মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
নড়াইলের তিনটি উপজেলায় শীতের আগমনে ধুম পড়েছে লেপ-তোশক তৈরির কাজে। লেপ তোশকের কারিগর’রা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। জনসাধারণও ভিড় জমাচ্ছেন,লেপ-তোশকের দোকানে। জেলা সদর,লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন বাজারের লেপ তোশক তৈরির প্রতিটি দোকানে এখন প্রতিদিন ১৫/২০টি লেপ তোশক তৈরি হচ্ছে। তবে লেপের কাপড়,ফোম ও মজুরি গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতা’রা। লোহাগড়া বাজারের আজিবর বেডিং স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো:আজিবর চৌধুরী বলেন, ৩০/৩৫ বছর ধরে লেপ-তোশক তৈরি ও বিক্রি করে আসছি। লেপ তোশক তৈরি করে আজ আমি স্বাবলম্বী হয়েছি। দুই ছেলে চার মেয়েকে পড়ালেখা শিখিয়েছি। খরচ মিটিয়ে সংসারের হাল ধরে আছি এ ব্যবসা থেকেই। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছি আর ছেলে’রা পড়ালেখা করছে। তিনি আরও বলেন,ইচ্ছে করলেও এ ব্যবসা ছেড়ে দিতে পারিনি। প্রায় শত বছরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হাল ধরে রেখেছি। বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানে ৮ জন কারিগর আছেন। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০টি লেপ তৈরি হয়ে থাকে। ৪-৫ হাত মাপের তৈরি লেপ ১৩শ টাকা থেকে ১৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। লেপ তোশক তৈরির কারিগর মো:মুজিবর চৌধুরী বলেন,আমি ১৫ বছর যাব লেপ তোশকের কারিগর হিসেবে কাজ করে আসছি। এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে মন চায় না। বাবার সূত্র ধরেই আমি ১৫ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে জড়িত। কারিগর মো: অলিয়ার রহমান বলেন,শীত আসার আগেই মানুষ লেপ-তোশক বানাতে শুরু করে দিয়েছে। আমরাও ব্যস্ত সময় পার করছি। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসা আরও বৃদ্ধি পাবে। মনে হয় এ বছর আয় রোজগার ভালোই হবে। নড়াইল সদর পৌর এলাকায় লেপ কিনতে আসা মো:রাজু শেখ বলেন,শীত এসে গেছে বাসায় ব্যবহারের জন্য লেপ কিনতে এসেছি,তবে গত বছরের তুলনায় দাম অনেক বেশি মনে হচ্ছে। কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে লেপ কিনতে আসা লোকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান,গত কয়েক বছরের তুলনায় দাম অনেক বেশি। লোহাগড়া বাজারে কথা হয় লেপ-তোষক কিনতে আসা উপজেলার লোহাগড়া ইউনিয়নের কাউড়িখোলা গ্রামের বিপুল গাইন সঙ্গে। তিনি বলেন,শীত পড়তে শুরু করেছে। বেশি শীত পড়ার আগেই নতুন লেপ-তোষক তৈরি করতে এসেছি। কিন্তু তুলা,কাপড় ও কারিগরের মুজুরি বেশি হওয়ায় দুটোর স্থলে একটা বানিয়ে নিলাম বলেও জানান।