পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়ায় স্থানীয় সাংবাদিক গোলাম রাব্বির ও তার বাবাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি’র অঙ্গ সহযোগী সংগঠন জিয়া সাইবার ফোর্সের সভাপতি ও তার ভাড়াটিয়া ক্যাডার বাহিনীর বিরুদ্ধে।

রবিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভাঙ্গুড়া স্মৃতিসৌধের সামনে এ ঘটনা ঘটে। মারপিট শেষে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়, থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক। গোলাম রাব্বি জাতীয় দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রতিনিধি এবং শ্যামল বাংলা পত্রিকার পাবনা জেলা প্রতিনিধি ও ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাবের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন।

হামলার মূল অভিযুক্ত রানা আহমেদ দুলু ভাঙ্গুড়া উপজেলা জিয়া সাইবার ফোর্সের সভাপতি ও সদর ইউনিয়ন ভবানীপুর দক্ষিণ পাড়ার খোরজান আলীর ছেলে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় রানা আহমেদ দুলু মাদক সেবি ও মাদক কারবারি সে পূর্বে ভাঙ্গুড়া পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম এর সঙ্গে বড়াল ব্রিজ রেল স্টেশনে পকেট চৌর ও ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে মাসিক চুক্তিতে চাদা নিতেন এবং ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম ও দুলু।
চাটমোহরের একটি কিশোরীকে তুলে এনে শরৎ নগর বাজার পশু হাট সংলগ্ন পৌর ছাত্রলীগের অফিসে আটকে রেখে ধর্ষণ করাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, এই দুলু জিয়া সাইবার ফোর্সের সভাপতি হওয়ার পর থেকে ভাঙ্গুড়া বড়াল ব্রীজ স্টেশান এলাকায় যাত্রীসহ সাধারণ ব্যবসায়ীরা মহা বিপদে রয়েছে।
তার অপকর্মের কথা প্রকাশ করলে তাদের কে বিভিন্নভাবে হয়রানিতে ফেলবে বলে কেউ কিছু বলে সাহস পায় না।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভাঙ্গুড়া স্মৃতিসৌধের সামনে রানা আহমেদ দুলু (৩২), তার ভাই রকিব আহমেদ (৩৫) এবং তাদের সঙ্গে থাকা আরও দুই অজ্ঞাত ব্যক্তি সাংবাদিক গোলাম রাব্বিকে একটি সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য চাপ দেন। রাব্বি রাজি না হলে তারা গালিগালাজ শুরু করেন এবং পরে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন।
এরপর সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে আবারো ঐ নেতা ১৫/২০ জন ভারাটিয়া ক্যাডার বাহিনী এসএস পাইপের রোড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ভাঙ্গুড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সাংবাদিক রাব্বির বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে আবারো সাংবাদিক গোলাম রাব্বি ও তার বাবা মো. মাসুদ রানাকে মারপিট করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন।ঘটনার পর গোলাম রাব্বি ভাঙ্গুড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং: ৪৮৩, তারিখ: ০৯/০৩/২০২৫) দায়ের করেন।
ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ ও সুশীল মহল এই ঘটনাকে মুক্ত সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখছেন। তারা দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। মারপিটের বিষয়ে ভাঙ্গুরা জিয়া সাইবার ফোর্সের সভাপতি রাণা আহমেদ দুলু এর সঙ্গে মুঠোফোন কথা বললে তিনি কোন সদত্তর দিতে পারে নাই।
পাবনা জেলা জিয়া সাইবার ফোর্সের সভাপতির মো. রুবেল শেখ বলেন, আমার সংগঠনের কোন ব্যক্ত যদি সাংবাদিককে মারধর করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।