মো:রফিকুল ইসলাম,(নড়াইল) : নড়াইল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত ও বিজয়ী প্রার্থী’র পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন। পরাজিত প্রার্থী তোফায়েল মাহমুদ তুফান অভিযোগ করে বলেন, তাকে কারচুপির মাধ্যমে হারানো হয়েছে। তিনি তার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে বিতর্কিত বিভিন্ন কেন্দ্রের ভোট যাচাইসহ পুনরায় ভোট গ্রহনের দাবি জানান।
এদিকে,বিজয়ী প্রার্থী আজিজুর রহমান ভূঁইয়া এ অভিযোগকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত অভিহিত করে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন,গত বুধবার (২২ মে) সন্ধ্যায়। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী তোফায়েল মাহমুদ তুফান নড়াইল শহরের আলাদাৎপুরে প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন,নির্বাচনের দিন বিভিন্ন কেন্দ্রে আমার এজেন্টদের বের করে দেয়া ও ভোটারদের আসতে বাধা দেয়া,একটি কেন্দ্রে অস্বাভাবিক ভোট কাস্ট,জাল ভোট প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনেন।
সে কারণে চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের সকল কেন্দ্র,আউড়িয়া ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ও দত্তপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং মাইজপাড়া ইউনিয়নের চারিখাদা স্কুল কেন্দ্রের ভোট যাচাইসহ পুনরায় গণনা করার দাবি জানান।
তিনি আরো বলেন,যেখানে নড়াইল সদর উপজেলায় মোট কাস্টিং ভোট শতকরা ৩৭.৪৯ শতাংশ,চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের শীবানন্দপুর কেন্দ্রের ভোটের শতকরা হার প্রায় ৮১ ভাগ যা উপজেলার সকল কেন্দ্রের ভোটের সাথে এ ভোটের হার অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আমি নড়াইল সদরের রিটার্নিং অফিসার বরাবর বিতর্কিত ভোট কেন্দ্র সমূহে পুনরায় ভোট গ্রহণ,ব্যালটের মুড়ি অংশ এবং ব্যালটের যাছাই-বাছাইসহ সামগ্রিক নির্বাচন পুনরায় করার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। এদিকে,বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে সদর উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী-লীগের উপদেষ্টা আজিজুর রহমান ভূঁইয়া,সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্তজা’র বাড়ির সামনে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন।
তিনি বলেন,পরাজিত প্রার্থী শীবানন্দপুর কেন্দ্রে অস্বাভাবিক ভোটের কথা বলছেন। এটা আমার নিজ কেন্দ্র। কেউ প্রমাণ করতে পারবে না এখানে কোনো ধরণের অনিয়ম হয়েছে। তাদের কোনো এজেন্টকে কোথাও বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেনি। উল্টো পরাজিত প্রার্থী তোফায়েল মাহমুদ ওই কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং আমার কর্মী-সমর্থকদের সাথে দুর্বব্যহার করেছে। শুধু তাই নয় তার লোকজন আমার সমর্থক ও কর্মীদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে হত্যা ও গ্রামছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন। এর ভিডিও ফুটেজ কর্তৃপক্ষের কাছে দেয়া আছে।
এ ছাড়া তার (পরাজিত প্রার্থী) পক্ষে একজন জনপ্রতিনিধি প্রভাব খাটিয়ে আমার কর্মী সমর্থকদের ডেকে নিয়ে নানা ধরনের উপঢৌকন প্রদান ও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন যার প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। আমি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফায়েল মাহমুদ এ ধরণের তথ্য প্রমাণহীন,মনগড়া,কাল্পনিক,অসত্য,ভিত্তিহীন অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে নড়াইল সদর উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শ্বাশতী শীল বলেন, পরাজিত প্রার্থীর অভিযোগটি পেয়েছি। নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, পরাজিত প্রার্থী শীবানন্দপুর কেন্দ্রে অস্বভাবিক ভোটের কথা বলছেন। এ কেন্দ্রটি বিজয়ী প্রার্থীর গ্রামের কেন্দ্র। এখানে আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এ কেন্দ্রসহ কোনো কেন্দ্রেই অনিয়ম হয়নি। তিনি নির্বাচনের দিন এবং ভোট গননার সময় অভিযোগ না করে একদিন পর করছেন। এখন আমার কিছু করার সুযোগ নেই। তিনি যদি মনে করেন,তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করতে পারেন,বলেও জানান।