ফলোআপ! ৭৪ বছরেও ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদ পাননি নারীরা

Uncategorized রাজনীতি



!! যোগ্যতা থাকার পরও শুধু লৈঙ্গিক পক্ষপাতিত্বের কারণে নারীদের শীর্ষ পদ দেওয়া হচ্ছে না !!


নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ প্রতিষ্ঠার ৭৪ বছর পেরিয়ে গেলেও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ পদের একটিতেও দেখা যায়নি কোনো নারী নেতৃত্ব। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোনো সম্মেলনেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কোনো নারীকে নির্বাচন করা হয়নি।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসন অবসানের পরের বছর ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা হয়। মূল দল আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা হয় তার পরের বছর। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উভয় পদেই নারীদের নির্বাচিত করার নজির থাকলেও ছাত্রলীগে এখনো তা হয়নি। তবে আগামী ৮ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সম্মেলন ঘিরে দুই নারী নেতার পদ পাবার সম্ভাবনা নিয়ে সংগঠনের মধ্যে জোরালো আলোচনা রয়েছে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দপ্তরের তথ্য অনুসারে, ১৯৪৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগের ২৯টি কমিটিতে ৬১ জন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক কিংবা আহ্বায়ক ছিলেন। এদের মধ্যে একজনও নারী নন।

সংগঠনের নারী নেতাদের অভিযোগ, যোগ্যতা থাকার পরও শুধু লৈঙ্গিক পক্ষপাতিত্বের কারণে নারীদের শীর্ষ পদ দেওয়া হচ্ছে না।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নারী নেত্রী গণমাধ্যম কে জানান, এক সময়ে সংগঠনটিতে নারী নেতাকর্মীর সংকট থাকলেও বর্তমানে তা নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিপুল সংখ্যক নারী নেতাকর্মী সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। নারী নেতারা অনেকেই ছেলেদের সঙ্গে সমানতালে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নারীদের বিবেচনা করা হচ্ছে না।

এমনকি সহসভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পুরুষদের তুলনায় দশ ভাগের এক ভাগ নারীও দেখা যায় না। হতদরিদ্র দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি। এখন এ দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো দরকার।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা গণমাধ্যম কে জানান, আগামী ৮ ডিসেম্বর সম্মেলন সামনে রেখে সংগঠনের দুই নারী নেতা আলোচনায় রয়েছেন। এরা হলেন, ছাত্রলীগের সহসভাপতি তিলোত্তমা সিকদার ও ফরিদা পারভীন। তারা দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নানা কর্মসূচিতে সামনের সারিতে থেকেই অংশ নিচ্ছেন।

ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিনেট সদস্য তিলোত্তমা সিকদার গণমাধ্যম কে জানান, ‘ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও সমান তালে রাজনীতি করছে। সব কর্মসূচিতে আমরা অংশ নিচ্ছি। রাজনীতিতে একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সামনে আরও ভালো পরিবেশ তৈরি করার ক্ষেত্রে ছাত্রলীগ দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারে। কমিটির পদে যোগ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা দরকার।’

পদপ্রত্যাশী তিলোত্তমা সিকদার জানান, তিনি ২০১৩ সালে ঢাবি সুফিয়া কামাল হলের সাধারণ সম্পাদক, ২০১৬ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-অর্থ সম্পাদক ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক, ২০১৯ ডাকসুর সদস্য নির্বাচিত হন। কোভিড দুর্যোগে ভূমিকা রেখে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন।

নারী হিসেবে নয়, সংগঠনে নিজের কাজ দিয়েই অবস্থান গড়তে চান তিনি। ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফরিদা পারভীন ঢাবি কুয়েত মৈত্রী হলের সভাপতি এবং ডাকসুর নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। তিনি এবার ছাত্রলীগের মূল নেতৃত্বে আসার আলোচনায় রয়েছেন।

ফরিদা পারভীন গণমাধ্যম কে জানান, ‘বহুকাল মানুষের ধারণা ছিল দক্ষতা, বুদ্ধি, সক্রিয়তার দিক থেকে নারীরা পিছিয়ে আছে। কিন্তু বর্তমান শতাব্দীতে এ ধারণা অসার প্রমাণ হয়েছে। নারীরা এখন সর্বক্ষেত্রে পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে পারদর্শিতা দেখাচ্ছে।

যেকোনো দুর্যোগে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ফলে নেতৃত্ব নির্বাচনে নারী নাকি পুরুষ সেটা না দেখে যোগ্যতা ও দক্ষতার মূল্যায়ন করার সময় এসেছে। প্রগতিশীল একটি ছাত্র সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগ পারে এ দৃষ্টান্ত তৈরি করতে।’


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *