ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্ম, উত্থান, পতন এবং বর্তমানের গল্প

Uncategorized আন্তর্জাতিক রাজনীতি

!!  মূলত ১৮১৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাঠামোর ভেঙে পড়ে। কিন্তু পুরোপুরি বিলীন হয়ে যায় ১৮৭৪ সালে। এর প্রায় ১৩৫ বছর পর ২০১০ সালের আগস্টে আবারো ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সচল হয়েছে। তবে এক ভারতীয় ব্যবসায়ীর হাত ধরে। তার নাম সঞ্জীব মোহতা। মূলত পূর্বের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে এই কোম্পানির নাম ছাড়া আর কোনো কিছুতেই মিল নেই।৪৮ বছর বয়সী ভারতীয় ব্যবসায়ী সঞ্জীব মেহতা ২০০৫ সালে স্বল্প মূল্যে ইস্ট কোম্পানির পেটেন্ট ক্রয় করেন। এর পাঁচ বছর তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ভোগ্য পণ্যের ব্র্যান্ডে রূপান্তরিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি লন্ডনে বিলাসবহুল এক খাবারের দোকান চালু করেছেন। মাত্র ৩৫ জন কর্মীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এ প্রতিষ্ঠানে জনাব মেহতার বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১২ মিলিয়ন পাউন্ড  !!

আজকের দেশ ডেস্ক :  ইতিহাসের জ্ঞানের খুব বেশি প্রয়োজন নেই, উপমহাদেশের মানুষের কাছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এমনিই অত্যন্ত চেনা একটি নাম। বাণিজ্যের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রবেশ করে কয়েক শতাব্দী শাসন ও শোষণের দ্বারা পুরো উপমহাদেশ কবজা করে রাখবার ইতিহাসই এই নামটিকে এনে দিয়েছে চিরস্থায়ী পরিচিতিতি।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বলা হয় পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং প্রথম কর্পোরেশন কোম্পানি। শুরুতে এর নাম ছিল ইংলিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৬০০-১৭০৮ পরবর্তীতে এর নাম বদলে করা হয় অনারেবল কোম্পানি অব মার্চেন্টস অব লন্ডন ট্রেডিং ইনটু দ্য ইস্ট ইন্ডিজ অথবা ইউনাইটেড কোম্পানি অব মার্চেন্টস অব ইংল্যান্ড ট্রেডিং টু দ্য ইস্ট ইন্ডিজ ১৭৮০- ১৮৭৩  তবে উপমহাদেশে সেটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নামেই অধিক পরিচিত ছিল।


বিজ্ঞাপন

পূর্বে ইউরোপের মানুষের কাছে ভারতীয় উপমহাদেশ ইস্ট ইন্ডিয়া  নামে পরিচিত ছিল। সেই সময় ভারতীয় উপমহাদেশ ছিল মশলা, কাপড় এবং দামি রত্নের জন্য বিখ্যাত এক স্থান। এসব উপকরণ ইউরোপে বেশ চড়া দামে বিক্রি হতো। কিন্তু সমুদ্রে শক্তিশালী নৌবাহিনী না থাকার দরুণ ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশে আসতে ব্যর্থ হয়।

সেই সময়ে স্পেন এবং পর্তুগাল ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে মশলা ও কাপড় নিয়ে পূর্বের দূরবর্তী দেশ সমূহে বিক্রি করত। কিন্তু ব্রিটিশ বণিকরা উপমহাদেশে আসার জন্য মরিয়া হয়ে ছিলেন। অবশেষে ১৫৮৮ সালে ব্রিটিশরা পথের দিশা পায়৷ স্প্যানিশদের হারিয়ে তাদের নৌবহরের দখলে নেয় তারা। এই নৌবহর ব্রিটিশদের ভারতের আসার পথ তৈরি করে দেয়। এবং সেই সাথে তাদের নৌশক্তিকে বহুগুণ বেড়ে যায়।

১৬০০ সালের ৩১ জুলাই, স্যার থমাস স্মাইথের নেতৃত্বে লন্ডনের একদল বণিক রাণী প্রথম এলিজাবেথের কাছে এক আর্জি নিয়ে হাজির হন৷ তারা রাণীর কাছে পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবসা করার জন্য রাণীর সম্মতি ও রাজসনদ প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন। রাণী প্রথম এলিজাবেথ তাদের সম্মতি দেন। পরবর্তীতে ৭০ হাজার পাউন্ড পুঁজি নিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির যাত্রা শুরু হয়।

রাণী এলিজাবেথ যখন লন্ডনের বণিকদের দেওয়া অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করেন, তখন ভারতের শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাট আকবর। আকবরের অধীনে তখন প্রায় সাত লক্ষ ৫০ হাজার বর্গ মাইলের বিশাল এক দেশ।

আকবরের শাসনামলে মুঘল সাম্রাজ্যের শক্তি ও সামর্থ্য দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছিল। সেই সময়ে মুঘল সম্রাটের যে পরিমাণ ধনসম্পদ ছিল, তার কাছে পুরো ইউরোপের সম্পদ বলতে গেলে নস্যি! বহু মূল্যবান রত্নের পাশাপাশি ভারত ছিল প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। যার ভাণ্ডারকে মনে করা হতো  অশেষ।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতিনিধি দল সর্বপ্রথম ১৬১৩ সালে মুঘল রাজদরবারে ব্যবসা করার জন্য অনুমতি দেওয়ার জন্য প্রার্থনা করেন। তখন মুঘল সাম্রাজ্যের অধিপতি ছিলেন সম্রাট জাহাঙ্গীর।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্যবসায়িক চিন্তাভাবনা ছিল বাণিজ্য কুঠি বা কারখানা ভিত্তিক। সম্রাট জাহাঙ্গীরের কাছে তারা কুঠি নির্মাণ করার অনুমতিই চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে সম্রাট জাহাঙ্গীরের অনুমতিতে ইস্ট কোম্পানি অধুনা গুজরাটের সুরাটে তাদের প্রথম বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করেন।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শুরুতে পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে মশলার ব্যবসায় প্রভাব তৈরি করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সেখানে গিয়ে দেখেন তাদের আগেই সেসব ডাচদের দখলে চলে গেছে৷ ডাচদের শক্ত ভীতের কাছে টিকতে না পেরে তারা পুরোপুরি ভারতের দিকে মনোনিবেশ করে।

সম্রাট জাহাঙ্গীরের অনুমতির পর তারা পূর্ব ভারতে এবং পশ্চিম ভারতের সমুদ্রের উপকূলে ছোট ছোট কুঠি নির্মাণ করতে শুরু করে কোম্পানির বণিকদল। ১৬২৩ সালে আমবায়না গনহত্যার  পর ডাচরা ভারত থেকে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিনিধি প্রত্যাহার করে নেয়। উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়ায় ডাচ ইস্ট কোম্পানি কর্তৃক ব্রিটিশ, জাপানিজ ও পর্তুগিজ ব্যবসায়ীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘটনাকে আমবয়না গণহত্যা বলা হয়।

ফলে ভারতে ব্রিটিশদের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল পর্তুগিজরা। তাদেরকে হারিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি  ভারতের তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে।

শুরুতে তারা মশলা নিয়ে ব্যবসা করলেও ধীরে ধীরে ক্যালিকো (সাদা সুতি কাপড়), রেশমী কাপড়, নীল, শোরা বা কার্বনেট অব পটাশ এবং চা নিয়ে ব্যবসা করা শুরু করে। ধীরে ধীরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্যবসার বিস্তৃতি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া এবং পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী দেশসমূহ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

ব্যবসায় লাভ করার সাথে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আকার ও প্রভাব বাড়তে থাকে। সপ্তদশ এবং অষ্টাদশ শতকে ব্রিটেনের অর্থনীতির বড় এক অংশ ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আয়। সেই সাথে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি লন্ডন, তথা ব্রিটেনের সবচেয়ে প্রভাবশালী কোম্পানিতে রূপ নেয়।

