ভুয়া নথিপত্র দিয়ে ব্যাবসায়ীকে ফাসালেন জামায়াতের নেতা

Uncategorized অপরাধ



নিজস্ব প্রতিবেদক : জোরপূর্বক অর্থ আদায়ের কৌশল হিসেবে সাখাওয়াত হোসেন নামে প্রবাসী এক ব্যবসায়ীকে মামলায় ফাসিয়ে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে ইসমাইল হোসেন হাওলাদার নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

ওই প্রবাসী ব্যবসায়ীর অভিযোগ, অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল হিসেবে তার বিরুদ্ধে দেশে মিথ্যা মামলা ও ভুয়া তথ্যে অভিযোগ সাজিয়েছে ইসমাইল হোসেন হাওলাদার। এ ঘটনায় হেনস্তার শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ তার।

অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন হাওলাদার সৌদি আরবে থাকাকালে দীর্ঘদিন জামায়াতের রুকন ছিলেন। তবে দেশে ফিরে রাজনৈতিক পরিচয় আড়াল করেন। এছাড়া তার ছেলে ইমমা মুজাহিদ শিবিরের নেতা ছিলেন।

মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, ২০০৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত সাখাওয়াত হোসেনের নামে প্রায় একই ধরণের অভিযোগপত্র সাজিয়ে একাধিক মামলা ও অভিযোগ দায়ের করেছেন ইসমাইল।

এসব অভিযোগে ইসমাইলের দাবি, সাখাওয়াত তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় বিদেশে লোক পাঠানোর নাম করে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা নিয়েছেন।

চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে নেওয়া টাকা ফেরত দিচ্ছেন না তিনি। এসব অভিযোগের ঘটনায় ২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় (মামলা নং- ২৫), ২০১০ সালের ২৪ মার্চ গুলশান থানাসহ (জিডি নং- ১৫৮৫) বরিশাল জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়।

অনুসন্ধান বলছে, এসব মামলার বেশিরভাগ অভিযোগই ছিল অগোছালো ও অসত্য তথ্যে ভরপুর। এরমধ্যে ২০১০ সালে করা গুলশান থানায় করা মামলাটির রায় হয়েছে।
যেখানে আদালত বলছেন, বাদির অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। ফলে সেই মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।

এছাড়া এসব মামলায় লেনদেনের যেসব কপি সংযুক্ত করা হয়েছে। অসঙ্গতি দেখা গেছে তাতেও। দুটি মামলায় একই লেনদেনের কপি দেওয়া হয়েছে। যেখানে একটিতে লেনদেনের তারিখ দেওয়া ৮/১১/২০০৯, আরেকটিতে ২৮/১১/২০০৯।

লেনদেনের চুক্তিনামায় বলা হয়, ৮ নভেম্বর ২০০৯ সালে ঢাকায় সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে ইসমাইল হোসেন হাওলাদারের চুক্তি হয়েছে। যে চুক্তিতে সাখাওয়াত হোসেন স্বাক্ষর করেছেন।

অথচ, সাখাওয়াত হোসেনের পাসপোর্টের তথ্য বলছে, এই তারিখে তিনি ছিলেন মালয়েশিয় ওই চুক্তিতে আবার লেনদেনের তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৩/১১/২০০৯ ও ২৩/১১/২০০৯।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন পরিবারসহ মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন।
দেশে ফিরলেই হেনস্তার আতঙ্কে রয়েছেন তিনি। এই প্রবাসী ব্যবসায়ী বলেন, ইসমাইলের সঙ্গে আমার দীর্ঘ সময়ের সম্পর্ক ছিল। ১৯৯৩ সালে সে একটি জালিয়াতি করে ধরা পড়েছিল। তখন থেকেই তার সঙ্গে আমার দূরত্ব।

কিন্তু ২০০৯ সালের দিকে সে আমার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করে। এরপরই সে আমার কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতে আমার নামে মামলা করে ও আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করে। আমি এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। এই চাঁদাবাজ চক্রের হাত থেকে বাঁচতে চাই।

অভিযোগ রয়েছে, মানব পাচারের দায়ে ২০১৪ সালে ইসমাইল হোসেন হাওলাদারের মালিকানাধীন ইসমাইল রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল হয়। পরে নথি ও তথ্য গোপন করে তিনি লাইসেন্স হালনাগাদ করান।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *