কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : লাখো সাধু ভক্ত আর দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন আঁখড়াবাড়ী। বুধবার থেকে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ্ এর ১২৯তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে চলছে সাধু সঙ্গ ও লালন মেলা।
দেশের বিভিন্নস্থান থেকে সাধু-ভক্তরা যোগ দিয়েছেন এই সাধুর হাটে। সাধু-ভক্ত আর দর্শীনার্থীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকেই লালন আখঁড়াবী এবং মেলা প্রাঙ্গনে মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
রানা নামের দর্শনার্থী জানান, আমি প্রতিবছরই আসি এই লালন মেলায়। এবারো এসেছি। সাধুদের কার্যক্রম দেখি, তাদের গান শুনি। বেশ ভালোই লাগে।
শরিফুল ইসলাম নামের একজন দর্শনার্থী জানান, মেলা চলাকালীন সময়ে সারাদিনই চলে লালনের গান। সাধুরা গানের অর্থও বুঝিয়ে বলে দেয়। তাই এখানে মেলা দেখতে এসেছি।
দেশের দূর-দূরান্ত থেকে সাধু-ভক্ত, বাউল গানের ভক্তরা এবং দর্শনার্থীরা এসেছেন এই লালন মেলায়। এখানে আসতে সাধুদের কোন দাওয়াতের প্রয়োজন হয় না। তারা আপনা-আপনি মনের টানে এখানে ছুটে আসে।
কলেজ শিক্ষার্থী মারিয়া জানান, কলেজে ক্লাস শেষ করে ভাবলাম একটু লালন মেলা দেখে আসি। তাই দেখতে এসেছি। এর আগে কোনদিন লালন মেলা দেখতে আসিনি। বেশ ভালো লাগছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সাধুরা নিজ নিজ আসন পেতে বসে আছেন। তারা গুরু শিষ্য ভাব আদান-প্রদান করছেন, সেই সাথে ফকির লালন শাহ্ এর জীবন নিয়ে এবং তার গান নিয়ে আলোচনা করছেন। সেই সাথে চলছে বাউলা গান।
লালন একাডেমীর সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক (খাদেম) মোহাম্মদ আলী বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, সাঁইজির তিরোধান দিবস উপলক্ষে সাধু ভক্তদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে আঁখড়াবাড়ী। এখানে প্রতবছরই দেশ বিদেশের লাখো মানুষের আগমন ঘটে। এবারো তার কোনো ব্যতিক্রম হয়নি।
ফকির লালন শাহ্ এর ১২৯তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে লালন মেলা চলবে শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে পূণ্য সেবার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সাধুদের সাধু সঙ্গ।
সাধুদের পূণ্য সেবার মধ্য ছিলো সাদা ভাত, ডাল, সবজি, মাছ, দই। সকল সাধু-ভক্তদের খাবার দেয়া শেষ হলে সবাই একসাথে সেবা নেয়।
প্রসঙ্গত, সাধুসঙ্গ শেষ হলেও লালন একাডেমির উদ্যোগে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর কালিনদের পাড়ে গ্রামীণ মেলা চলবে আরো একদিন।