কোম্পানি থেকে শাসক

শুরুতে মুঘল সাম্রাজ্যে ইস্ট ইন্ডিয়া ছিল শুধুমাত্র একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু অষ্টাদশ শতকে ব্রিটিশরা ভারতের রাজনীতিতে প্রভাব খাটানো শুরু করে।

রাণী এলিজাবেথ শুরুতেই কোম্পানিকে তাদের যেকোনো প্রয়োজনে সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এছাড়া মুঘল সাম্রাজ্যের শক্তি কমে যাওয়ায় দিল্লি থেকে দূরবর্তী রাজ্যগুলোতে কেন্দ্রের শাসন দুর্বল হয়ে পড়ে। আর এর সুবিধা নিয়ে ব্রিটিশরা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবসা জোরদার করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।

এদিকে ইউরোপের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো ভারতে তাদের উপস্থিতি বাড়াতে শুরু করে। বিশেষ করে ব্রিটেনের জাতীয় শত্রু ফ্রান্সের ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ভাবিয়ে তোলে। ফলে তখন তারা ভারতের রাজনীতি দখলের পরিকল্পনা আঁকতে শুরু করে।

শুরুতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এক দক্ষ সেনাবাহিনী গড়ে তোলে৷ পাশাপাশি ভারতের উপকূলে তাদের অবস্থান ছিল শক্তিশালী। এছাড়া যেকোনো প্রয়োজনে তাদের ডাকে   ব্রিটিশ নৌবাহীনি সাড়া দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। সামরিক দিক দিয়ে এগিয়ে থাকার কারণে ভারতের বিভিন্ন যুদ্ধে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ে পরিণত হয়।

১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ এবং ১৭৬৪ সালের বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের পর কোম্পানি বাংলার কর সংগ্রহের ক্ষমতালাভ করে। ভারতের রাজনীতির দখল নেওয়ার জন্য বাংলা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পুরো ভারতে প্রভাব তৈরির জন্য বাংলাই কেবল যথেষ্ট ছিল না।

এ কারণে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রথমে দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করে। এরপর পশ্চিম ভারতের মারাঠা এবং মহীশূরের রাজা টিপু সুলতানকে হারানোর পর পুরো ভারতই কার্যত তাদের অধীনে চলে যায়৷ মুঘল সম্রাটরা তখন পুতুল শাসকে পরিণত হয়। ১৮১৮ সালের হিসেব অনুসারে ভারতের দুই-তৃতীয়াংশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দখলে ছিল।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পতনের কারণ

বাংলায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম বছরের শাসনই কুখ্যাতি অর্জন করে। কোম্পানির দ্বৈত নীতি এবং কোম্পানির কর্মকর্তা কর্মচারীদের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে বাংলায় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়।

এছাড়া ভারতের বিশাল জনগোষ্ঠী, বাস্তবধর্মী সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংগঠনের কারণে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার সাম্রাজ্যবাদী ‘টেরা নালিস’ বা ‘শূন্য ভূমির’ নীতি পুরোপুরি কার্যকর করতে পারেনি। যার ফলে তারা কানাডা, অস্ট্রেলিয়া কিংবা নিউজিল্যান্ডের মতো ভারতে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।

ভারতে যখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়, তখন ব্রিটিশ সরকার তাদের হাত থেকে ক্ষমতা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে। এর জন্য ১৭৭৩ সালে রেগুলেটিং অ্যাক্ট এবং ১৭৮৪ সালে উইলিয়াম পিটের ইন্ডিয়া অ্যাক্টের মাধ্যমে কোম্পানির ক্ষমতা ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাতে নেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ ছিল।

