এইচ এম মেহেদী হাসান
একজন শেখ হাসিনা আর কতো করবেন। তিনি যেভাবে দেশকে গড়ার জন্য, দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। অন্তত তাঁর কাছের মানুষগুলো যদি একটু তাঁকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতো হয়তো তিনি আরও বেশি কাজ করার শক্তি সাহস পেতেন। কিন্তু চরম সত্য কথা বলতে আজ দ্বিধা নেই, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আজ একাই লড়াই করে চলছেন, তিনি দ্ব্যর্থকন্ঠে ঘোষণা করেন, আমার ডিকশনারিতে ভয় বলতে কোনো শব্দ নেই, এই শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তিনি যখন এই অভিযানকে সর্বস্তরে করার পরিকল্পনা করে যাচ্ছেন, এবং কি উপজেলা পর্যায়ও শুদ্ধি অভিযান চালানোর জন্য চিন্তা করছেন, তখন কেনো জানি কেউ কেউ বা কোনো কোনো বাহিনী শেখ হাসিনার পাশে থাকতে গড়িমসি করে করছে। শেখ হাসিনার ইচ্ছার প্রতিফলন হয়ত শতভাগ নিশ্চিত করা যাবেনা, কিন্তু তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তিনিও হাল ছাড়ার পাত্র নন। সারাদেশের সাধারণ মানুষ যখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছে অর্থাৎ শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের আস্থা, বিশ্বাসের শতভাগ নিশ্চিত হয়েছে। তখন কেনো জানি শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান আর দীর্ঘ না হয় তেমন একটি মনোভাব প্রথম সারির নেতা বা বাহিনী বা সংস্থার মাঝে। যদি প্রতিটি সংস্থার প্রতিটি স্তরে এই শুদ্ধি অভিযান পৌঁছানো না যায় তবে গুটিকয়েক স্তরের অভিযান দিয়ে শুদ্ধিকরণ করা সম্ভব নয়। সুতরাং অসৎ, দুষ্কৃতিকারী, দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ হয়তো সমাজে নগণ্য, কিন্তু তাদের শেকড় অনেক গভীরে। তাই সৎ যোগ্য, ভালো মানুষদেরকেই আগে প্রতিবাদ করতে হবে, শেখ হাসিনার পাশে থাকতে হবে। এই শুদ্ধি অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে মিছিল মিটিং, মানববন্ধন করা উচিত ছিল সমাজের শুদ্ধ মানুষের। রাজনৈতিক ভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর শুদ্ধ নেতা কর্মীদের শেখ হাসিনার পাশে থেকে অভয় দেওয়া আবশ্যক ছিল কিন্তু তা দেখা যাচ্ছে না। এতেই বোঝা যায় যে, সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকে গেছে। অসৎ, অযোগ্য, মেধাহীন, দুষ্কৃতিকারীদের ভারে আজ সমাজ নুয়ে পড়েছে। আর এই নুয়ে পড়া সমাজকে টেনে সোজা করার জন্য শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান। অথচ শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান যাতে আর এগুতে না পারে সেই মনোভাব দেখা যায় সমাজের উঁচু শ্রেণীর কতিপয় লোকের মনোভাবে। শেখ হাসিনা তাঁর নিজের ঘর থেকে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন, যখন তিনি নিজ দলের মধ্যম শ্রেণীর দুষ্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় এনেছেন এবং রাঘব বোয়ালদের ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখনই বিধিবাম। এতো দিন যারা সাদা মনের মানুষ হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে প্রশংসিত হয়ে আসছিলেন, শুদ্ধি অভিযানে তাদের কুৎসিত চেহারা সমাজের সামনে হাজির হওয়ার খুবই সন্নিকটে তখনই বাজে বিধিবাম। তদন্তে বেড়িয়ে আসতে থাকে থলের বিড়াল। সব পেশার সাদা মনের মানুষগুলোর কু-কীর্তির ঝোলা বেড়িয়ে আসতে থাকে। তখনই শেখ হাসিনার পাশ থেকে অনেকেই ছিটকে পড়তে শুরু করে এবং কি বিভিন্ন উপদেশ আদেশ দিয়ে শেখ হাসিনাকে শুদ্ধি অভিযান থেকে সরানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখছে, কিন্তু শেখ হাসিনা অনড় আছেন। এখন প্রয়োজন শেখ হাসিনার অনড় পজিশনকে সম্মান জানিয়ে শুদ্ধ মানুষগুলোর জোড়েসোড়ে আওয়াজ গড়ে তোলা।
