নিজস্ব প্রতিনিধি (কুমিল্লা) : কুমিল্লার সদর দক্ষিণের লালমাই বাজার এলাকা ফের উত্তপ্ত। চরমপন্থী কর্মকাণ্ডের জন্য পরিচিত এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক সন্ত্রাসী আব্দুল হালিমের ছেলে মো. সুমন দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থানের পর সম্প্রতি ওমান থেকে দেশে ফিরে এসেছেন। তার আগমনকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় নতুন করে আতঙ্কের ছায়া নেমে এসেছে।
সুমন একসময় এলাকায় চাঁদাবাজি, জমি দখল এবং প্রতিপক্ষকে হুমকি দেওয়ার মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে, প্রেমের ফাঁদে ফেলে তরুণীদের জীবন নষ্ট করার।
ঢাকার বাসিন্দা বৃস্টি নামের এক তরুণী জানান, সুমন তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং সুযোগ নিয়ে অর্থসহ বিভিন্ন সুবিধা হাতিয়ে নেয়। সুমনের প্রতারণা এতটাই ভয়ংকর যে, সম্পর্কের প্রতিশ্রুতি ভেঙে এখন বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এর ফলে বৃস্টি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এলাকার অন্য এক বাসিন্দা বলেন, “সুমন শুধু স্থানীয় অপরাধী নয়, তার নামে ঢাকার উত্তরা, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ছাত্র হত্যাকারীদের অর্থ সহায়তার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।” এছাড়া সুমন ফিরে আসায় লালমাই বাজার এবং আশপাশের এলাকাগুলোতে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা পর্যন্ত তার উপস্থিতিতে শঙ্কিত। তারা মনে করছেন, তার প্রভাব শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সুমনের পুনরায় পুরোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়ানোর আশঙ্কা প্রবল। তার উপস্থিতি নতুন করে সহিংসতা বা অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্রপাত ঘটাতে পারে।
এলাকাবাসী বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসলেও এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এক বাসিন্দা বলেন, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। আমাদের এলাকায় সুমনের মতো অপরাধীদের কোনো স্থান নেই।”
সুমনের বিরুদ্ধে অতীতের অপরাধের অভিযোগগুলো নতুন করে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। তারা চান, যে কোনো ধরনের অঘটন ঘটার আগেই প্রশাসন সক্রিয় হোক। আমরা সুমনের সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার। প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে জানান স্থানীয়রা।
লালমাইয়ের শান্তি ও নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা এখন সময়ের দাবি। সুমনের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এলাকায় যে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হবে, তা দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এলাকাবাসী দৃঢ়ভাবে চান, প্রশাসন দ্রুত সক্রিয় হয়ে সুমনের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিক এবং লালমাইকে অপরাধমুক্ত করুক।