নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ সুষ্ঠুভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে বলেই ভোর হতে মুষলধারে বৃষ্টির পরেও জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে মুসল্লিরা নির্বিঘ্নে ঈদের জামাত আদায় করতে পেরেছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
এছাড়াও প্রথম দিনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হবে বলেও ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ সময় জানান।
বৃহস্পতিবার ২৯ জুন, সকালে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত পরবর্তী গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ মন্তব্য করেন।
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “এই জাতীয় ঈদগাহ সুষ্ঠুভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। সেজন্য ভোর হচ্ছে তুমুল বৃষ্টি, মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ার পরেও (ঈদের জামাত আদায়ে) কোনোরকম কোনো অসুবিধা হয়নি। সকল মুসল্লি অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরেছে। সেভাবেই আমরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি এবং আল্লাহর রহমতে আজকে ঈদের জামাত সম্পন্ন হয়েছে।”
ভবিষ্যতেও প্রতিকূল আবহাওয়া কথা মাথায় রেখে ঈদের জামাতের প্রস্তুতি রাখা হবে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “এই প্রতিকূল আবহাওয়ায় আমরা সুষ্ঠু পরিবেশ স্বার্থে সক্ষম হয়েছি। বৃষ্টির কারণে অনেকে সমবেত হতে পারেননি। তারপরও যারা এসেছেন তাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা, অভিনন্দন। ভবিষ্যতেও আমরা এভাবেই প্রস্তুতি রাখব, যাতে মুষলধারে বৃষ্টি হলেও এই ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে ইনশাল্লাহ কোনো অসুবিধা না হয়।”
গতবারের চাইতে এবার বর্জ্য অপসারণে আরও বেশি সুফল দেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “কোবরানীর ঈদ তথা ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে কোবরানীর পশুর বর্জ্য অপসারণ নিয়ে আমাদের দুই সিটির ব্যাপক কর্মযজ্ঞ থাকে। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আমাদের প্রায় সাড়ে তিনশর ওপর যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত আছে। বিভিন্ন বহির্বিভাগ থেকেও গাড়ি এবং যান-যন্ত্রপাতি এনেছি।
প্রায় ১০ হাজার জনবল নিয়োজিত থাকবে। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম আরম্ভ হয়েছে। আমরা আশাবাদী গতবারের ন্যায় এবারও ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সব বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হবো। গতবারও যেভাবে সফল হয়েছি ইনশাআল্লাহ এবারও নির্ধারিত সমেয়ের মধ্যেই এই বর্জ্য অপসারণ করতে পারব, ঢাকাবাসীকে আরও বেশি সুফল দিতে পারব।”
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ সময় দুই দিনের মধ্যেই যেন পশু জবাইয়ের কাজ শেষ করা হয় এবং কোনোভাবেই যেন তৃতীয় দিন পর্যন্ত এটা না নেওয়া হয় সে বিষয়ে সবার কাছে অনুরোধ করেন।
এ সময় উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “বৃষ্টির মধ্যেও আসতে পেরেছি। আগে যেমন বৃষ্টির মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় আটকে যেতাম। (কিন্তু আজকে) উত্তরা থেকে আসার সময় দেখেছি, যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে রাস্তায় সে পরিমাণ জলজট হলেও পানি নেমে গেছে।”
যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা না ফেলার অনুরোধ জানিয়ে উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, “তাড়াতাড়ি বর্জ্য অপসারণ করতে এলাকাবাসীর সাহায্য দরকার। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যত্রতত্র যেন ময়লা না ফেলেন। আমরা প্রত্যেককে পলি দিয়েছি। বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দেবেন। আমাদের প্রায় ১১ হাজার শ্রমিক কাজ করছে। শ্রমিকদের সাহায্য করার অনুরোধ করছি।”
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, “কোরবানী দিয়ে অনেকেই বাড়ি চলে যাবেন। বিনয়ের সাথে অনুরোধ করছি, যেসব পাত্রে পানি জমে তা উল্টে রেখে বাড়িতে যাবেন। এটা সবার জন্য সহায়ক হবে। অবশ্যই ছাদে যে পাত্র আছে — যাতে বৃষ্টির পানি জমতে পারে — তা উল্টে যাবেন।
আমাদের সব কর্মকর্তা মাঠে থাকবে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। আপনারা সহযোগীতা চাইলে আমরা দ্রুত বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নিবো।”
প্রধান ঈদ জামাতে প্রধান বিচারপতি, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, ঢাদসিক মেয়রের দুই সন্তান শেখ ফজলে নাওয়াল ও শেখ ফজলে নাশওয়ান অংশ নেন।
প্রধান ঈদ জামাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতিসহ উপস্থিত সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।