শেখ হাসিনা তাঁর মহান পিতার সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক সংগ্রাম ও অর্থনৈতিক মুক্তির লড়াই এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সৃষ্ট বাংলাদেশের চার রাষ্ট্রনীতিভিত্তিক মৌলিক সত্তা রক্ষায় তিনি অঙ্গীকারদ্বীপ্ত নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতি রাষ্ট্রের ¯্রষ্টা, মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, সমগ্র বিশ্বের নির্যাতিত-বঞ্চিত মানুষের নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতোই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, সাহস, বাগিন্মতা এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্ব,আজ তাঁকে বিশ্ব নেতায় পরিণত করেন। তাঁর চিন্তা -চেতনা ও রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিফলন ঘটেছে দেশের সেবার মধ্য দিয়ে। তিনি সব সময়ই বলে থাকেন, তিনি দেশের শাসক নন, তিনি দেশের সেবক। তিনি দেশকে শাসন করার দায়িত্ব নেননি, তিনি দেশের মানুষের সেবা করার দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি ক্ষমতাকে ভোগে নয় ত্যাগে বিশ্বাস করেন। আর সেই মোতাবেকই দেশ পরিচালনা করে আসছেন। তিনি বিশাল হতদরিদ্র মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণের সমস্যা মোকাবেলা করে আজ পিতা মুজিবের স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বাস্তবে রুপ দান করে চলছেন অভিরামভাবে।
বঙ্গবন্ধু তাঁর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিয়মতান্ত্রিক পন্থা ও বিপ্লবী ধারার এক স্বকীয় কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। শেখ হাসিনার বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়াসেও গণতান্ত্রিক সংগ্রাম ও বিপ্লবী পন্থার সমন্বয় লক্ষ্য করা যায়। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার রাজনীতির মধ্যে এই মৌলিক সাজ্যু্েযর উপাদানগুলোর ভেতরে একটা লক্ষ্য করা যায়, সেটি হল সাহস। বঙ্গবন্ধুর সেই অসীম সাহস শেখ হাসিনা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন।
উদাহরণ হিসাবে ১৯৮১ সালের ১৭ মে জেনারেল খুনি জিয়ার রক্তচক্ষুউপেক্ষা করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন। ১৯৮৭ সালে ঢাকায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের যে অগ্নিঝরা মিছিলে নূর হোসেন শহীদ হন সেই মিছিলের একেবারে ভেতর থেকে নেতৃত্ব দেয়া শেখ হাসিনার অসীম সাহস এবং ১৯৮৮ সালে চট্রগ্রামে তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ঐ সমাবেশে সন্তাসী হামলা চালায় স্বাধীনতা বিরোধী শাসক, স্বৈরশাসক তাদের গুলিবর্ষণের মাধ্যমে যে গণহত্যা চালানো হয় তার উল্লেখ করা যায়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার শান্তি সমাবেশে স্বাধীনতা বিরোধী শাসক বিএনপি জামাতের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ নেতা কর্মীকে হত্যা করে এবং পাঁচ শতাধিক নেতা কর্মী আজও পঙ্গুত্ব বরণের জীবন যাবন করছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনার শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়। বাংলাদেশের মৌল রাষ্ট্রসত্তা ও স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের এইসব ভয়ংকর হত্যা-প্রচেষ্টার মধ্যেও শেখ হাসিনা তাঁর রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন অকুতোভয়ে।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও দেশবাসীর কল্যাণের জন্য প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু ঝুঁকির মধ্যে থেকেও এমন অঙ্গীকারদীপ্ত রাজনৈতিক সংগ্রামের নজির বিরল।
বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্যে উন্নয়ন শীর্ষক বইয়ের মূল লেখাটি বিশদ বা তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ বা কৌশলগত বিশ্লেষণমূলক নয়; তবে এতে নীতিগত বিবেচনাটি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতি ভোটে জিতে ক্ষমতার মসনদে আরোহণের জন্যে রাজনৈতিক ইস্যুকে বাগড়ম্বরপূর্ণ (জযবঃড়ৎরপধষ) ভাবে উপস্থাপন করে কেমন করে সরকারের পতন ঘটানো যায় সেই লক্ষে পরিকল্পিত। শেখ হাসিনা বলেছেন; রাজনীতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিযোগিতা হবে অর্থনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে। সামাজিক কর্মসূচি নিয়ে। কে কত ভালো কর্মসূচি দিতে পারে। কোন দলের কর্মসূচি অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে বেশি ফলপ্রসূ জনগণ তা বিচার করার সুযোগ পাবে। আন্দোলন হবে সমাজ সংস্কারের জন্যে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য। আর এ উন্নয়ন মুষ্টিমেয় মানুষের জন্যে নয়। এ উন্নয়ন হতে হবে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য। সমাজের অধিকাংশ মানুষ -যারা বঞ্চিত, জীবনের ন্যূনতম চাহিদা মেটাতে পারে না ; শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবায় সুযোগ থেকে বঞ্চিত -বঞ্চিত একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই থেকে ;বঞ্চিত কর্মসংস্হানের সুযোগ থেকে।ৃ আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে। এই সম্পদ কেউ যদি বেশি পরিমাণে দখল করে তাহলে অন্য কেউ বঞ্চিত হয়। কাজেই সম্পদের সুষম বন্টন প্রয়োজন। (বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য উন্নয়ন) ।
১৯৯৬-২০০১ সালে তাঁর সরকার গণতান্ত্রিক ধারা ও সুস্হ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার যে-প্রয়াস চালান এবং তাতে আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশের যে-ভাবমূর্তি গড়ে ওঠে ২০০১ সালের কারচুপি, ষড়যন্ত্র ও সন্তাসী পন্থায় বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এসে সহিংস নির্যাতন, লুটপাট, নারী ধর্ষণ এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর বিনাশী আক্রমণ চালিয়ে কীভাবে গণতন্ত্রকে বিপন্ন, বিপর্যস্ত এবং মানবতাকে ভূলুণ্ঠিত করে স্বাধীনতা বিরোধী শাসক।
গণতন্ত্রের ভিত্তিতে আইনের শাসনের ওপর প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দেশের প্রচলিত আইনে করার যে সিদ্ধান্ত তাঁর সরকার নেয়, তার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়।
শেখ হাসিনার রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খন্ডে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সাদাকালো ও সহেনা মানবতার অবমাননা শীর্ষক দুটি বই। প্রথম বইয়ে গৃহীত নানা রচনায় রাজনৈতিক বিষয়, জি-৮ সম্মেলনে অশংগ্রহণের বিরল অভিজ্ঞতা, দেশে দ্রব্যমূল্যের দুঃসহ পরিস্থিতি এবং স্কুল-জীবনের স্মৃতি আলোচিত হয়েছে। অন্য কোথাও আলোচিত হয়নি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর মতও পাওয়া যাচ্ছে ‘প্লিজ, সাদাকে সাদা বলুন কালোকে কালো বলুন’ রচনায়, বিষয়টি বাকশাল গঠন প্রসঙ্গে। জাতীয় সংসদে বিল এনে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষেই যে বাকশাল গঠন করা হয়েছিল সে-বিষয়টি উল্লেখ করে লেখক বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর এসংক্রান্ত সংলাপের উদ্ধৃতি দিয়েছেন। সে-অংশটি এরকম! আমি এ পরিবর্তনের পর আব্বাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম -কেন পরিবর্তন করলেন? আমি যে-উত্তরটা পেয়েছিলাম তাই এখানে তুলে ধরছি। তিনি বলেছিলেন, আমরা দীর্ঘ সংগ্রাম করেছি, বিপ্লব করেছি, গেরিলা যুদ্ধ করেছি, বিজয় অর্জন করেছি। যে -কোনো বিপ্লবের পর সমাজে একটা বিবর্তন আসে। হঠাৎ করে অনেকের হাতে অর্থ এসে যায়। গেরিলা যুদ্ধ করার কারণে সেখানে অস্ত্র ছড়িয়ে থাকে। নির্বাচনে অর্থ এবং অস্ত্রের প্রভাব যাতে না আসে,তৃণমূল থেকে সত্যিকার ত্যাগী দেশপ্রেমিক প্রার্থী যাতে জয়ী হতে পারে তার জন্য এই পরিবর্তন। একটা নির্বাচন হলে,এ থেকে এই সৎ মানুষগুলো নির্বাচিত হয়ে আসলে আর কোনো অসুবিধা হবে না, আমরা আবার সংবিধান পরিবর্তন করে সংসদীয় পদ্ধতিতে চলে যেতে পারব। “সত্যের জয়’ লেখাটিও এরকমই গুরুত্বপূর্ণ। সিনেমা হলের মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি করতে যেয়ে হাইকোর্টের রায়ে মোশতাক, সায়েম ও জিয়াকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা দখলকারী বলা হয়েছে -সে বিষয়েই বিশদ আলোচনা আছে লেখাটিতে (সম্প্রতি সুপ্রিমকোর্টের আপীল বিভাগ সে রায়কে বহাল রেখেছে)। ‘সহেনা মানবতার অবমাননা’ নামের বইয়ে ২০০১ সালে বিএনপি জামাত জোট সরকার ক্ষমতা দখল করে যে বীভৎস হত্যা, ধর্ষণ, পঙ্গু করে দেওয়া, লুটপাট, ঘরবাড়ি জমি-পুকুর দখল করার বর্বর তান্ডব চালায় তার বিবরণ রয়েছে। সুতরাং শেখ হাসিনার সব সময়ই ন্যায় নীতির পক্ষে, অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন। তিনি যে মনোভাব পোষণ করেন, তিনি যে চিন্তা করেন, তিনি যে কাজ করেন সবই দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য। সুতরাং শেখ হাসিনার পার্লস বুঝে দলের নেতাকর্মীদের রাজনীতি করা উচিৎ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে প্রদত্ত কালজয়ী ৭ই মার্চের ভাষণ এখনও স্বাধীনতার সপক্ষের মানুষকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি, মানবতার জননী, বিশ্ব শান্তির অগ্রদূত, সারাবিশ্বের সেরা রাষ্ট্রনায়ক, সারা বিশ্বের মধ্যে সততা ও আদর্শের উৎকৃষ্ট উদাহরণ জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে কঠিন সংগ্রামে লিপ্ত। জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে তিনি নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চে ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, অমর একুশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি, এশিয়ায় সম্ভবনাময় দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আবির্ভাব, মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মডেল বিশ্ব স্বীকৃতি অর্জন, সহগ্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় ঈর্ষণীয় সাফল্য, মাথাপিছু গড় আয় বৃদ্ধি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেয়া, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুসহ উন্নয়ন প্রকল্পের ৯৫ ভাগ বাস্তবায়ন, বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান ও দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার মধ্যে আনা,শিক্ষার হার বৃদ্ধি, বেকারত্বের হার হ্রাস, বিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও শান্তির রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করেছেন তিনি।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। ২০২১ সালে আগেই মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালে আগেই উন্নত সমৃদ্ধ পিতা মুজিবের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়াতে অবশ্যই সোনার মানুষ আগে হতে হবে। অন্যায় সব উন্নয়ন অর্জন সব কিছু ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। তাই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা শুদ্ধি অভিযানের মধ্য দিয়ে একটি পরিশুদ্ধ জাতি গঠনে দিকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন এবং জাতির পিতার সোনার মানুষ গড়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে সত্যিকারের মানুষ হবার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে সর্বাত্মকভাবে দেশের সকল নাগরিকের উচিৎ সহযোগিতা করা, যাতে করে কোনো কারণে এই শুদ্ধি অভিযান ব্যবহ্নত না হয়।জাতির মহান নেতার যোগ্য উত্তরসূরি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান যদি আমাদের কারণেই ব্যবহ্নত তবে আর কোনোদিন কোনো নেতার পক্ষে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সাহস হবে না। সুতরাং যার যার অবস্থান থেকে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে দুষ্কৃতিকারীদের জব্দ করতে হবে। সত্য ন্যায় নীতির সমাজ গঠনে শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করা আবশ্যক। শেখ হাসিনাকে বুঝাতে হবে আপনি একা নন, আপনার এই আন্দোলনে আমরা বাংলাদেশের বেশিরভাগই মানুষই আপনার সাথে রয়েছি।
লেখক : কলামিষ্ট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি।