আজকের দেশ ডেস্ক
এবার শুদ্ধি অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে জনপ্রশাসনে। জানা গেছে, শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে মাঠ প্রশাসন পর্যন্ত এই অভিযান চলবে।
বুধবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশাসন থেকে অসৎ, অযোগ্য, অদক্ষ এমনকি অতিদলবাজদের বিষয়ে প্রশাসনিক আইনানুগ সিদ্ধান্ত জারি করা হবে। প্রশাসনের কোনো স্তরে সততা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এমন কেউ থাকতে পারবেন না। এটি নিশ্চিত করেই দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে সুশাসন কায়েম করা হবে। সুশাসন ছাড়া কাঙ্ক্ষিত জনসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
জানা গেছে, এই অভিযানের প্রাথমিক কার্যক্রম হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন এবং সচিব মো. ফয়েজ আহমেদ অতি গোপনে প্রতি রাতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীর তালিকা যাচাইবাছাই করছেন। যারা এখন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত, আগে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। তালিকা চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে সততা, দক্ষতা ও যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, একজন একজন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীর ব্যক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণ করা, তার আচরণ, কর্মক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা, সততা-দক্ষতা মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এসব কার্যক্রম শেষ হলে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হবে।
তিনি আরো বলেন, এখনো কেউ অন্যায় করলে বা অসততা প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর্থিকভাবে সন্দেহভাজন হলেও তাকে ক্ষমা করা হবে না। কে কার আত্মীয়, কোন অঞ্চলে জন্ম, ছাত্রজীবনে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কে পড়েছেন—এসব কোনো কিছুই বিবেচনায় স্থান পাবে না। যত উঁচুতেই তার অবস্থান হোক না কেন, অসত্ ব্যক্তির অবস্থান প্রশাসনে হবে না। এটি সরকারের জন্য চ্যলেঞ্জ, এতে বিজয়ী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ক্ষেত্রবিশেষে স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধি আছেন, যারা কিছু কর্মকর্তাকে সততার বিপরীতে কাজ করতে বাধ্য করছেন। এসব কর্মকর্তার আচরণ নিয়েও প্রশ্ন আছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। ৯ মাস সময় দেওয়া হয়েছে, আর সহ্য করা হবে না।
জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমেদ শুদ্ধি অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে—এ কথা স্বীকার করে বলেন, সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনযাপন সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রতিদিনই তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। সচিব থেকে শুরু করে মাঠ প্রশাসনের সব পদের নিয়োগ, পদোন্নতির ক্ষেত্রে সততাকে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সততার অভাব আছে এমন কেউ যদি ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে নিয়োজিত থাকেন, সেটিও বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। মোট কথা, সততা নিয়ে প্রশ্ন আছে এমন কাউকে প্রশাসনে রাখা হবে না।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষণে স্পষ্ট জানান, বেতন-ভাতা গাড়ি-বাড়ির সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পর কেউ দুর্নীতি করলে বরদাশত করা হবে না।