একদিকে কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়ার দরুণ এবং অন্যদিকে কর্মচারীদের দুর্নীতির কারণে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার জৌলুস হারাতে থাকে। তবে গভর্নর হিসেবে  লর্ড –  কর্নোওয়লিস আসার পর তার বেশ কিছু পদক্ষেপ কোম্পানির দুর্নীতি কমাতে সাহায্য করে। আবার কোম্পানির আয় রোজগার বাড়তে থাকে।

এই সময়টিতে আবার কোম্পানি ব্যবসার পাশাপাশি ভারতের সমাজ সংস্কারের দিকেও নজর দেয়। ভারতীয়দের জন্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়।

এদিকে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ নাগাদ ভারতের অর্থনীতি বেশ নাজুক হয়ে পড়ে। কৃষির উন্নয়নের জন্য কোনো বিনিয়োগ না করে কোম্পানি ভূমি কর বাড়াতে থাকে। যার ফলে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে অসন্তোষ বাড়তে থাকে। একই সাথে কৃষির অবস্থা নাজুক হওয়ায় কোম্পানির আয়ও কমতে থাকে। কিন্তু কোম্পানি পরিচালনা করার জন্য তাদের বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হতো। যা মেটাতে গিয়ে কোম্পানির লাভের পরিমাণ একেবারেই তলানির দিকে যেতে থাকে।

ভারতীয় উপমহাদেশের জনগণ শুরু থেকেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকে মোটাদাগে বড় কোনো প্রতিবাদ ছাড়াই মেনে নিয়েছিল। কিন্তু কোম্পানি এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের ওপর একের পর এক অন্যায় নীতির বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। এক সময় কোম্পানির শাসনের প্রতি অসন্তোষ বাড়তে বাড়তে আগুনে রূপ নেয়। যার ফলস্বরূপ ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য সিপাহী বিদ্রোহ সফল হয়নি। কিন্তু এই ঘটনা ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটায়। ১৮৫৮ সালে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ইন্ডিয়া অ্যাক্ট পাশ হয়।এই আইনের মাধ্যমে ভারতের শাসনভার সরাসরি রাণীর হাতে চলে যায়। ১৮৫৮ সালে আইন পাশ হলেও ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিদায় ঘটে ১৮৭৪ সালে। এরপর তল্পিতল্পাসহ তারা চীনের দিকে চলে যায়।চীনের সাথে তাদের মূল ব্যবসা ছিল আফিমের। পূর্বে তারা ভারতে আফিম উৎপাদন করে চীনে রপ্তানি করত। তার বিনিময়ে চীন থেকে অন্যান্য পণ্য আমদানি করত। ভারতে ইস্ট কোম্পানি অবসান ঘটলেও তাদের প্রয়োগকৃত নীতির চর্চা এখন বিশ্বজুড়ে।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বর্তমান অবস্থ

মূলত ১৮১৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাঠামোর ভেঙে পড়ে। কিন্তু পুরোপুরি বিলীন হয়ে যায় ১৮৭৪ সালে। এর প্রায় ১৩৫ বছর পর ২০১০ সালের আগস্টে আবারো ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সচল হয়েছে। তবে এক ভারতীয় ব্যবসায়ীর হাত ধরে। তার নাম সঞ্জীব মোহতা। মূলত পূর্বের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে এই কোম্পানির নাম ছাড়া আর কোনো কিছুতেই মিল নেই।৪৮ বছর বয়সী ভারতীয় ব্যবসায়ী সঞ্জীব মেহতা ২০০৫ সালে স্বল্প মূল্যে ইস্ট কোম্পানির পেটেন্ট ক্রয় করেন। এর পাঁচ বছর তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ভোগ্য পণ্যের ব্র্যান্ডে রূপান্তরিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি লন্ডনে বিলাসবহুল এক খাবারের দোকান চালু করেছেন। মাত্র ৩৫ জন কর্মীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এ প্রতিষ্ঠানে জনাব মেহতার বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১২ মিলিয়ন পাউন্ড।

(তথ্য সূত্র : রোর বাংলার ‘ইতিহাস’) 


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *