মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
নড়াইলে গাঁজার গাছ চুরির অপবাদ দিয়ে খালিদ নামের এক কিশোরকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে মাদকাসক্তরা, চলছে শালিসের মাধ্যমে মিমাংশার চেষ্টা। নড়াইল পৌরসভার উজিরপুর গ্রামের মোঃ মশিয়ার এর ছেলে মোঃ খালিদ (১৬)। সরজমিন ঘুরে জানা যায়,গত শুক্রবার (২সেপ্টেম্বর) খালিদ মসজিদ থেকে জুম্মার নামাজ পড়ে বের হলে মুন্না ও জুলফিকার নামের দুই যুবক মোটরসাইকেলে এসে খালিদকে যোঁরপূর্বক তুলে পাশের এক বাগানে নিয়ে যায় এবং মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছের ডালের সাথে পা বেধে উল্ট করে ঝুলিয়ে নির্যাতন করে,পরে মাথার নিচে আগুন ধরিয়ে দেয়। নির্যাতনের শিকার কিশোর খালিদ জানায়,আমি কিছুই করিনি কোন গাজাঁর গাছের বিষয়েও আমি কিছু জানিনা। আমি শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হলে মুন্না ও জুলফিকার আমাকে যোঁর করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে পাশের এক বাগানে নিয়ে আমার দুই হাত গাছের সাথে বেধেঁ প্রথমে লাঠি দিয়ে মারাসহ কিল ঘুষি মারে,আমাকে মারার সময় রাব্বি মন্ডল (২২), পিতা-লতিফ মন্ডল,মুন্না মন্ডল (২৩) পিতা-মস্ত মন্ডল, চিরন্জিত দাশ (২৪),পিতা-কালি দাশ,বিতাশ ঠাকুর (২৫) পিতা-বদ্দে ঠাকুর,তুরাফ (১৬) পিতা-পুইটে, জুলফিকার (২৩) পিতা-জাকির মোড়ল,মেহেদি মোড়ল (১৫) পিতা-নুরোল মোড়ল,চয়ন, পিতা-আনোয়ার,ফয়সাল আফরিদি পিতা অজ্ঞাত, উভয় গ্রাম উজির পুর। খালিদের দাদা সামসুর রহমান জানান,আমার একটাই পোতা ছেলে যদি ওর কিছু হয়ে যেত,তাহলে আমরা কি করতাম,ওরা আমার পোতা ছেলেকে মেরে ফেলার জন্য বাগানে নিয়ে গেছিলো। খালিদের মা-রাবেয়া বেগম জানান,শুক্রবার সকালে তুরাপ আমাদের বাড়িতে খালিদকে খুঁজতে আসে,পরে আবার দুপুরে খুঁজতে আসে এবং আমার বাড়ির সামনে ১০-১৫ জন ছেলে পেলে ঘুরাঘুরি করে,আমার ছেলে মসজিদ থেকে বের হলে ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য করে বাগানে নিয়ে উল্ট করে ঝুলিয়ে মারধোর করে,আমি অপরাধিদের উপযুক্ত বিচার চাই। খালিদের বাবা মশিয়ার জানান,আমি গ্রামের লোকজনদের আমার ছেলেকে নির্যাতনের বিষয়ে জানিয়েছি এবং আমাদের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ রাজু মোল্যাকে বলেছি,কাউন্সিলর আমাকে বলেছে, সবাই মিলে এক যায়গায় বসে মিমাংশা করে দিবানি, যদি তোমাদের মনের মত বিচার না হয়,তাহলে তোমাদের যা যা করতে মনে চাই,তুমরা তাই করবা বলেও আমাকে জানান। স্থানীয় উজিরপুর গ্রামের জিয়া,মইনদ্দিন,পলাশ বিশ্বাস,ঠান্ডু মোল্যা অভিযোগ করে বলেন,খালিদের বাবা মশিয়ার একজন ভালো মানুষ এবং খালিদ ছোট মানুষ,খালিদ কত বড় অপরাধ করেছে যে খালিদ মসজিদ থেকে বের হলেই তাকে ধরে নিয়ে প্রথমে গাছের সাথে বেধেঁ মারপিট করে,পরে আবারও গাছের ডালের সাথে উল্ট করে ঝুলিয়ে মারপিট করে এবং খালিদের মাথার নিচে আগুন ধরিয়ে দেয় এই অমানুষরা। খালিদকে যে ছেলেরা নির্যাতন করেছে এরা সবাই মাদকাসক্ত, সব সময় নিশার উপরে থাকে। নিশাগ্রস্থ অবস্থায় গাজাঁর গাছ নিয়ে ওরা খালিদকে মেরে ফেলার জন্য বাগানে নিয়ে গেছিলো,আল্লাহুর রহমতে খালিদ জান নিয়ে ফিরে এসেছে অপরাধীদের বিচার করতে হবে,ওরা এর আগেও অনেক বার অপকর্ম করেছে,এদের বিচার না হলে এর পরে এর চেয়ে বড় কোন ঘটনা নিশাগ্রস্থ অবস্থায় ঘটাবে বলেও জানান। এবিষয়ে অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া না গেলেও অভিযুক্ত বিতাশ ঠাকুর ঘটনার সত্যতা শিকার করে সাংবাদিকদের জানান,খালিদ ছোট ভাই,ওরা সবাই খালিদকে ধরে আনে একটি গাজাঁর গাছ নিয়েছে কি না এজন্য,কিন্তু খালিদের সাথে যা করা হয়েছে একটু বেশি হয়ে গেছে,খালিদ কে উল্ট করে গাছের ডালে ঝুলানো উচিৎ হয়নি এবং আগুন ধরানোও উচিৎ হয়নি,এগুলা একটু বেশি হয়ে গেছে বলেও শিকার করেন।পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ রাজু মোল্যা জানান,ঘটনাটা শুনেছি,আমি পৌরসভায় একটা মিটিং এ আছি এ বিষয়ে আপনাকে পরে জানাচ্ছি বলে জানান।