বিএনপি কি বাংলাদেশ নাশকতা পার্টি?

Uncategorized অন্যান্য


বিশেষ প্রতিবেদন ঃ বিগত দিনের কথা না ই বা বললাম, ২৫ জুন যখন গোটা জাতি স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের অপেক্ষায়, বাঙালি তার অর্থনৈতিক মুক্তির পথে যখন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইল ফলক অতিক্রম করতে যাচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে বিএনপি এবং তার মিত্ররা হিংসা আর ক্ষোভের আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাড়খাঁর হয়েছিল । তারা বাংলাদেশের এই মহা অর্জনের উৎসবকে ম্লান করার লক্ষ্যে নাশকতার আশ্রয় নিয়েছে । জুন মাসের শুরু থেকেই তারা পরিকল্পিতভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে অগ্নি সংযোগ করছে । অগ্নি সংযোগের ঘটনার স্থানগুলো এবং এসব অগ্নিসংযোগের সময়ভিত্তিক ধারাবাহিকতা পর্যবেক্ষণ করলেই স্পষ্ট বুঝা যায়, জাতির গৌরবের এই মহা অর্জন উদযাপনের ঐতিহাসিক ঘটনাটিকে নস্যাৎ করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিলো । জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল ষড়যন্ত্র আর প্রতিবন্ধকতা নস্যাৎ করে এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের মতো বিশ্ব মোড়লদের খবরদারীকে অগ্রাহ্য করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা তাঁর আকাশচুম্বী মনোবল, ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা, অসীম সাহস এবং অতুলনীয় মেধা ও দক্ষতা দিয়ে বিএনপির নাশকাতা রুখে দিয়ে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ভৌতকাঠামো পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে বাঙালির স্বপ্নজয় করেছেন।

এটি আজ কারো বুঝতে বাকি নেই, বাঙালির এই স্বপ্নজয়কে বিএনপি এবং তার দোসররা মেনে নিতে পারছে না । তাই তারা নাশকতার এই ঘৃণ্য পথ বেঁচে নিয়েছিল এবং নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে তারা বড় ধরণের নাশকতার পরিকল্পনা নিয়েছিল । এই ধরণের তথ্য সরকারের হাতে রয়েছে । তারা আমাদের জাতীয় অর্জনগুলোকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না । যেকোনো মূল্যে তারা এগুলোকে ম্লান করতে চায় । এই অপশক্তি জাতিকে কিছু দিতে পারেনি, তাদের কিছু দেযার সক্ষমতা নেই আর দেয়ার মানসিকতাও নেই । তাদের কাছে দেশের স্বার্থের কোন গুরুত্ব নেই । নিজের হীনস্বার্থে তারা জাতীয় স্বার্থ সহ যেকোনো স্বার্থ এমনকি মানবতাকেও আঘাত করতে পারে । বঙ্গবন্ধু কন্যার অর্জনগুলোকে তারা নস্যাৎ করতে চায় । এই জন্য তারা নাশকতার আশ্রয় নিচ্ছে বারবার ।

জাতীয় স্বার্থ বিরোধী নানা অপকর্মের কারণে এবং মানুষের পাশে না থাকার কারণে বিএনপি আজ গণবিচ্ছিন্ন । তারা নির্বাচনকে ভয় পায় । মানুষের কাছে ভোট চাওয়ার নৈতিক অধিকার তাদের নেই । মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে । তারা সেটি জানে । তাই তারা নির্বাচন প্রতিহত করতে চায় । দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে নস্যাৎ করে তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায় । সেই লক্ষ্যে তারা নাশকতার পথ বেছে নিয়েছে ।

নাশকতা ছাড়া তাদের আর কিছুই করার নেই । এটিই তাদের একমাত্র পথ । নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তারা নির্বাচন প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে তারা পুড়িয়ে মেরেছে । অনেকে এখনো যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে । এর মধ্যে অসংখ্য নারী ও শিশু রয়েছে । অপরাধের হিংস্রতা ও তীব্রতা বিবেচনায় এই ধরণের অপরাধ মানবতা বিরোধী অপরাধের পর্যায়ের । এদেশে প্রকাশ্যে এই ধরণের ঘৃণ্য অপরাধ করেও বিএনপি এখনো রাজনীতি করার নৈতিক শক্তি পায় কীভাবে, সেটি আমার প্রশ্ন । এরা দেশের শত্রু, এরা জাতীয় স্বার্থকে বিপন্ন করতে চায়, এরা বার বার মানবতার উপর আঘাত করতে চায় । সময় এসেছে এদের প্রতিরোধের । মানবতা বিরোধী এই দুষ্টচক্রকে আমাদের রুখে দিতে হবে । জাতীয় স্বার্থ রক্ষায়, মানুষের জীবন- জীবিকা রক্ষায় এই অপশক্তির বিরুদ্ধে সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন থেকে শুরু করে জাতি হিসেবে আমরা যতগুলো অর্জন পেয়েছি, তার প্রত্যেকটিই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু অথবা তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার কারণে । বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনা ছাড়া আর কেও এদেশের জন্য কিছু দিয়ে যেতে পারেনি । জাতির পিতা স্বাধীনতা এনেছেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, স্বাধীনতাকে টেকসই করার লক্ষ্যে সফলভাবে সারা বিশ্বের স্বীকৃতি আদায় করেছেন, দেশের ভূখণ্ডকে নিরাপদ রাখতে সাফল্যের সাথে স্থল সীমানা চুক্তি সম্পাদন করেছেন এবং তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বার্থকে বহুলাংশে প্রাধান্য দিয়ে এই চুক্তি বাস্তবায়ন করেছেন । এর ফলে বাংলাদেশ যে অতিরিক্ত ভূমি (৪১ বর্গ কিলোমিটার ) পেয়েছে, তার আয়তন বিশ্বের ৬ টি দেশের আয়তনের চেয়ে বড়ো । শেখ হাসিনা গঙ্গা চুক্তি করে দেশের পানির অধিকার রক্ষা করেছেন, পার্বত্য জেলাগুলোতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা করার জন্য শান্তি চুক্তি করেছেন, ভারত ও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনি লড়াইয়ে সমুদ্রে বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, দেশকে স্বল্পোন্নত রাষ্ট্র থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত করেছেন, দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, ভৌত কাঠামো নির্মাণসহ সহ সকল ক্ষেত্রে বিস্ময়কর সফলতা দেখিয়ে আকাশচুম্বী উন্নয়ন করেছেন।
অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্রগতি বিবেচনায় বাংলাদেশ আজ বিশ্বের মডেল রাষ্ট্র । টেকসই উন্নয়নের অগ্রগতিতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে চ্যাম্পিয়ন । পুরো পৃথিবীতে এতো অল্প সময়ে অন্য কোন রাষ্ট্র এই রকম সফলতা অর্জন করতে পারেনি । এই সকল অর্জনের মূল নায়ক জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা । জাতির পিতার পর তিনিই বাঙালির ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন । তাঁর কারণেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বে নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে । তিনি বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন । ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রাষ্ট্রকে টেকসই ও নিরাপদ রাখার জন্য একশো বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়েছেন । সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় কার্যকরী প্রকল্প গুলোও বাস্তবায়ন করছেন ।

বিএনপি এবং তাদের সহযোগীদের ঝুলিতে ভালো কিছু নেই । আছে শুধু নাশকতা, অপকর্ম,হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র আর পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে নানা দেশবিরোধী কর্মকান্ড । যতদিন তারা ক্ষমতায় ছিল, দেশের জন্য কোন ইতিবাচক কাজ করতে পারেনি ।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *