নিখোঁজের ১৯ বৎসর পর হারিয়ে যাওয়া লাকী ফিরে পেলো তার মা হামিদা খাতুনকে

Uncategorized অন্যান্য

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ নিখোঁজের ১৯ বৎসর পর হারিয়ে যাওয়া লাকীকে উদ্ধার করে তার মা হামিদা খাতুনের কাছে গত বৃহস্পতিবার বুঝিয়ে দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
গত বৃহস্পতিবার ১ সেপ্টেম্বর দুপুরে ডিএমপির গোয়েন্দা অফিস কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার।

ডিবি প্রধান বলেন, ১৯ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে উদ্ধারের জন্য গত ৮ ফেব্রুয়ারি লাকীর মা হামিদা খাতুন ডিবিতে লিখিত আবেদন দিয়ে সাহায্য চান।

তিনি তার আবেদনের সঙ্গে ২০০৩ সালে হারিয়ে যাওয়া অষ্টগ্রাম থানায় হারানো জিডি ও চেয়ারম্যান বরাবর করা নিখোঁজ আবেদন সংযুক্ত করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি সাইবার এ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম কাজ শুরু করেন।

তিনি বলেন, পরে ডিবি-সাইবার এ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ডিভিশন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ করে খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলায় তার অবস্থান নিশ্চিত হয়। পরে ওই স্থান থেকে লাকীকে উদ্ধার পূর্বক তার মায়ের নিকট বুঝিয়ে দেয়।

ডিবি প্রধান গণমাধ্যমে বলেন, ঘটনাটি ২০০৩ সালের জুন মাসের ১ তারিখের। নিজ গ্রাম থেকে খালা ফিরোজার সঙ্গে বেড়ানোর জন্য ঢাকায় আসেন লাকী। খালা ঢাকার একটি গামেন্টস কারখানায় চাকরি করতেন। দিনে খালা তার কর্মস্থলে থাকতেন এবং বাসায় খালার অনুপস্থিতে লাকী খেলাধূলার বাইরে যেতো। খেলাধূলার একপর্যায়ে ঢাকার সদরঘাটে একটি লঞ্চে ওঠে লাকি। লঞ্চটি গন্তব্যস্থল খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও খেলতে থাকা লাকির লঞ্চ থেকে নামার সুযোগ হয় না। এভাবে ১৯ বছর আগে হারিয়ে যায় লাকি।

একটা সময় লঞ্চ খুলনার বড় বাজার ঘাটে ভিড়লে সেখানে লঞ্চ ঘাটের এক সিকিউরিটি গার্ডের সাথে সে কথা বলে এবং হারিয়ে গিয়েছে বলে তাকে জানায়। তখন লঞ্চ ঘাটের সিকিউরিটি গার্ড তাকে তার বাসায় নিয়ে আসে এবং লাকীকে ইউনিসেফ স্কুলে ভর্তি করান। স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি সিকিউরিটি গার্ড তাকে বিভিন্ন বাসায় কাজও করাতেন। এভাবে ২ বছর অতিক্রম হওয়া পর ঠিক মতো কাজ করতে না পারায় শিহাব নামের আরেক লোকের বাসায় কাজ নেন।
অপরদিকে সিকিউরিটি গার্ড অনেক খোঁজাখুজির পর লাকীর সন্ধান পেয়ে শিহাব এর কাছে তার মেয়ে বলে বাসায় নেওয়ার চেষ্টা করেন। শিহাব লাকীর কাছে জানতে পারেন যে, সিকিউরিটি গার্ড লাকীর পিতা নন। তাই শিহাব পুলিশি সহায়তায় লাকীকে নিজ জিম্মায় নিয়ে তার বাসায় ৫ বছর রাখেন,তিনি।

তিনি বলেন, সেখান থেকে লাকী তার হারানো বাবা-মার নিকট ফিরে যাইতে চাইলে শিহাব কোর্টের সহযোগিতায় লাকীকে বাগেরহাট সেইফ কাস্টোডিতে হস্তান্তর করেন।
লাকী ৩ বছর সেখানে অবস্থানকালে পূর্ণবয়স্ক হলে আদালত তাকে নিজ জিম্মায় প্রদান করে এবং লাকী নিজেই ফিরোজ নামের এক লোকের বাসায় কাজ নেন এবং প্রায় ২ বছর থাকেন।

পরবর্তীতে পূর্ব পরিচিত সিহাব স্ত্রী খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি স্কুলের শিক্ষিকা হওয়ায় এবং তার বাচ্চা লালন পালনের জন্য লাকী মহালছড়ি শিহাব স্ত্রীর নিকট চলে যায়।
এখানে প্রায় ৪ বছর গৃহকর্মীর কাজ করেন এবং শিহাবের স্ত্রীর বাসায় কাজ করার পাশাপাশি লাকী আরো একাধিক বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন। সর্বশেষ ১১ আগস্ট ইকবাল নামের এক ব্যক্তির বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *