ইউরোপের প্রধান গ্যাস সরবরাহের পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম ১ সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া

Uncategorized আন্তর্জাতিক

অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ঃ ইউরোপের প্রধান গ্যাস সরবরাহের পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম ১ সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। প্রতিবছর এই পাইপলাইন দিয়ে প্রায় ৫৫ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহ হয় ইউরোপে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এতে শুধু জার্মান অর্থনীতি প্রায় $২০০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হবে। দেশটিতে কর্মসংস্থানের ঝুকিতে পড়বে ৫৬ লাখ মানুষ। আজ আমেরিকার কথায় নেচে ইউক্রেন ইস্যুতে সারা বিশ্বকে ভূগতে হচ্ছে।

উদ্ভুত পরিস্থিতির শুরুতে বেশ কিছু লেখা লিখেছিলাম। পরিতাপের বিষয় আমরা হয়ত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। আমাদের অনেকের চিন্তা শুধুমাত্র খাবারের টেবিলে ভাত রান্না ঘর থেকে আসে এই ধারনায় সীমাবদ্ধ। প্লেটে ভাতের দানার পেছনে মাঠ থেকে রান্না ঘর পর্যন্ত কি পরিমান গল্প, শ্রম, ঘাম রয়েছে সেটা ভাবার ফুসরত নাই। বাসার গ্যাস, পানি কিভাবে আসছে এগুলা নিয়েও আমরা বেশিদূর ভাবতে অভ্যস্ত নই। ঠিক যেদিন পেটে টান পড়ে সেদিন আমরা নড়েচড়ে বসি। রুশ ইউক্রেন যুদ্ধে টিভি ছেড়ে পপকর্ন খাওয়ার পাশাপাশি আমাদের নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবে।

এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে বিশ্বের অর্থনৈতিক সক্ষমতার পাল্লা থেকে অনেকে ছিটকে পড়বে। ধনী বা গরিব দেশ এর ভেদাভেদ থাকবে না। সবাইকে এর ইম্প্যাক্ট নিতে হচ্ছে ও হবে। আশু সমাধান দরদার। একগুঁয়েমি ভাল ফল বয়ে আনে না। শ্রীলংকার পরিস্থিতি দেখে অন্তত আমাদের শিক্ষা হওয়া উচিত। অপচয় না করি। যে কোন কিছুর ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। খাদ্য, জ্বালানি সহ সব। হয়ত পরিস্থিতি মোকাবেলায় অপচয় থেকে বাঁচা ছাড়া আমাদের আর বিকল্প নেই। এই কথাটি আমি পরিস্থিতি শুরুর থেকেই বলে আসছি।

শ্রীলংকার অর্থনীতি, শিল্প কারখানা আগামী ১০ বছরে ঘুরে দাড়াতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে। যেই শ্রীলংকা দাম্ভিকতা দেখিয়ে বাংলাদেশের কলোম্বো বন্দরে বাংলাদেশি কার্গোর প্রায়োরিটি পাস দেয়ার রিকুয়েস্ট রাখেনি, তারা এখন আগ বাড়িয়ে অফার করছে কলম্বো বন্দর ব্যাবহার করতে। বাংলাদেশ বিকল্প হিসাবে এখন ইউরোপ সহ বিভিন্ন গন্তবে ডিরেক্ট রুট চালু করে সময় কমিয়ে আনছে।
বিদ্যুৎ নেই বলে পাকিস্তানের ৪০০ টেক্সটাইল মিল এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ। এই পরিস্থিতি ফরেন কারেন্সি আর্নিং ক্যাপাসিটি দারুন ভাবে হার্ট করে। কোন মিসম্যানেজমেন্ট এখন কাম্য নয়। রুশ ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদি হলে একে একে বহু দেশ পতনের দিকে যাবে।
এখন একটাই প্রত্যশা, ইউরোপের একটু হুশ ফিরুক। এই যুগে অবরোধ আরোপ করা মানবতা বিরোধী বলে মনে করি। অবরোধকে অস্ত্র হিসাবে ব্যাবহার নিষিদ্ধ এখন সময়ের দাবি। খাদ্য পণ্য, জ্বালানি এসবে অবরোধ আরোপের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের মাধ্যমে কিছু করা গেলে ভাল হত।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *