নড়াইলে পিতার মৃত্যুর ৩৩ দিন পর,ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিতে এসে সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ গেল ছেলের

Uncategorized অন্যান্য

মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
নড়াইলে লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের মঙ্গলপুর গ্রামের গুড় ব্যবসায়ী ইসহাক মোল্যা ৩৩ দিন আগে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়। পরে (বানকানা) নদী’র সুইস গেটের নীচ থেকে তার মরা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মমৃত-পিতা ইসহাক মোল্যা’র সেই মৃত্যুর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিতে এসে (৫ মার্চ) রবিবার সকাল ১১-৩০ মিনিটের সময় সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ গেল মৃত-ইসহাক মোল্যা’র বড় ছেলে ইসরাফিল মোল্যা (৩৫)। মৃত-ইসহাক মোল্যা’র মেঝ ছেলে একই সিএনজিতে থাকা ইসমাইল সাংবাদিকদের কান্নাজনীত কণ্ঠে বলেন,সকালে বাড়ি থেকে আমি ও আমার দুলাভাই মনির শেখ,নড়াইলে উদ্দেশে রওনা হয়ে বড়দিয়া খেয়াঘাটে আসলে আমার বড় ভাই ইসরাফিল মোল্যা আমাদের সাথে যেতে চাই বাবার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আনতে। এসময় আমরা নৌকায় উঠে পড়ি এবং আমার ভাই ইসরাফিলকে বলি তোমার যেতে হবে না,তার পরেও যোঁর করে দৌড়ে এসে নৌকায় লাফিয়ে ওঠে আমার ভাই। পরে লোহাগড়া সিএনজি স্টান্ডে গিয়ে আমরা তিন ভাইসহ আরো অজ্ঞাত দুই জন যাত্রীকে নিয়ে নড়াইলের উর্দেশে রওনা করে সিএনজি চালক। এসময় নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের তালতলা নামক স্থানে পৌঁছালে রাস্তা পার হওয়ার জন্য ৭ বছরের একটি শিশু বাচ্চা দোড় দিলে বাচ্চাটিকে বাঁচাতে গিয়ে সিএনজি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় এ সময় আমার ভাই সিএনজির চাপায় গুরুতর আহত হলে স্থানীয়’রা আমার ভাইসহ আমাদের গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার ভাইকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকি’রা নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।এদিকে,নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানার পাটনা সুইসগেট সংলগ্ন মৃত চিত্রা নদী (বানকানা) নদী থেকে নিখোঁজ ব্যবসায়ী ইসহাক মোল্যার (৭৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গত (৩১ জানুয়ারি) সকালে স্থানীয়’রা সুইস গেটের নীচে ফুলে যাওয়া লাশটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে বড়দিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা লাশ উদ্ধার করে। বড়দিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ লোকমান হোসেন লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অত:পর স্বজন’রা এসে লাশটি শনাক্ত করে। মৃত ব্যবসায়ী ইসহাক মোল্যা লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের মঙ্গলপুর গ্রামের মৃত দীন ইসলাম মোল্যার ছেলে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) স্ত্রী’র কাছ থেকে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে বাজারে নিজ দোকানে যান তিনি। বিকেলে তাকে মহাজন ঘাট এলাকায় চা খেতে দেখা গেলেও ব্যবসায়ীক কাজ সেরে তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি। তিনি পেশায় গুড় ব্যবসায়ী ছিলেন। এরপরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাকে পাওয়া যায় নি। স্বজন’রা আরো জানায়,চোরখালী ও গুচ্ছগ্রাম এলাকায় তার টাকা পয়সার লেন-দেন ছিল। কয়েকদিন আগে অনেকের সাথে তার কথা কাটাকাটিও হয়েছে। স্বজনদের ধারনা তাকে কে বা কারা হত্যা করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তারা। বড়দিয়া নৌ-পুলিশ ফাড়ীর ইনচার্জ লোকমান হোসেন বলেন,লাশটি ফুলে গেছে,ধারণা করা হচ্ছে ৪-৫ দিন আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। গায়ের কাপড় তল্লাশি করে একটা টুপি ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে বলেও জানান।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *