গোপালগঞ্জে ধর্ষণ মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকি

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত খুলনা সারাদেশ

ধর্ষক গোলাম মোস্তফা ও প্রভাব বিস্তার করা দুই ভাইয়ের ছবি।


বিজ্ঞাপন

 

মো : সাইফুর রশিদ চৌধুরী :  গোপালগঞ্জে আলোচিত কলেজ শিক্ষক গোলাম মোস্তফা কর্তৃক ছাত্রী ধর্ষণ মামলার বাদীকে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ সহ প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।


বিজ্ঞাপন

এবিষয়ে ধর্ষিতার মা ফজিলাতুন্নেসা বেগম নিজেদের নিরাপত্তা ও হুমকি দাতাদের বিচার চেয়ে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী ফজিলাতুন্নেসার সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি গোলাম মোস্তফা (জিএম স্যার) গত ২১ মে অস্থায়ী জামিনে বের হয়।

জামিন পাওয়ার কয়েকদিন পর আসামি গোলাম মোস্তফা তার আপন দুই ভাই মফিজুল ইসলাম (সহকারী তৌশিলদার) উলপুর ও বেথুরি ইউনিয়ন পরিষদের (সদস্য) ইমদাদুল হকসহ ভাড়াকরা মাস্তান নিয়ে ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রীর মা ও ধর্ষণ মামলার বাদী ফজিলাতুন্নেসা বেগমের মিয়াপাড়ার ভাড়া বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করছে।

পাশাপাশি তাদের কোটালীপাড়ার গ্ৰামের বাড়িতে গিয়েও ধর্ষিতা ওই ছাত্রীর নামে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে অপপ্রচার চালিয়েছে।এছাড়াও ভাড়াকরা মাস্তান দিয়ে তুলে নিয়ে পুনরায় ধর্ষণ করানোর ভয় দেখানো হচ্ছে। পাশাপাশি বড় অংকের টাকার বিনিময়ে মেডিকেল রিপোর্ট ঘুরিয়ে ফেলানোর কথাও প্রচার করা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগে ধর্ষিতা ছাত্রীর মা আরো জানান, আসামি পক্ষের লোকজনের প্রভাব বিস্তারের কারনে তাদের পরিবারের সদস্যরা স্বাধীন ভাবে চলাফেরা ও মামলা পরিচালনা করতে পারছেন না।

এবিষয়ে অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফাসহ তার আপন দুই ভাই মফিজুল ইসলাম (সহকারী তৌশিলদার) ও ইমদাদুল হক (ইউপি সদস্য) তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ধর্ষণ মামলাটি আপস মিমাংসার জন্য ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে ছিলাম। কাউকে কোন হুমকি দেয়নি।

পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ধর্ষণ মামলার বাদীকে হুমকি দেওয়ার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে, সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ মে (রবিবার) দুপুরে সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা (জিএম) স্যার একই কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে খাতা দেখার নাম করে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সামনের নিজ মালিকানাধীন বাড়ি (জিএম কুঠির) এর নীচ তলায় ডেকে নিয়ে জোর করে ধর্ষণ করেন। পরে ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থী তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়।

এরপর সোমবার (৮ মে) ওই শিক্ষার্থীর মা ফজিলাতুন্নেসা বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর- ১৩, তারিখ-৮/০৫/২৩। এরপর গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ ওইদিন সন্ধ্যায় অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করে। মেডিকেল পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষক গোলাম মোস্তফাকে মঙ্গলবার (৯মে) আদালতে মাধ্যমে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *