চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের দক্ষিন পাশে পূর্ব বিএস ডাঙ্গী গ্রামের মৃত আবুল বাশার মোল্যার ছেলে অসহায় শিক্ষক মনির হোসেনের বসতভিটের মধ্যে ছয় শতাংশ জমি মোঃ আলতাফ হোসেন নামক এক প্রভাবশালী প্রতিবেশী জবর দখলের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।

উক্ত শিক্ষক কিছুদিন আগে তার ২৫ বছরের পুরোনো বসতভিটের উন্মুক্ত জায়গায় ছোট্ট একটি দালান উঠাতে গেলে প্রভাবশালী প্রতিবেশী আলতাফ হোসেন জমির মালিকানা দাবী করে দালান নির্মান কাজ বন্ধ রাখেন। এ ব্যপারে ভুক্তভোগী শিক্ষকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে উপজেলার সার্ভেয়ার মোঃ ফয়সাল আহাম্মেদ বিরোধীয় বসতভিটেয় গিয়ে তদন্ত করেন। তদন্তকালে বাদী বিবাদী উভয় পক্ষ উপস্থিত ছিলেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক মনির হোসেন জানান, তিনি উপজেলা পরিষদের পিছনে চরভদ্রাসন সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। উপজেলার পাশে দিয়ারা ১১ নং চরভদ্রাসন মৌজার এসএ ১৬৩ নং খতিয়ানের দিয়ারা ৮৫০৫ নং দাগে ৩০ শতাংশ জমির মধ্যে উক্ত শিক্ষকের বসতভিটে। বিগত ২৫ বছর ধরে তিনি বৃদ্ধ মা, বোন, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে পৈত্রিক বসতভিটেয় বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতী উক্ত শিক্ষক তার বসতভিটেয় একটি দালান ঘর নির্মান করতে থাকেন।

দালানের ছাদ ঢালাইয়ের দিন প্রভাবশালী প্রতিবেশী আলতাফ হোসেন তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে হঠাৎ জমির মালিকানা দাবী করেন এবং দানাল নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। এ ব্যাপারে চরভদ্রাসন থানার গোল ঘরে একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে সেখানে প্রতিপক্ষ আলতাফ হোসেন ২০২২ সালের ১০৮৯ নং একটি দলিল প্রদর্শন করে জমির মালিকানা দাবী করেন।

উক্ত দলিলে অপূর্ব লাল বিশ্বাস নারায়ন ও পলাশ চন্দ্র বিশ্বাস নামক দুই দাতা ভারতীয় নাগরিক বলেও জানা যায়। তাই ভুয়া বলে দাবী করে দলিলের বিরুদ্ধে শিক্ষক মনির হোসেন কোর্টে একটি মামলা করেছেন। আর থানায় অনুষ্ঠিত সালিশ বৈঠকে দেওয়া সিদ্ধান্ত মোঃ আলতাফ হোসেন মানেন নাই বলে জানা যায়।
বরং প্রভাবশালী আলতাফ হোসেন গংরা গত ২৩ আগষ্ট গভীর রাতে দেশীয় অস্ত্রসসস্ত্র নিয়ে শিক্ষকের বসত ঘরের উপর হামলা করলে ভুক্তভোগী শিক্ষক ফরিদপুর দ্রæত বিচার আদালতে আরেকটি মামলা করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক আরও জানান, “ প্রভাবশালী আলতাফ হোসেন এক সময় টেইলার্সের দোকানে কর্মচারী ছিল। বিগত ১৬ বছরে আ’লীগের ছত্রছায়ায় সে নামে বেনামে দলিল বানিয়ে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা সম্পদের মালিক হয়েছেন। মানুসের জমি দখল করাই তার নেশা ও পেশা”।
বুধবার উক্ত শিক্ষকের আরেক প্রতিবেশী বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “ শিক্ষক মনির হোসেনের পিতা আবৃল বাশার মোল্যা ও তার পরিবার এ বসতভিটের জমি ক্রয় করে দীর্ঘকাল ধরে বসবাস করে চলেছেন।
পিতার মৃত্যুর পর শিক্ষক মনির হোসেন বাড়ীতে একটি বিল্ডিং উঠাতে গেলে বাড়ীর সামনের বসতি ভুমি দস্যু আলতাফ হোসেনের আতে ঘাঁ লেগেছে। কেননা আলতাফ হোসেন চাচ্ছে উক্ত শিক্ষকের উন্মুক্ত জায়গাটুকু দখল করতে পারলে তার সামনের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকের পিছনের দখলীয় জমাজমি একাকার বিস্তার লাভ করলে কোটি কোটি টাকার সম্পদে পরিনত হবে”।
আর প্রভাবশালী প্রতিবেশী আলতাফ হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, “শিক্ষক মনির হোসেনের ২৫ বছরের পুরোনো বসতভিটে এটা সত্য এবং তার দালান উঠানোর সময় আমি নিজেও সহায়তা করেছি। কিন্তু এখন কাগজপত্রে আমি পাইলে আমার জমি আমাকে ছেড়ে দেবে না কেন ?”।