কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারেনি, পারবেও না ——প্রধানমন্ত্রী

Uncategorized জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা নদী পদ্মায় সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আসা নানা বাধা সফলভাবে মোকাবিলা করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অনেকটা নিজে সিদ্ধান্ত নিয়েই বলেছি, আমরা নিজেদের টাকায় এই সেতু করব। অর্থাৎ বাংলাদেশ যে পারে, কারো কাছে হাত পেতে নয়, ভিক্ষা চেয়ে নয়, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে, সেটা আমরা করে দেখিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘কাজেই আমরা মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলব। কারণ আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি এবং বিজয়ী জাতি হিসেবেই বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলব।’

প্রধানমন্ত্রী রোববার তার কার্যালয়ের শাপলা হলে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনা ক্রীড়াবিদদের মাঝে সম্মাননার চেক বিতরণকালে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।

করোনা এবং দেশের বন্যা পরিস্থিতির জন্য বর্তমান সময়কে একটু অস্বাভাবিক উল্লেখ করে কৃতি খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা দিতে পারার বিষয়টা সব সময়ই আনন্দের বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, খেলার মাঠে সব সময় চিন্তায় রাখতে হবে আমরা যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি আমরা বিজয়ী জাতি। হারজিত খেলায় আছে এটা ঠিক কিন্তু মাথায় এটা রাখতে হবে যে আমাকে জিততে হবে।

প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলায় পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে আসতে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালি ব্যবসা করবেন আর ইন্ডাস্ট্রি করবেন আর পয়সা বানাবেন সেটা তো হয় না। দেশের জন্য তো কিছু করতে হবে। এটাই আমি চাই। এই ম্যাসেজটা আমাদের ব্যবসায়ীদের দিয়ে দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, খেলোয়াড়দের যদি ব্যবসায়ীরা নিয়োগ দিয়ে রাখে, তাহলে তারা খেলাধুলার দিকে সম্পূর্ণভাবে মনোযোগ দিতে পারে। জীবন জীবিকার কথা চিন্তা করার প্রয়োজন হয় না।

বেসরকারি খাতে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত আমরা সহযোগিতা করব তত উৎকর্ষতা বাড়বে। যারা খেলবে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনবে, তাদের জীবন-জীবিকার সুযোগটাও আমাদের করে দিতে হবে।

তিনি বলেন, খেলোয়াড়রা কেবল খেলাধুলাই করবে এবং দেশে যত বেশি ক্লাব হবে, যত বেশি প্রতিযোগিতা হবে খেলাধুলায় তত বেশি উৎকর্ষতা বাড়বে। সেই ধরনের পরিবেশ আমাদের গড়ে তুলতে হবে।

গ্রামীণ খেলাধুলার প্রচার এবং প্রসারে আরও জোর দেওয়ার জন্য তার সরকার ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কান্ট্রি গেমস অ্যাসেসিয়েশনকে স্বীকৃতি দিয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি এ সময় সারা দেশের উপজেলা পর্যায়ে নির্মাণাধীন মিনি স্টেডিয়ামের কাজ আরও দ্রুত সম্পন্ন করার জন্যও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। যে সব জায়গায় স্টেডিয়াম নির্মাণে জমি পাওয়া যাবে না, সেখানে প্রয়োজনে জমি কিনে প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতে বলেন তিনি।

শারিরীক প্রতিবন্ধিদের ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের জন্য বয়ে আনা বিভিন্ন সাফল্যের উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, শারিরীকভাবে প্রতিবন্ধীদের এক সময় বোঝা মনে করা হলে সুযোগ পেলে তারাও যে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনতে পারে, তারা আজকে তা প্রমাণ করেছেন। তারা প্রমাণ করেছে যে, তারা দেশের সম্পদ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতি ঘরে বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে এবং তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে তার সরকার দেশকে এদিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দেশের একজন মানুষও যেন আর গৃহহীন না থাকে সেজন্য সব গৃহহীন-ভূমিহীনকে ঘর করে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, উন্নয়নের এই গতি করোনাকালীন কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়, কেননা সমগ্র বিশ্বেই এর প্রভাব পড়ে। কিন্তু বাংলাদেশ থেমে থাকেনি, এগিয়ে গেছে।

জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণের সেই অমোঘ মন্ত্র ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারেনি এবং পারবেও না।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *