মাগুরার আলু ডাকাত এখন ঢাকার মূর্তিমান আতংকের আরেক নাম মাফিয়া ডন  ! নিজস্ব প্রতিবেদক  : 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  : তার পুরো নাম আলী হাসান আলু, পিতা- মৃত রতন মিয়া,সাং-কাজলী মোর্তজাপুর,থানা, শ্রীপুর, জেলা,মাগুরা। বর্তমান ঠিকানা: ৯৯/৪/১ জনতা রোড,মধ্য পীরেরবাগ, মিরপুর-২,ঢাকা। তার ফ্ল্যাটের ঠিকানা: ৯৭/৫-ই মধ্য পীরেরবাগ,মিরপুর-২, ঢাকা। দুই ঠিকানায় মোট ৪ টি ফ্ল্যাট কিনেছেন।


বিজ্ঞাপন

তার গ্রামের বাড়ি মাগুরাতেও তিনতলা বিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তিনি তেমন লেখা পড়া জানেন না। ক্লাস সেভেন পর্যন্ত লেখা পড়া করেছেন। কোন চাকরি বা বৈধ ব্যবসা করেন না। ঢাকা শহরের অভিজাত এলাকায় বসবাস করেন। কিনেছেন ৪ টি ফ্ল্যাট ও ৩ খানা মাইক্রোবাস। এই বাসগুলো তিনি রেন্ট এ কার এ ভাড়া দিয়েছেন। কখনো কখনো এই সব মাইক্রোনাস সড়ক ডাকাতি, মানুষ অপহরণ ও ভুয়া ডিবি টিমের কাজে ব্যবহার করেন।

তার কোন ইনকাম সোর্স না থাকলেও ঢাকা শহরে ৪ টি ফ্ল্যাট ৩ খানা মাইক্রোবাস,এবং মাগুরা শহরের খান পাড়ায় কিনেছেন ৩ কোটি টাকার জমি। নিজের এলাকাতেও প্রচুর জমি কিনেছেন। তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে প্রচুর টাকা রয়েছে। ফ্ল্যাট চারটির ঠিকানা: ৯৯/৪/১ জনতা রোড,মধ্য পীরেরবাগ, মিরপুর-২,ঢাকা। তার ফ্ল্যাটের ঠিকানা: ৯৭/৫-ই মধ্য পীরেরবাগ,মিরপুর-২, ঢাকা। তার কোন পেশা নেই,বাসা থেকে সকাল ৬ টায় বের হয় আর ফেরে রাত ১২/১ টায়। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, তিনি এতো টাকা কোথায় পেলেন?


বিজ্ঞাপন

আলু ডাকাত নাম কেন : এ প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ৯০ এর দশকে তিনি দক্ষিণ অঞ্চলের নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী দল সর্বহারা পার্টির অস্ত্রধারী উপনেতা ছিলেন। মাগুরা ঝিনেদা,যশোর ও নড়াইল এবং ফরিদপুর অঞ্চল ছিলো তার নিয়ন্ত্রণে। তখন বিএনপি সরকারের ছায়ায় দেশে সর্বহারা পার্টির রামরাজত্ব কায়েম হয়েছিল।এ সময় তিনি তার দল নিয়ে এ সব এলাকায় ব্যপক চাঁদাবাজী, অপহরণ, মুক্তিপন আদায়, নারী ধর্ষণ,সড়ক ডাকতি ও প্রচুর মানুষ হত্যা করেন।


বিজ্ঞাপন

শুধু তাই-ই নয় তিনি মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার অস্ত্র লুটের মামলার আসামীও ছিলেন। ফরিদপুরের একটা মার্ডার কেসের রায়ে তার ফাঁসির দন্ড হয়। পরবর্তীতে আপীলে জামিন পান। দীর্ঘ দিন জেলও খেটেছেন। এ কারণেই এলাকাবাসী তাকে আলু ডাকাত নামে চেনেন।

ঢাকায় তিনি কি করেন  :  শোনা যায়,আওয়ামী লীগ আমলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এর কাছে দলধরে অস্ত্র জমা দিয়ে সাধারণ ক্ষমায় ঢাকায় চলে আসেন। এরপর মিরপুর এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে ১০০/১৫০ জনের একটি ছিনতাই, ডাকতি, মানুষ অপহরণ ও ভুয়া ডিবির টিম (বাহিনী) গঠন করেন।

গোটা আওয়ামী লীগ আমলে (১৭ বছর) তিনি ঢাকায় অবস্থান করে টাকার পাহাড় গড়েন। এসময় তিনি বেআইনি অস্ত্রধারী,জেলফেরত দাগী আসামী ও উঠতি সন্ত্রাসীদের নিয়ে ঢাকা মিরপুর এলাকায় একটি বাহিনী গড়ে তোলেন। এই বাহিনীর সদস্যদের ৪ টি ব্রিগেডে ভাগ করে তাদের মাধ্যমে গোটা রাজধানীতে, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক বাণিজ্য,চাঁদাবাজী,বুয়া ডিবি টিম সেজে ব্যবসায়ীদের ধরে এনে মুক্তিপন নিয়ে ছেড়ে দেওয়া,টেন্ডার দখলে সরকারী অফিসে তান্ডব সৃষ্টি ও ভাড়াটিয়া খুনি হিসাবে ভয়ংকর সব কাজ করে ঢাকার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করেন।

এই সময়ে তার নামে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকাসহ ঢাকার আশে পাশের গাজীপুর,সাভার,মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগন্জ, নরসিংদী,কেরানীগঞ্জ এলাকায় অসংখ্য মামলা দায়ের হয়। এসব মামলায় কোনটিতে জামিনে আছেন আবার কোনটিতে পলাতক রয়েছেন।

ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করেই আলু ডাকাত এখন শত কোটি টাকার মালিক বলে তথ্য প্রমান মিলেছে। তার বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও এসব তথ্য রয়েছে। তবে সব সময় ছদ্মবেশ ধারণ করে থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হচ্ছে না।

একাধিক সুত্রের দাবী, আলী হাসান আলু ডাকাত এখন ঢাকা ও মাগুরা জেলা বিএনপির দুইজন নেতার শেল্টারে রয়েছেন। তাদেরকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বিএনপির পদ কেনার চেষ্টা করছেন।

আরো জানাগেছে, ৫ আগষ্টের পর তিনি নিজ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। ঢাকায় বসে নির্দেশ দিয়ে এলাকার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ লাগিয়ে শালিসি জরিমানা আদায় ও মামলা মোকর্দ্দমায় জড়িয়ে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছেন। তার ইন্ধনে এলাকায় খুনের মত জঘণ্য ঘটনাও ঘটছে।

এলাকাবাসীর দাবী :  এলাকাবাসী অতিসত্বর এই সাবেক সর্বহারা পার্টির নেতা ও বর্তমানে ভুয়া ডিবি টিম লিডার আলী হাসান আলু ডাকাতকে গ্রেফতার করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র সচিব,পুলিশের মহাপরিদর্শক, ডিআইজি খুলনা, ডিএমপি কমিশনার, ডিবি প্রধান, মাগুরা পুলিশ সুপার,রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও যৌথ বাহিনীর পদক্ষেপ কামনা করেছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *