বুকে ব্যথা নিয়ে বিএসএমএমইউয়ে সেন্ট্রাল সেমিনার অনুুষ্ঠিত পাঁচটি কারণে বুকে ব্যথা হয়— বিএসএমএমইউ উপাচার্য

Uncategorized স্বাস্থ্য


নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বুকে ব্যথা নিয়ে সেন্ট্রাল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত রোববার সকাল সাড়ে ৮ টায় ১৭ জুলাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লক মিলনায়নে এ সেমিনারটির আয়োজন করে সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটি।

সেমিনারে উঠে আসে, বুকে ব্যথা বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। তার মধ্যে মারাত্মক সমস্যা থাকতে পারে ১০ থেকে ১২ শতাংশ।

যারা বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন তাদের অযথা বেশী পরীক্ষা নিরীক্ষা না করে রোগের উপসর্গ অনুযায়ী পরীক্ষা করে চিকিৎসা করা উচিত। বুকে ব্যথা হলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে যাওয়া উচিত। বুকে আঘাত পেলে কোনভাবেই হালকাভাবে নেয়া যাবে না।

অধিকাংশ বুকে ব্যথা সাধারণ কারণে হলেও এর একটি অংশের কারণ হৃদরোগ। হৃদরোগজনিত বুকে ব্যথা সঠিক সময়ে ধরতে না পারলে এমনকি প্রাণ সংশয় হতে পারে। বুকে ব্যথা নিয়ে যত রোগী বহির্বিভাগে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয় তার প্রায় শতকরা পাঁচ ভাগই হৃদরোগজনিত। হৃদরোগজনিত বুকে ব্যথার রোগীদের একটি বড় অংশ হাসপাতালে আসার সুযোগই পান না।

এ ধরণের রোগীদের একটি অংশ হাসপাতাল পর্যন্ত আসলেও সঠিক চিকিৎসা পান না। চিকিৎসা বঞ্চিত এসব রোগীর বিশেষত মহিলা। আবার বয়স্ক রোগী, ডায়ালাইসিস রোগী, অপারেশন পরবর্তী রোগীরাও হৃদরোগের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে।

আবার বাড়িতে বসে যারা হৃদরোগে আক্রান্ত হন তাদের সঠিক সময়ে হাসপাতালে পৌঁছানোও একটি বড় সমস্যা। এসব সমস্যা উত্তরণের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। যেমন চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি রোগী ও সাধারণ মানুষদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

এর বাইরে আধুনিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি এবং তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেবার মাধ্যমেও হৃদরোগজনিত বুকে ব্যথা তথা হৃদরোগের চিকিৎসার আওতা ও উৎকর্ষ বাড়ানো সম্ভব। আর এর মাধ্যমে হৃদরোগজনিত মৃত্যুও কমিয়ে আনা সম্ভব। শুধু প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন। বুকে ব্যথা হলেই রোগীকে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিতে হবে। সামন্য অবহেলায় রোগীর জীবন সংশয় হতে পারে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বুকে ব্যথা ডাক্তারদেরও হয়, রোগীর হয়। বুকে ব্যথা রোগী আসলেই আমরা দেরি করব না। বুকে ব্যাথায় নানান কারণ থাকলেও প্রধান পাঁচটি কারণে বুকে ব্যথা হয়ে থাকে। হৃদরোগের কারণে বুকে ব্যাথা, ফুসফুস সংক্রমণের জন্য বুকে ব্যথা, ব্যাকটেরিয়া এন্ড ভাইরাল ইনফেকশনের কারণে বুকে ব্যথা, স্ট্রেস বা অস্থিরতার কারণে বুকে ব্যথা ও টেন্ডনের মাংস পেশীতে ব্যথার কারণে বুকে ব্যথা হয়। আমরা কার্ডিয়াক ১ ধরণের ও নন কার্ডিয়াকে চার ধরণের কারণে বুকে ব্যথা চিহ্নিত করে থাকি।

তিনি বলেন, কী কারণে বুকে ব্যথা হয় সেটি বিচার না করে দ্রুত হাসপাতালে আসতে হবে। তা না হলে রোগীকে বাঁচাতে পারব না। আমরা প্রায় দেখতে পাই, ঘুমের ঘরে মানুষ মারা যায়। এদের অনেকের রাতে বুকে ব্যথা হলে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সে ঘুম আর ভাঙ্গে না।

তিনি বলেন, বুকের ব্যথার পরীক্ষার নিরীক্ষার সব ধরণের সুযোগ সুবিধা আমাদের রয়েছে। তাই বুকে ব্যথা নিয়ে বাসায় বসে থাকা দরকার নেই। আমাদের যারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎক হতে ইচ্ছুক রেসিডেন্ট চিকিৎসক আছে তাদের বলব, বুকে ব্যথা নিয়ে কোন রোগীর যাতে মৃত্যু বরণ না করে সেইভাবেই তৈরি হতে হবে। বুকের ব্যথা নির্ণয়ের জন্য যেসব মেশিন বর্তমানে রয়েছে সে সবকে আরো আধুনিক করার জন্য যা করা করা দরকার তাই করব।

বুকে ব্যথা হলে করণীয় দিক নিয়ে সেমিনারে আলোচনা করেন মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ ফেরদৌস উর রহমান, ফুসফুসজনিত বুকে ব্যথা নিয়ে আলোচনা করেন রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাজাশিস চক্রবর্তী ও হৃদরোগজনিত বুকে ব্যথায় করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. মোহাম্মাদ ফয়সাল ইবনে কবির।

সেমিনারে বুকে ব্যথা নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অধ্যাপক ডা. সজলকৃষ্ণ ব্যানার্জী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন ও উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সাব কমিটির সভাপতি নাক কান গলা বিভাগের অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন রেসাপিরোটরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলাম।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *