২৯ কেজি গাঁজা ও ১ টি অবৈধ বিদেশি পিস্তল সহ উত্তরা ও সাভার কেন্দ্রীক মাদক সিন্ডিকেটের ৪ সদস্য গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত



নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই মাদক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে।

মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার সহ নেশার মরণ ছোবল থেকে তরুন সমাজকে রক্ষার জন্য ঢাকা মহানগরীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর) এর জোরালো কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভিাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্ল্যাহ কাজল এবং ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর) এর উপ-পরিচালক মোঃ রাশেদুজ্জামান এর সার্বিক নির্দেশনায় মোঃ মেহেদী হাসান, ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর) এর নেতৃত্বে মোহাম্মদপুর সার্কেলের সকল কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি বিশেষ টিম গত শনিবার ৩০ অক্টোবর রাত ১১ টা থেকে গত রবিবার ৩১ অক্টোবর সকাল ৮ টা উত্তরার ১০ সেক্টরের ১৩ নং রোডে এবং সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নস্থ সামাইর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ২৯ (উনত্রিশ) কেজি গাঁজা ও ১(এক) টি অবৈধ বিদেশি পিস্তল সহ উত্তরা এবং সাভার কেন্দ্রীক সক্রিয় মাদক সিন্ডিকেটের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের নাম ও ঠিকানা যথাক্রমে, মোঃ রুবেল (৩২), পিতা: মৃত: আয়নাল হক, থানা:সাভার, জেলা: ঢাকা। মো: ফারুক দেওয়ান (৩০), পিতা: মো: সফু দেওয়ান, থানা: সাভার, জেলা: ঢাকা। মো: নুর উদ্দিন দেওয়ান (৪৫), মৃত: দেওয়ান কদর আলী, থানা: ধামরাই, জেলা: ঢাকা।- গাড়ীচালক এবং মো: রাব্বি (২১), পিতা: হাচান আলী, থানা: সাভার, জেলা: ঢাকা।
চক্রটিকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়’ মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এর কর্মকর্তারা গত ২(দুই) মাস আগে রুবেলের নেতৃত্বাধীন এই মাদক সিন্ডিকেটের সন্ধান পাই। প্রাপ্ত তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে গত মাসে তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করলেও তারা কৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
প্রাপ্ত তথ্যমতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এর কর্মকর্তারা অবগত হয় যে, চক্রটি গাঁজার একটি বড় চালান হবিগঞ্জ হতে উত্তরাতে মজুদের উদ্দ্যেশে বহন করবে।
সে মোতাবেক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১০ নং সেক্টরের ১৩ রোডে আমরা অবস্থান নেয় এবং গাঁজা পরিবহন কালে তাদের ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কারকে গতি রোধ করে ২০ কেজি গাঁজা সহ আসামীদের আটক করতে সক্ষম হয়।
আসামীদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে ও তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ১ নং আসামী রুবেল এর বসতবাড়িতে আরো গাঁজা মজুদ রয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নস্থ সামাইর গ্রামে রুবেলের বাসায় অভিযান পরিচালনা করে আরো ৯ কেজি গাঁজা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। গাঁজা উদ্ধারের সময় তার বসতবাড়িতে একটি অবৈধ বিদেশি পিস্তল (ম্যাগজিন সহ) উদ্ধার করা হয়। পিস্তলের বিষয়ে আসামী রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, পিস্তলটি সে বিভিন্ন সময় মাদক অপরাধ সংক্রান্ত সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করত।

ব্যবসার কৌশল সম্পর্কে জানা যায়, রুবেল এর নেতৃত্বে সাভার ও উত্তরা এলাকায় এই সক্রিয় চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ গাঁজা ও ইয়াবা সরবরাহ করতো বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। গ্রেফতারকৃত রুবেল ২,৩, ও ৪ নং আসামীদের সহযোগিতায় গাজীপুর, ঢাকা কেরানীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় গাঁজা ও ইয়াবা সরবরাহ করতো।
নিজ এলাকায় মাদক ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য রুবেল অস্ত্র সংগ্রহ করেছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
এই চালানের পূর্বেও হবিগঞ্জ, বাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা হতে তারা গাঁজার একাধিক চালান এনেছিল বলে জানায়।
প্রাপ্ত তথ্যমতে জানা যায়, তারা প্রতি কেজি গাঁজা ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা দরে ক্রয় করে ঢাকায় এনে দ্বিগুন দামে বিক্রি করতো।
লাইনম্যান ব্যবহার ঃ নিজেদের নিরাপত্তার জন্য গাঁজা পরিবহন কালে তারা একাধিক প্রোটকল মেইনটেন করে। তাদের একটি গ্রুপ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক বিভিন্ন টহল টিম ও চেকপোস্ট সম্পর্কে অপর গ্রুপ (মাদক পরিবহনকারী) কে ক্লিয়ারেন্স দিলে তারা ঢাকাগামী হয়। এভাবে তারা হবিগঞ্জ হতে ঢাকা পর্যন্ত তাদের ভাষায় লাইনম্যান ব্যবহার করে মাদক পরিবহন করে।

অবৈধ বিদেশি পিস্তল সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, এই সিন্ডিকেটের মূলহোতা গ্রেফতারকৃত রুবেল জানায়, মূলত তার এলাকায় মাদক ব্যবসায় প্রভাব বিস্তার করতে সে এই অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ করেছিল।
সে কিভাবে এবং কার মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ করেছিল সে বিষয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এর কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন। প্রাপ্ত তথ্যস মূহ যাচাই-বাছাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর) কর্তৃক ভবিষ্যতে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। মাদক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি বাস্তবায়নে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) বদ্ধপরিকর।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *