নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে বালুমহালে চলছে চাঁদাবাজি। ফলে জিম্মিদশায় রয়েছেন নিরীহ বালুবাহী নৌ শ্রমিকরা। গত ৪ আগস্ট থেকে চাঁদাবাজরা তাদের চাঁদবাজির এ মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। একটি সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্র থানা পুলিশের নামে নৌ-শ্রমিকদের কাছ থেকে ইচ্ছেমত চাঁদা আদায় করছে। আর এ চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলার উত্তর কলাবাড়ি গ্রামের শাহাব উদ্দিন ওরফে সাব উদ্দিন ও তার ভাগ্নে রাসেল।
অভিযোগে প্রকাশ, সম্প্রতি উপজেলার ধলাই নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বালুমহাল ইজারা প্রদান করা হয়। ইজারা গ্রহণ করেন প্রগতি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মজির উদ্দিন।
ইজারার ভিত্তিতে গত ৪ আগস্ট থেকে বালু উত্তোলন শুরু হয় ধলাই নদীতে। ইজারাদার রয়েলিটি হিসেবে প্রতি ঘনফুট বালু থেকে আড়াই টাকা হারে টোল আদায় করেন। আর এর বাইরে থানা পুলিশের লাইনম্যান খ্যাত সাহাব উদ্দিন ও তার সহযোগী রাসেল, আব্দুল আলী, রিয়াজ উদ্দিন, মিসবাহ উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন ও আল-সুবেল নামের সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজরা নদীজুড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে চাঁদা আদায় করতে। তারা ইজারাদার কর্তৃক আদায়কৃত বৈধ রয়েলিটির বাইরে প্রতি ঘনফুট বালু থেকে ১ টাকা হারে বালুবাহী ইঞ্জিন নৌকা ও বলগেট থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছে।
পাশপাশি বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত প্রায় অর্ধশত লিস্টার মেশিনের প্রত্যকটি থেকে দৈনিক ১ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করে থাকে।
প্রতিদিন প্রায় দুশ’ ইঞ্জিন চালিত নৌযান থেকে পুলিশের নামে দৈনিক ২ থেকে আড়াই লাখ টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করছে চাঁদাবাজ শাহাব উদ্দিন চক্র। চাঁদা না দিলে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে নৌকা জব্দ সহ জেলে পুরিয়ে দেবে বলে হুমকি দিয়ে থাকে।
এছাড়া চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শাহাব উদ্দিন ও তার দলভুক্তরা শ্রমিকদেরকে শারীরিকভাবে নির্যাতনও করে থাকে। তাই ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে নৌযান শ্রমিকরা তাদের চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছে।
শাহাব উদ্দিন এর আগেও পাথর ও বালুমহাল থেকে চাদাবাজি করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে খুনসহ একাধিক সন্ত্রাসী ঘটনায় মামলা রয়েছে।
এ ব্যাপারে শাহাব উদ্দিনের বক্তব্য নিতে সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকাল ৪ টা ১০ মিনিেটর তার মুঠোফোনে (০১৭১৫-৮***৮২) কল দিলে তিনি সাংবাদিকের মোবাইল ফোন রিসিভ করেন নি।
এ ব্যাপারে বালুমহালের ইজারাদার মজির উদ্দিন জানান আমার নিয়োজিত লোকজন নির্দিষ্ট হারে বৈধভাবে রয়োলিটি আদায় করে থাকে। এর বাইরে অন্য কেউ বালুবাহী নৌকা থেকে টাকা আদায় করলে এর দায় আমার নেই।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বালুমহালে আমাদের থানার কোনো লাইনম্যান নেই। পুলিশের নামে চাঁদা আদায়ের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।