নিজস্ব প্রতিবেদক : বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যাকাণ্ডের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার বিকালেই ভিসি বিভিন্ন হলের প্রভোস্টদের নিয়ে বৈঠক করেন। এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আজ দুপুরে জরুরি বৈঠকে বসেছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি। বৈঠক শেষে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি।
এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে বুয়েট শিক্ষক সমিতি, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এবং ডাকসুর ভিপি। পৃথকভাবে মিছিল করেন বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থীরাও।
বিক্ষুব্ধ ও শোকে মুহ্যমান শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ এসব কর্মসূচি থেকে আবরার খুনে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ফাঁসির দাবি জানান।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হত্যার বিচার, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের আজীবন বহিষ্কার, মামলার চার্জশিট না হওয়া পর্যন্ত বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা ও সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধসহ দশ দফা দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দশ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, খুনিদের শানাক্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, খুনিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১১ অক্টোবরের মধ্যে আজীবন বহিষ্কার করতে হবে, আবরার হত্যা মামলার সব খরচ এবং ক্ষতিপূরণ বিশ্ববিদ্যালয়কে বহন করতে হবে, মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীন স্বল্পতম সময়ে নিস্পত্তি করতে হবে, অবিলম্বে চার্জশিটের কপিসহ অফিসিয়াল নোটিশ দিতে হবে, বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে, ঘটনার পর ভিসি কেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হননি এবং ৩৮ ঘন্টা পর গিয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ায় আজ দুপুর ২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছে তার জবাব দিতে হবে, আবাসিক হলগুলোতে র্যাগ এর নামে এবং ভিন্নমত দমানোর নামে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে, এ ধরণের ঘটনা প্রকাশে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে হবে এবং নিরাপত্তার জন্য সব হলের উইংয়ের দুই পাশে সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে এবং ১১ অক্টোবরের মধ্যে শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক অধ্যাপক মিজানুর রহমান। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে আসলে আন্দোলনকারীরা তাকে ঘিরে ধরেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের জন্য তার কাছে দাবি জানান।
অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি মনে করি বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন নেই।’
এ ছাড়া আগামী সাত দিনের মধ্যে বুয়েটে সব ছাত্র সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।