নিজস্ব প্রতিবেদক : নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রশাসনিক ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এর নেতৃত্বে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলের ইন্দোনেশিয়া সফর, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।
জানা গেছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন এর নেতৃত্বে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল ইন্দোনেশিয়া সফর করেছেন। বাংলাদেশের নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে JICA-STIRC প্রকল্প ইন্দোনেশিয়ায় এই সফরের আয়োজন করে।
এই সফরে প্রতিনিধি দল ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং খাদ্য ব্যবসা সংক্রান্ত একটি সুসংহত একক লাইসেন্সিং ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।
প্রতিনিধি দল পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দেশীয় বাজারে কৃষি পণ্যের সম্প্রসারণ ও রপ্তানির জন্য প্রক্রিয়াাজাতকরণে সরকারের ভূমিকা, এবং বাংলাদেশের বর্তমান নিরাপদ খাদ্য খাদ্য বিষয়ক প্রশাসনিক ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করেছেন। গত সোমবার ৮ই জুলাই, প্রতিনিধি দল জাকার্তায় অবস্থিত খাদ্য ও ঔষধ কর্তৃপক্ষ, ইন্দোনেশিয়া (BPOM) এর প্রধান
কার্যালয় পরিদর্শন করেন এবং খাদ্য ও ঔষধ কর্তৃপক্ষের (BPOM) এর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দ প্রতিনিধি দলটিকে স্বাগত জানান। কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ে বোগোর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (IPB) অধ্যাপক ড. দেদি ফার্দিয়াজ নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক একক লাইসেন্সিং ব্যবস্থার ইতিহাস এবং এ সংক্রান্ত আইন ও বিধিমালা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেন। প্রতিনিধি দলটি BPOM রেফারেন্স ল্যাবরেটরি পরিদর্শন করেন এবং সেখানে পরীক্ষাগার স্থাপন এবং পরীক্ষণ পদ্ধতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়।
প্রতিনিধি দলটি গত মঙ্গলবার ৯ জুলাই, পূর্ব জাকার্তায় অবস্থিত খাদ্য ও ঔষধ কর্তৃপক্ষ, ইন্দোনেশিয়া (BPOM) এর প্রাদেশিক কার্যালয় এবং প্রাদেশিক ল্যাবরেটরি পরিদর্শন করেন। একই দিনে দলটি “PT Indofood” পরিদর্শন করেন, যা ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানি এবং ২০২৩ সালে যার বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ ৬৮.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত বুধবার ১০ জুলাই, প্রতিনিধি দল জাকার্তার ইন্দোনেশিয়া খাদ্য ব্যবসায়িদের সাথেও একটি বৈঠকে করেন।
বাংলাদেশে অনেক মন্ত্রণালয় তাদের নিজস্ব আইন অনুযায়ী নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই একই কাজ ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয় তাদের স্ব স্ব আইনে উল্লেখ থাকার কারনে বাস্তবায়ন করছে যা খাদ্য ব্যবসা পরিচালনাকে অনেক ক্ষেত্রে জটিল করেছে। ফলে জনসাধারণের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হয়ে উঠেনি।
বাংলাদেশ সরকারের এখন অধিক শক্তিশালী, সুবিন্যাস্ত ও সুগঠিত নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঐকান্তিক আলোচনা শুরু করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজন যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হওয়ার মাধ্যমে সকল জনসাধারণকে সুরক্ষিত রাখবে।
বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন বলেছেন, আমরা ইন্দোনেশিয়ার নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রশাসনিক ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছি এবং ইন্দোনেশিয়া যেভাবে আন্তঃ-সংস্থার সমন্বয়ের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রশাসনিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করছে তা দেখে আমি অভিভূত হয়েছি।
মাহবুব হোসেন আরও উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের খাদ্য শিল্পের সম্প্রসারণ এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে আমাদের বর্তমান খাদ্য বিষয়ক প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে সহজীকরণের জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং খাদ্য নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রমসমূহ সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে যাতে একই কাজ একাধিক সংস্থা করার প্রবণতা দূর হয়।
অন্যান্যদের মধ্যে, প্রাক্তন মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ ইসমাইল হোসেন এনডিসি, বিএসটিআই এর মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এর যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সচিব এবং প্রকল্প পরিচালক, STIRC প্রকল্প এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ইন্দোনেশিয়া সফরের প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন।