১২ কেজি গাঁজা সহ গ্রেফতার কৃত ৩ মাদক ব্যাবসায়ী।
নিজস্ব প্রতিবেদক : মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদক বিরোধী অভিযানে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে মাদক ব্যাবসায়ীরা, তারা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের চোখে ধুলো দিয়ে নিজেদের আড়াল করতে রাজধানী সহ সারা দেশে নতুন নামে গাঁজা বিক্রি করছে মাদক ব্যাবসায়ীরা।
সম্প্রতি রাজধানীর নিকেতন-গুলশানের পাইকারি গাঁজা ব্যবসায়ী আতাউর রহমান (৩০) দুই সহযোগীকে ১২ কেজি গাঁজা ও মাদক বিক্রির লাখ টাকা উদ্ধারকালে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য নিশ্চিত হয়েছেন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) ‘মাদকাসক্তিমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে সংঘবদ্ধ মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ মাসুদ হোসেন এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে কোতয়ালী সার্কেলের পরিদর্শক মো: জাহিদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয়ের কোতয়ালী সার্কেলের একটি চৌকস টিম মঙ্গলবার ১ আগস্ট, মধ্যরাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগরীর গুলশান ও বাড্ডা থানা এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় ১২ কেজি গাঁজা ও মাদক বিক্রির লক্ষ টাকাসহ নিকেতন-গুলশানের পাইকারি গাঁজা ব্যবসায়ী আতাউর রহমান (৩০) কে দুই সহযোগী কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল (২৯) এবং মোঃ সফিকুল ইসলাম (২৯)সহ গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের নাম ও ঠিকানা যথাক্রমে : আতাউর রহমান (৩০), পিতাঃ মশিয়র রহমান, মাতাঃ মোছাঃ তহচিনা বেগম, কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল (২৯), পিতাঃ মোঃ আইবুল হক, মাতাঃ কুলসুম বেগম, উভয়ের বর্তমান ঠিকানাঃ বাড়ী নং- ৬৯ (চিলেকোঠা), রোড নং-৮, ব্লক-ডি, নিকেতন, থানা- গুলশান, ঢাকা। স্থায়ী ঠিকানাঃ গ্রাম- ঘটবর, ডাকঘর- টুনিরহাট, থানা- পঞ্চগড় সদর, জেলা- পঞ্চগড়। মোঃ সফিকুল ইসলাম(২৯), পিতাঃ মোঃ পজির উদ্দিন, মাতাঃ মোছাঃ সাজেদা বেগম, বর্তমান ঠিকানাঃ বাড়ী নং-ট/২৩৩ (ভুতের গলি), দক্ষিণ বাড্ডা, থানা- বাড্ডা,ডিএমপি, ঢাকা, স্থায়ী ঠিকানাঃ গ্রাম- স্কুলপাড়া, ৮নং বড়বাড়ি, থানা- বালিয়াডাঙ্গী, জেলা- ঠাকুরগাঁও।
যেভাবে অভিযান পরিচালনা করা হয় : বিভিন্ন অনলাইন ও ফেইসবুকের মাধ্যমে জানা যায়, ঢাকা মহানগরীর অভিজাত এলাকা বলে পরিচিত গুলশান-নিকেতন ও বসুন্ধরা এলাকায় গাঁজার একটি নতুন ধরন দেশাল নামে বিক্রি হচ্ছে এবং একটি চক্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে তা বাজারজাত করছে। এর মূল উৎপাটনে গোপন সংবাদদাতাদের তথ্যের ভিত্তিতে আজ মধ্যরাতে গুলশান থানাধীন নিকেতনস্থ ব্লক-ডি, রোড নং-৮ এর ৬৯ নং বাড়ীর ৬ষ্ঠ তলার চিলেকোঠার একটি ঘরে তল্লাশি চালিয়ে ৭ কেজি গাঁজা, ১ কেজি পরিমাণ মোট ৫০টি গাঁজার কাগজের পোটলা, বিভিন্ন মূল্যমানের মোট ১,০০,৭০০ (একলক্ষ সাতশত) টাকা, ০৩টি মোবাইল সেট এবং ০২টি ওয়েট মেশিন উদ্ধার করে এবং নিকেতন-গুলশানের পাইকারি দেশাল ব্যবসায়ী আতাউর রহমান (৩০)কে তাঁর সহযোগী কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল (২৯)সহ গ্রেপ্তার করা হয়। আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরে বাড্ডা থানাধীন দক্ষিণ বাড্ডা ভুতের গলি ট/২৩৩ নং সেমিপাকা টিনসেড বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে আরো ০৪কেজি গাঁজা এবং ১টি মোবাইল সেট জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মাদক ব্যাবসায়ীর কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে যা জানা গেছেঃ গ্রেফতারকৃত আতাউর রহমান (৩০) জানান, রাজধানীর অভিজাত এলাকায় গাঁজা বিক্রির কোন স্পট না থাকলেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে গাঁজা পৌঁছে দিতো তারা। কালাইয়া, কালা ভুনা, মোহিনী ইত্যাদি বিভিন্ন নামে এই গাঁজা ক্রেতাদের নিকট পৌঁছে দেয় বলে জানায়। আসামী আতাউর রহমান জানায়, এর মধ্যে দেশাল ও এম্পুল সবচেয়ে জনপ্রিয় যার প্রতি ২৫ গ্রামের মূল্য ৪৫০০-৫৫০০ টাকা। জব্দকৃত গাঁজার বাজারমূল্য প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে জব্দকৃত গাঁজা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
সর্বশেষ অবস্থাঃ গ্রেপ্তারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) এর সংশ্লিষ্ট ধারায় গুলশান থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের অন্যান্যদের আটক করতে অভিযান চলমান আছে।
অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তার বক্তব্য : মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ মাসুদ হোসেন, ঢাকা মেট্রোঃ (দক্ষিণ) কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুব্রত সরকার শুভ, কোতয়ালী সার্কেলের পরিদর্শক মো: জাহিদুল ইসলাম আজকের দেশ ডটকম কে জানান, জাতীয় ও জনস্বার্থে দেশের যুব সমাজ কে মাদকের ভয়াল ছোবল থেকে রক্ষা করতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো: (দক্ষিণ) কার্যলয়ের এধরণের অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।