নইন আবু নাঈম তালুকদার (শরণখোলা) : বাগেরহাটের শরণখোলার সন্তান শামীম হাসান ছোট বেলা থেকেই সংগীতের প্রতি ছিলো তার অদম্য আগ্রহ এবং ভালোবাসা।শামীমের জন্ম বাগেহাটের শরণখোলা উপজেলায় রায়েন্দা বাজার সদরে এক মুসলিম পরিবারে।আট ভাইবোনদের মধ্যে শামীম সবচেয়ে ছোট।শামীম সহ এই মুসলিম পরিবারের সাত ভাই বোনই সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জড়িত।

শিশু বয়সেই শামীম স্কুল পর্রযায় বিভিন্ন সংগীত প্রতিযোগীতায় সাফাল্য পেতে শুরু করেছে।অর্জন করেছে শতাধিক সংগীতের সার্টিফিকেট এবং পুরস্কার।পরবর্তিতে যখন শামীম রায়েন্দা পাইলট হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র, তখন শরণখোলা থিয়েটারে নাটকের কর্মশালার জন্য বাগেরহাট থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম মেজ দা শরণখোলায় আসেন, আমরা থিয়েটার কর্মিরা সকলে শরণখোলা প্রেসক্লাবে একত্রিত হই তখন শামীম থিয়েটারে রিহার্সেল রুমে বসে হারমোনিয়ামে মান্না দের আধুনিক গান এবং গোলাম আলীর গজল প্রাকটিস করছিলো,।
শামীমের গান শুনে নজরুল ইসলাম মেজ দা বলে এতো সুন্দর গান কে গাচ্ছে।তখন শামীমের কথা বললাম এবং শামীম কে মেজ দা ডেকে আরো গান শুনলো।মেজ দা আমাদের পরিবারের সকলকে বললো শামীম কে বাগেরহাট যে কোনো স্কুলে ভর্তী করাতে, তিনি আরো বললেন ওর মতো প্রতিভা শরণখোলা থাকলে নষ্ট হয়ে যাবে।

আমরা পারিবারিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিলাম এবং শামীম কে বাগেরহাটে টেক্সটাইল ভোকেশনালে ভর্তী করালাম।শামীম বাগেরহাট থেকে এস.এস.সি,বাগেরহাট পিসি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ইতিহাস বিভাগে অনার্স তার পরে ঢাকা কলেজ থেকে এম.এ পাস করে।

।শামীম বাগেহাট যাওয়ার পরে বাগেরহাটের সকল সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা,কলাকুশলী এবং শিল্পী ও মিউজিসিয়ানরা একদিন সন্ধায় বাগেরহাটের শহীদ শুকলাল সংগীত একাডেমিতে বসে শামীমের গান শুুনলো এবং তারা সকলে শামীমের ভুয়সী প্রশংসা করলো।তখন বাগেরহাট অংকুরের প্রতিষ্ঠাতা মীর ফজলে সাইদ ডাবলু তার অংকুরে শিল্পী হিসেবে নিয়ে নিলো ছোট্ট শিশু শামীম কে।তখন থেকেই বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন সংগীতের প্রোগ্রামে শামীম গান গাইতো নিয়মিত।এর পর বাগেরহাটের বড় বড় ওস্তাদ যেমন ওস্তাদ প্রদীপ দাস,ওস্তাদ শুনীল চক্রবর্তী,খুলনার ওস্তাদ মিলন কান্তি মল্লিক,ওস্তাদ শিশীর মজুমদার সহ আরো অনেক ওস্তাদের কাছে শামীম শাস্রীয় সংগীত,রাগ সংগীত সহ সকল প্রকার সংগীতের তালিম নিতে থাকলো।।তবে শামীম ছোট বেলা থেকেই পারিবারিক ভাবে তার সংগীতের হাতে ক্ষড়ি।শামীমের সকল ভাই বোনেরা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে কোনো না কোনো ভাবে জড়িত।
পপড়াশোনার পাশাপাশি ছোট বেলা থেকেই সংগীতের উপর প্রচন্ড ঝোক ছিলো শামীমের ।অল্প বয়সেই শামীম উপমহাদেশের বিখ্যাত সংগীত শিল্পীদের গান হারমোনিয়াম বাজিয়ে গাইতো যেমন ওস্তাদ গোলাম আলী,ওস্তাদ মেহেদী হাসান,নুসরাত ফতে আলী খান,রাহাত ফতে আলী খান, পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী,অনুপ ঝালোটা,অনুপ ঘোশাল,জগজিৎ সিং,,মান্না দে,সতিনাত,হেমন্ত মুখোপাধ্যায়,কিশোর কুমার,পঙ্কজ উদাস সহ গুনী সংগীত শিল্পীদের গান শামীমের কন্ঠে অনায়াশে উঠতো।সংগীত প্রেমী বন্ধুদের বলবো বাগেরহাটের সন্তান বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী শামীম হাসান এখন পর্যন্ত ভারত,মালয়শিয়া, দুবাই ,সুইজারল্যান্ড,জাপান,ইটালি,,ইংল্যান্ড,থাইল্যান্ড,আমেরিকা সহ আরো কয়েকটি দেশে/বিদেশের বিভিন্ন এলাকায় কনসার্ট করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশের মেগা কনসার্টেও গান করেছে শামীম।
প্রতি মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন চ্যানেলে সংগীতের লাইভ প্রোগ্রাম নিয়মিত করে আসছে।।বিভিন্ন জেলা,উপজেলা এবং বিভাগে বড়বড় কনসার্ট করছে।যারা দেশ এবং বিদেশে শামীম কে নিয়ে কনসার্ট করেছে তারাই প্রকৃত সংগীত প্রেমী।।তারা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বিদেশে শামীমকে নিয়ে কনসার্ট করেছে।।শামীম কে নিয়ে যে সকল এরেঞ্জার এবং চ্যানেল বড় বড় প্রোগ্রাম করে তাদের প্রতি বাগেরহাট বাসি এবং শামীমের পরিবার কৃতজ্ঞ।।
শামীম ২০০৭ সালে চ্যানেল আই সেরা কন্ঠ,সুর দরিয়া এপার ওপার ভারত বাংলাদেশ,,২০১২ সালে চ্যানেল নাইন পাওয়ার ভয়েজ,সহ বিটিভির আধুনিক গানের নিয়মিত শিল্পী, বাংলাদেশ বেতার খুলনার নজরুল সংগীতের নিয়মিত শিল্পী।
ভারতের কিংবদন্তি শিল্পী পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী, বাপ্পী লাহিড়ী, উষা উত্থুপ,সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, বাংলাদেশের কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন,কনক চাপা,ফাহমিদা নবী, জেমস,আইয়ুব বাচ্চু,তপন চৌধুরী, বাপ্পা মজুমদার, সাফিন আহমেদ,নকীব খান,ওস্তাদ বারী সিদ্দিকী সহ আরো সনামধন্য শিল্পীদের সাথে গান করার সুযোগ হয়েছে। সংগীত প্রেমী দর্শকরা শামীমের জন্য দোয়া করবেন।। বিশেষ প্রতিবেদন।আব-হানিফ, সাংবাদিক এবং সংগীত শিল্পী।।বাগেরহাট।।