বিশেষ প্রতিবেদক : শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বিসিকের সার্বিক তত্তাবধানে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রাকোট ইউনিয়নের খারসুর এলাকায় ১০০ একর জমিতে প্রথমে ১৩৮ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয় সম্বলিত ২০১৬-২০২১ মেয়াদী, পরবর্তীতে ২৬৪ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা ব্যয় সম্বলিত ২০১৬- আগষ্ট ২০২২ মেয়াদী ১ম সংশোধিত এবং সর্বশেষ ৪৪৮ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয় সম্বলিত ২০১৬-জুন ২০২৭ মেয়াদী ২য় সংশোধিত আকারে বিসিক মুদ্রন শিল্প নগরী প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়।

যার লক্ষ্য ও উদ্দ্যেশ্য হচ্ছেঃ (১) ঢাকা ও অন্যান্য শহরে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা মুদ্রন শিল্প কারখানাসমূহ একটি সুবিধাজনক পরিবেশ বান্ধব স্থানে স্থানান্তরসহ শিল্প স্থাপনে যাবতীয় সহযোগিতা প্রদান, (২) বেসরকারী শিল্পোদোক্তাদেরকে ২৯৯ টি (কম/বেশী) মুদ্রন শিল্প কারখানা স্থাপনে অবকাঠামোগত সুবিধা প্রদান। গুনগত মানসম্পন্ন মুদ্রন সামগ্রী উৎপাদনে সহায়তা প্রদান (৩) কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন, অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গতিশীল করা বা জিডিপিতে অবদান বৃদ্ধি করা।

ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে জুন ২০২৩ পর্যন্ত প্রকল্পের কাংখিত সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়নি। দাপ্তরিক কার্যাবলী
সম্পাদন শেষে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন কর্তৃক ১৬ জুলাই ২০২৩ তারিখের অধিগ্রহণ প্রস্তাব ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ
করা হয়, যাহা ১৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদন লাভ করে। নিয়োজিত প্রকল্প পরিচালক এবং কর্মচারীগণ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ এগিয়ে নেয়ার কাজটি
করেছেন।
বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর কারণে সারা বিশ্ব যখন লক-ডাউনে তখন প্রকল্প পরিচালক এবং নিয়োজিত
কর্মচারীগণ তাদের জীবন বাজি রেখে দিন রাত শ্রম দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজটি আজকের পর্যায়ে আনতে সমর্থ
হয়েছেন যা বিসিকের এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ ভাল ভাবেই অবগত আছেন।
হঠাৎ বিনা মেঘে ব্জ্রপাতের মতো খড়গ নেমে আসে এই প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি মোঃ নিজাম উদ্দিনের উপর।
স্বৈরাচারী হাসিনার অন্যতম দোসর শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং তার তৈরী চক্র তাদের
টেন্ডার বাণিজ্য নিষ্কন্টক করার উদ্দ্যেশ্যে এবং প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা লাভের আশায় প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তনের ব্যবস্থা করেন। প্রথমে জাফর বায়েজিদ নামক একজনকে প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব প্রদানের আদেশ জারী করেন।
তার বিরুদ্ধে দৈনিক সংবাদ পত্রে সংবাদ প্রকাশিত হলে তাকে বাদ দিয়ে মোঃ রাকিবুল হাসান নামের একজনকে বিসিক মুদ্রন শিল্প নগরী প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসাবে নিয়োগ দান করে প্রজ্ঞাপন জারী
করা হয়।
মোঃ রাকিবুল হাসান প্রকল্প পরিচালক হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্তির লক্ষ্যে সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানাকে ৩০ লক্ষ
টাকা নগদ অর্থ প্রদান করেছেন মর্মে জনশ্রুতি আছে।
প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বভার গ্রহনের এক মাসের মাথায় মহামারী কোভিড-১৯ এর যোদ্ধাদের চাকুরীচ্যুত করেন একদিনের
নোটিশে। যা দেশের প্রচলিত শ্রম আইনের পরিপন্থী এবং অমানবিক আচরণ। এটি সুস্পষ্টভাবে প্রকল্প পরিচালক মোঃ রাকিবুল হাসানের অমানবিক একটি আচরণ।
কোভিডকালীন সময়ে সালেহ মোঃ আতিক, দীন ইসলাম গংরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ যাতায়াত করে প্রকল্পের সামগ্রিক কার্যাবলী সম্পাদন করেছেন। যার ভিতরে মানবিক মুল্যবোধের অভাব দেখা দিয়েছে তিনি প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে প্রকল্পটি যথাযথ বাস্তবায়ন করবেন কিভাবে? শুধু তাই নয় কোভিড যোদ্ধাদের চাকুরীচ্যুত করে জনপ্রতি ৩ লক্ষ টাকা নগদ আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে নিয়োগ দান করেছেন নাজমুল, নাইম এবং মিরাজ নামীয় তার এলাকার তিনজনকে।
অমানবিক আচরণের ন্যায় বিচার চেয়ে শিল্প উপদেষ্টা, শিল্প সচিব, বিসিক চেয়ারম্যান এবং বিসিকের পরিচালক প্রকল্প
বরাবরে লিখিত আবেদন দাখিল করেছেন সালেহ মোঃ আতিক এবং দীন ইসলাম নামে দুইজন চাকুরীচ্যুত কর্মচারি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিডি মোঃ রাকিবুল হাসান জানান, এগুলো ডাহা মিথ্যা কথা। আমি কোন প্রকার দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেই না।
বাধ্যতামুলক অবসরে যাওয়া সচিব জাকিয়া সুলতানাকে ৩০ লাখ টাকা ঘুস দিয়ে প্রকল্প পরিচালক পদে নিয়োগ লাভ ও কোভিড কালীন সময়ের কর্মচারিদের ছাটাই করে অর্থের বিনিময়ে নতুন কর্মচারিন নিয়োগ দান করার অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে এবং অমানবিক আচরণের বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রকল্প পরিচালক রাকিবুলের বিরুদ্ধে বিণাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী তোলা হয়েছে সুশীল সমাজ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র, জনতার পক্ষ থেকে।