‘বসন্তের কোকিলদের দলে ভেড়াবেন না’

এইমাত্র জাতীয় রাজধানী রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বসন্তের কোকিলদের দলে না ভেড়াতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব‌্যে এ কথা বলেন তিনি। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন একইস্থানে বিকেল ৪টায় শুরু হবে।


বিজ্ঞাপন

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ীরা, লুটেরা, সন্ত্রাসীরা, দুর্নীতিবাজরা সাবধান। আওয়ামী লীগের এদের ঠাঁই হবে না। মনে রাখবেন ক্ষমতা চিরদিন থাকে না। ক্ষমতায় চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। বসন্তের কোকিলদের এনে দল ভারী করার চেষ্টা করবেন না। আমরা দুঃসময়ের কর্মী চাই, বসন্তের কোকিল চাই না।’

তিনি আরো বলেন, ‘স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের পার্টিতে দুষিত রক্ত আর চাই না। দুষিত রক্ত বের করে দিতে হবে। বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে। কে কতো প্রভাবশালী তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমরা চাইবো ক্লিন ইমেজের কর্মীদের নেতা বানাতে। খারাপ লোকের কোনো দরকার নেই। খারাপ লোকেরা দলের দুর্নাম ডেকে আনে। এই খারাপ লোকেরা দুঃসময় আসলে হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও এদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। সুতরাং যাদের সাহস আছে, কেয়ার আছে, যাদের ক্লিন ইমেজ আছে, আমি আশা করি আজকের দক্ষিণ মহানগরের সম্মেলন থেকে ক্লিন ইমেজের দ্বার উদঘাটনের সেই সূচনা হবে। যাদের ভালো ইমেজ তাদেরকে দিয়েই কেন্দ্রীয় সম্মেলনে নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মনে রাখবেন সোনালী সব অর্জন, এতো অর্জন, এই অর্জন খারাপ আচরনের কারনে যাতে ম্লান হয়ে না যায়। দশটা ভালো কাজকে একটা খারাপ ব্যবহার ঢেকে দিতে পারে, মলিন করে দিতে পারে। দশটা ভালো অর্জন একটা খারাপ কাজের জন্য ম্লান হয়ে যেতে পারে।’

সব সেক্টরে শুদ্ধি অভিযান চলবে: শেখ হাসিনা নিজের দলের মধ্যে যে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে তা সব রাজণৈতিক দল ও সেক্টরে চালানো হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। সৎ সাহস আছে, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রমাণ করেছেন নিজের দল থেকে শুদ্ধি অভিযোনের সূচনা করেছেন। কেউ ছাড় পাবে না। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দল বড় বড় কথা বলছেন। খোঁজ নেয়া হচ্ছে। কারা দুর্নীতি করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে, খোঁজ নেয়া হবে। প্রশাসনে কারা দুর্নীতিবাজ। সব সেক্টরে খারাপ লোকদের খুঁজে বের করা হবে।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর যে সুনাম, অর্জন, পরিশ্রম, তার যে ত্যাগ, বার বার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। এখানো তাকে বুলেট পেছনে তাড়া করে ফেরে। পিতা বঙ্গবন্ধুর মতো তিনিও আছেন এক ঝুকিপূর্ণ পথচলায়। আসুন শেখ হাসিনার কর্মীরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, সততা নিয়ে, সাহস নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পতাকা হাতে এগিয়ে যাই, কোনো শক্তি আওয়ামী লীগের অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবে না।’

এর আগে ১১টার দিকে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেছেন সংগঠনের মহানগর দক্ষিণের সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাস। সম্মেলন সঞ্চালনা করছেন সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান টিটু।

প্রায় ১৩ বছর এর মহানগরের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে যেখানে নেতাকর্মীরা কর্মীবান্ধব ও সৎ নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগ দক্ষিণের সম্মেলনের একদিন পর মঙ্গলবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হবে সংগঠনটির উত্তর শাখার সম্মেলন।

২০০৬ সালের ৩১ মে ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ঢাকা মহানগরকে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করে দুটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। উত্তরের সভাপতি নির্বাচিত হন মোবাশ্বের চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হন ফরিদুর রহমান খান ইরান। দক্ষিণের সভাপতি নির্বাচিত হন দেবাশীষ বিশ্বাস। সাধারণ সম্পাদক হন আরিফুর রহমান টিটু।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *