বাহার সাহেবের ম্যাটার নিয়ে আমরা অনেক আলোচনা করেছি, আপনারাও করেছেন। নির্বাচন শেষ হয়েছে।
এখন এ বিষয় নিয়ে কোনো রকম মন্তব্য আমাকে জিজ্ঞেস করলেও আমি করবো না।’
স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা পরিবর্তন করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি গণমাধ্যমে বলেন, ‘সেটা আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবো। আইন সংশোধনের বিষয়টি কন্টিনিয়াস প্রসেস।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল গণমাধ্যমে বলেন, ‘সকাল থেকেই আমরা যতদূর সম্ভব সিসি ক্যামেরা এবং টিভির মাধ্যমে সংবাদগুলো প্রত্যক্ষ করছিলাম। আমরা দেখেছি, নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ছিল। কোনো রকম সংঘর্ষ ছাড়াই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। কুমিল্লার দুটি সেন্টারে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে একটু বিঘ্ন ঘটছে। যতগুলো সেন্টার থেকে আমাদের অফিস তথ্য পেয়েছে। তাতে ৬০ শতাংশ প্লাস, মাইনাস ভোট কাস্টিং হয়েছে।’
ভোটে স্বচ্ছতার প্রসঙ্গ টেনে সিইসি বলেন, ‘আগে থেকেই আমরা শক্ত ছিলাম, যাতে ভোট স্বচ্ছ হয়। সংবাদকর্মীদের অবাধ পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সবার কাছ থেকে মন্তব্য আমরা পেয়েছি। সকালে বৃষ্টি হয়েছিল, সেসময়ে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছিল। ফলে ভোট কার্যক্রমে কিছুটা স্লথ গতি এসেছিল। সার্বিকভাবে আমাদের অভিমতে সিটি করপোরেশন নির্বাচন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন কাউন্সিল শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু এবং নির্বিঘ্নে হয়েছে। ভোটারদেরও তেমন কোনো অভিযোগ আমরা একেবারেই শুনিনি।’
নির্বাচনে ফার্স্ট ক্লাস নাকি সেকেন্ড ক্লাস পেয়েছেন, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব পালন করেছি। কোন ক্লাস পেয়েছি, সেটা আপনারা মূল্যায়ন করবেন। আমি খুব বেশি উৎফুল্ল নই। খুব যে বেদনাক্লান্ত তাও নই। চেষ্টা করেছি, কতটা সফলভাবে করেছি, সেই মূল্যায়ন করতে পারবো না।’
ইভিএমে গোপনকক্ষে উঁকি দেওয়া ও ডাকাত ঢোকার বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী হাবিবুল আউয়াল গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। ভোটকেন্দ্রে ডাকাত ঢুকেছে এটা হয়তো আরও পরে আসতে পারে। আমরা পরে পাবো।’
এদিকে, সিইসি কথা বলার সময় এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি বলেন, ‘একটা পত্রিকায় এসেছে, একজন উঁকি দিয়েছিলেন। কিন্তু আপনাদেরই একটা মিডিয়া থেকে বলা হয়েছে, জিনিসটা মোটেও সত্য নয়।’
সিসি ক্যামেরায় কিছু দেখা গেছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘আমরাও পাইনি, আপনারাও দেখাতে পারেননি।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ছাড়াও এদিন একটি উপজেলায় সাধারণ নির্বাচন ও তিনটি উপজেলায় বিভিন্ন পদে উপ-নির্বাচন, পাঁচ পৌরসভায় সাধারণ ও একটি ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন, ১৩২টি ইউনিয়নে সাধারণ ও ৪৭টি ইউপিতে বিভিন্ন পদে উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে কুমিল্লা সিটি, ১৩২ ইউপি ও দুটি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হয়েছে ইভিএমে।