নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ চট্টগ্রাম জেলার রাংগুনিয়ার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর জিল্লুর ভান্ডারী হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী তোতা মিয়া’কে দীর্ঘ সাত বছর পলাতক থাকার পরে ঢাকা মহানগরীর তুরাগ থানাধীন কামারপাড়া এলাকা থেকে আটক করেছে র্যাব-৭, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।
জানা গেছে, গত ২১ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখ চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর জিল্লুর ভান্ডারীকে রাংগুনিয়া উপজেলার রানীরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয় গেটের সামনে কতিপয় দুস্কৃতিকারী গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ আজিম উদ্দিন বাদী হয়ে ৮ জন নামীয় ও ৪/৫ অজ্ঞাতনামা করে চট্টগ্রাম জেলার রাংগুনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে, যার নং- ০৮(১)১৫, ধারা-৩০২/৩৪ দঃ বিঃ, দায়রা মামলা নং-২১৬৪/১৭ এবং জিআর নং-০৮/১৫, ধারা-৩০২/৩৪ দঃ বিঃ।
উক্ত মামলায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারিতে ২৩ জন সাক্ষীর সমস্ত সাক্ষ্য প্রমানের উপর ভিত্তিতে মহামান্য আদালত অভিযুক্ত দুই আসামীকে মৃত্যুদন্ড এবং ছয় আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করে।
এই মামলার রায় হওয়ার পর থেকেই র্যাব-৭, চট্টগ্রাম পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করার লক্ষ্যে ছায়াতদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে।
নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে, চট্টগ্রাম জেলার রাংগুনিয়ার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর জিল্লুর ভান্ডারী হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী তোতা মিয়া ঢাকা মহানগরীর তুরাগ থানাধীন কামারপাড়া এলাকায় অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল রবিবার ১৪ আগস্ট আনুমানিক ৪ টা ১৫ মিনিটের সময় উল্লেখিত এলাকায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে।
উক্ত অভিযান পরিচালনা কালে আসামী মোঃ তোতা মিয়া, পিতা-আবু সালেহ ওরফে বইল্যা, সাং-বাইশ্যার ডেবা, থানা- রাংগুনিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম’কে আটক করে।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামী অকপটে স্বীকার যে, সে উপরে উল্লেখিত জিল্লুর ভান্ডারী হত্যা মামলার বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক রায়ের যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ধৃত আসামী তোতা মিয়া পেশায় একজন চাঁন্দের গাড়ীর ড্রাইভার। সে উল্লেখিত হত্যাকান্ডের ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক পূর্বে একবার গ্রেফতার হয়ে জেলহাজত থেকে জামিনে মুক্তি নেয়।
জামিনে মুক্তি নিয়ে সে স¦পরিবারে ঢাকা মহানগরীর উত্তরার ১০নং সেক্টর এলাকায় আত্মগোপন করে এবং পরিবার ও আত্মীয় স¦জনের সাথে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখে। পালিয়ে থাকাকালীন সময়ে আসামী তোতা মিয়া প্রথমে অটো রিক্সা চালায়।
অটো রিক্সা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিষিদ্ধ করায় পরবর্তীতে সে সিএনজি ড্রাইভার হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত করে এবং স্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস শুরু করে এবং আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট গ্রেফতার এড়াতে দীর্ঘ সাত বছর ড্রাইভারের ছদ্মবেশে পালিয়ে থাকে। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার রাংগুনিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।