কারো লাঠিয়াল না কি রাজনৈতিক দল হবে তা বিএনপিরই সিদ্ধান্ত – তথ্যমন্ত্রী

Uncategorized রাজনীতি


নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপিকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে তারা কি সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে বসে থাকা কারো লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহৃত হবে, না কি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকবে।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, কোনো গণমানুষের সংগঠন যদি ক্রমাগতভাবে নির্বাচন বিমুখ থাকে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, সেই সংগঠন আর গণমানুষের সংগঠন থাকে না, কর্মীনির্ভর স্বার্থরক্ষার সংগঠনে দাঁড়ায়। আসলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন চান তাদের স্বার্থরক্ষার জন্য বিএনপি একটা লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে থাক। সে কারণেই তিনি বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দিতে চান না।’

গতকাল রোববার ৩০ এপ্রিল দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকরা আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এ কথা বলেন। ঈদের পরে বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা প্রসঙ্গে মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির এ ধরণের বাগাড়ম্বর ১৪ বছর ধরে শুনে আসছি। মানুষের কাছেও এগুলো হাস্যকর কৌতুক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপির এ ধরণের হুমকি-ধমকি তাদের কর্মীরাও বিশ্বাস করে না, আস্থাও রাখে না। গত বছর ১০ ডিসেম্বরের পর বিএনপির ভেতরে আলোচনা হচ্ছে, আন্দোলন এভাবে মাঠে মারা গেলো কেন। মাঠে মারা যাওয়া আন্দোলনকে তারা আবার জীবিত করতে পারবে না।’

বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিশ্বাস করে না’ এ বক্তব্য খন্ডন করে সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় গেছে। আমরা জনগণের শক্তিতে, জনগণের রায়ে বিশ্বাস করি। বিএনপি বরং নির্বাচনে বিশ্বাস করে না, সে জন্য তারা নির্বাচন বর্জন করছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পর্যন্ত বর্জন করেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছে, প্রতিহত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। ২০১৮ সালেও তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যেই অংশগ্রহণ করেছিলো। বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না, সেটি তাদেরই সিদ্ধান্তের ব্যাপার।’

বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপির সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাদের পরিকল্পনার অংশ হচ্ছে খালেদা জিয়াকে অসুস্থ দেখানো। খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন। কিছুদিন আগে বিএনপির নেতারা বলছিলো যে, খালেদা জিয়াকে যদি বিদেশ না নেওয়া হয় তাহলে তার জীবন শঙ্কা আছে। সেটি বলার মধ্যেই আমরা দেখতে পেলাম, খালেদা জিয়া বাংলাদেশের হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েই ভালো হয়ে চলে গেছেন এবং বলেছেন তিনি খুব ভালো আছেন। বিএনপিরই আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে খালেদা জিয়াকে অসুস্থ বানিয়ে রাখা, অসুস্থ দেখানো, রাজনৈতিক ফায়দা লাভের উদ্দেশ্যে বিএনপি সেটি করে আসছে।’

!! তথ্যমন্ত্রীর সাথে বাচসাস কার্যনির্বাহী কমিটির সাক্ষাৎ !!

সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা সাক্ষাৎ করেন। তারা বিএফডিসিতে বাচসাসের জন্য একটি কক্ষ বরাদ্দ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধিন বিভিন্ন কমিটিতে এবং বিদেশ সফরে তাদের প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করার দাবি সম্বলিত পত্র মন্ত্রীকে হস্তান্তর করেন। মন্ত্রী চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে টিকে থাকা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির অবদান ও ধারাবাহিক বাচসাস চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান ব্যবস্থার প্রশংসা করেন। তাদের উত্থাপিত বিষয়গুলোও যাচাই ও বিবেচনার আশ্বাস দেন তিনি।

এ সময় চলচ্চিত্র শিল্পের অগ্রগতি নিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের জন্য সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারে এক হাজার কোটি টাকার সহজ ঋণ তহবিল গঠন করেছেন। চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। এফডিসিতে নতুন ভবন নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। সেখানে ৪টি শুটিং ফ্লোর থাকবে। সেখানে একটা সিনেমা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নির্মাণ করা যাবে। এছাড়া গাজীপুরে বঙ্গবন্ধুর ফিল্ম সিটি হচ্ছে, সেটি পূর্ণাঙ্গ হলে সেখানেও সিনেমা নির্মাণ করা যাবে।’

আসন্ন কান চলচ্চিত্র উৎসবে দেশের অংশগ্রহণ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সিনেমাকে বিশ্ব অঙ্গণে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যেই আমরা এবার প্রথম কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের স্টল নিয়েছি। সেখানে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব, দ্য মেকিং অভ্ আ নেশন’ প্রদর্শনের সম্ভাবনা আছে।’

বাচসাস সভাপতি রাজু আলীম, সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, সহ-সভাপতি অঞ্জন রহমান ও রাশেদ রাইন, সহ-সাধারণ সম্পাদক রাহাত সাইফুল, অর্থ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আলম মিলন, সমাজকল্যাণ ও মহিলা সম্পাদক আনজুমান আরা শিল্পী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু হুরায়রা মুরাদ, নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মাঈনুল হক ভূঁইয়া, আনিসুল হক রাশেদ, রুহুল সাখাওয়াত প্রমুখ বৈঠকে অংশ নেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *