মো:রফিকুল ইসলাম,(নড়াইল) : নড়াইলে শিক্ষকের দুর্নীতির তদন্ত প্রতিবেদন গোপন রেখে ওই শিক্ষককে নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে,নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক সুমন কুমার মন্ডলের দুর্নীতির তদন্ত প্রতিবেদন গোপন রেখেই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এ নিয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। গতকাল সেমাবার ১ জানুয়ারি, নড়াইল জেলা প্রশাসক বরাবর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উল্লেখিত অভিযোগ করা হয়।
তদন্তে সত্যতা থাকা সত্বেও রসহস্যজনক ভাবে আত্মস্বীকৃত ওই দুর্নীতিবাজ সুমন কুমার মন্ডলের দুর্নীতির তদন্ত প্রতিবেদন গোপন রেখে আগামী (৪ জানুয়ারী) একটি সাজানো প্রতিবেদন জেলা শিক্ষা অফিসার নিয়োগ বোর্ডকে দিয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করছেন,বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
জানাগেছে,নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক সুমন কুমার মন্ডলের আত্মস্বীকৃত দুর্নীতির মুচলেকা দেওয়া ওই শিক্ষকের দুর্নীতির তদন্ত করেন,জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
এ অভিযোগ সংক্রান্ত জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে তার মুঠোফোনে (০১৮১৯৬৩৩৪১৪) জানতে চাইলে তিনি জানান,“নিয়োগ অনুমোদন তো আমি দেই না,আমি একজন ডিজি’র প্রতিনিধি অনুমোদন দিয়েছি। এ বিষয়ে আমাকে আরও একজন বলেছে। কিন্তু এখানে আমার করার কিছুই নাই। আর আমি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করেছি এবং প্রতিবেদনও ওই স্কুলের (নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়) ম্যানিজিং কমিটিকে পাঠিয়েছি। এখন তারা এটা মানা না মানা তাদের বিবেচনার বিষয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়,নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এতে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক সুমন কুমার মন্ডলসহ ১২টি আবেদন জমা পড়ে। এরপর শিক্ষক সুমন কুমার মন্ডলের আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ ছাত্রদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত, ব্যবহারিকের টাকা নেওয়াসহ নানা ধরনের দুর্নীতির জন্য শেষ বারের মতো ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা প্রদান করেন।
এদিকে,প্রধান শিক্ষক পদের জন্য মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গত ২ অক্টোবর সাজানো নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ পাচ্ছেন মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর নড়াইল জেলা শিক্ষা অফিসার (মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম) নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে এ বিষয়ে তদন্ত করেন এবং মৌখিকভাবে জানান তদন্তে এর সত্যতা মিলছে। অথচ রহস্যজনক কারনে তদন্ত প্রতিবেদন গোপন রেখে আবার ও আগামী ৪ জানুয়ারী সাজানো নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে তাকে নিয়োগ ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
সচেতন মহল ও অভিবাবকদের দাবি,একজন দুর্নীতিবাজ শিক্ষক কিভাবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হয়,তাহলে ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী’রা কি শিক্ষা পাবে। ছাত্র-ছাত্রীরা মানুষের মত মানুষ হবে,না কি শিক্ষকের মত দুর্নীতিবাজ হবে। এ দুর্নীতিবাজ শিক্ষক সুমন কুমার মন্ডলকে বাদ রেখে বাকি ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে স্বচ্ছতার সাথে শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার জন্য শিক্ষা কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান সচেতন মহল।