মো: হাবিবুর রহমান (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় এ মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় খাল বিল নদী নালা ও জলাশয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন পানিতে নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ হচ্ছে। এক শ্রেণির অসাধু মৎস্য শিকারি চায়না দুয়ারী, রিং ও নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে নির্বিচারে ছোট-বড় দেশীয় মাছ ধরছেন। এ অবস্থার ফলে অনেকটাই যেন মাছশূন্য হয়ে পড়ছে।

সরেজমিনে উপজেলার মোগড়া ও ধরখার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একশ্রেণির অসাধু মৎস্য শিকারি নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি, রিং ও কারেন্ট জাল দিয়ে নদী থেকে মাছ নিধন করছেন। এরমধ্যে বেশীভাগ শিকারি রিং জাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন।
উপজেলার ধরখার এলাকার মো: আলী আকবর জানান, এখন চারদিকে পানি হয়েছে। এই পানিতে দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের মাছ দেখা যায়।

কিন্তু এক শ্রেণির লোকজন নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ও চায়না রিং জাল দিয়ে প্রতিদিন সকাল ও বিকেল ছোট ছোট পোনা মাছ ধরে বিক্রি করছেন। এভাবে চলতে থাকলে এলাকার দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

মোগড়া এলাকার আলম মিয়া বলেন, প্রতিদিন সকালে হাটতে বের হলে দেখা যায় চায়না রিং জালের চিত্র। দাম কম হওয়ায় স্থানীয় মৎস্য শিকারিরা এই জালে তারা মাছ ধরে বিক্রি করছেন। যারা চিরাচরিত বড় জাল দিয়ে মাছ ধরতো এখন তাদের তেমন দেখা যায় না বলে জানায়।
মাছ শিকারি রবি দাস জানান, এক সময় বড় বেড় জাল দিয়ে মাছ ধরা হতো। বন্যা না হওয়ায় পানিও তেমন হয়নি। তাছাড়া এখন ওই জালে তেমন মাছ উঠে না। তাই চায়না রিং জাল দিয়ে নদী থেকে মাছ ধরছি।
এদিকে একাধিক মৎস্যজীবী জানায়, আগে খাল বিল জলাশয় ও নদীতে প্রচুর দেশীয় নানা জাতের মাছ পাওয়া যেতো। বছরের বেশি ভাগ সময় জাল দিয়ে ওই সব মাছ ধরে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করা হতো। কিন্তু এখন চায়না জালের কারণে মাছ তেমন বড় হয় না। এই জাল দিয়ে ছোট বড় সব মাছ অবাধে শিকার করা হচ্ছে। চায়না দুয়ারী জাল দিয়ে যেভাবে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছের পোনা ধরা হচ্ছে, দ্রুত তা বন্ধ করা না হলে এসব মাছ অচিরেই হারিয়ে যাবে।
আখাউড়া উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, সর্ব প্রকার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ও চায়না রিং জাল দিয়ে মাছ শিকার করার কোন সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে তিতাস নদীতে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে জাল আটক ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। কোনোভাবেই নিষিদ্ধ রিং জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেওয়া যাবে না। ওইসব নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার বন্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।