আমরা এখন অন্যদের ঋণ দিচ্ছি: তথ্যমন্ত্রী

জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : আমাদের মাথাপিছু আয় সম্প্রতি ভারতকে অতিক্রম করেছে জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‌‘আমরা এখন অন্য দেশকে ঋণ দিচ্ছি। কিছুদিন আগেও শ্রীলঙ্কাকে ২০০ মিলিয়ন ডলারের ১০ বছর মেয়াদি ঋণ দিয়েছি। গণমাধ্যমে এসেছে, একসময়ের ঋণগ্রহিতা দেশ এখন ঋণ দিচ্ছে।’


বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৯ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সাহসী জননেত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘একসময় বাংলাদেশ সাহায্যপ্রার্থী ছিল, আমরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে সাহায্য গ্রহণ করতাম। জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার সময় অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বাংলাদেশের বাজেট পেশ করতে প্যারিসের বৈঠকে দেন-দরবার করতেন দাতাগোষ্ঠীর সঙ্গে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। এখন দাতাগোষ্ঠীরা আমাদের সাহায্য দিতে চায়, কিন্তু আমরা নিতে চাই না। পদ্মাসেতু নিয়ে প্রথমে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার পর তারা আবার আমাদের সাহায্য দিতে চেয়েছিল, কিন্তু আমরা সাহায্য নিইনি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিজেদের রাজস্ব এবং অন্যান্য খাত থেকে যে আয় ও সংগ্রহ তা থেকেই আমাদের আয় এবং তার ওপরেই বাজেট দেওয়া হয়। সেখান থেকেই বাস্তবায়ন করা হয়। আমাদের বাজেট বাস্তবায়নের হার ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ। আমরা এখন সাহায্য নিই না; বরং সাহায্য করি।’

তিনি বলেন, ‘এই করোনায় ভারতকেও আমরা সাহায্য করেছি, তারাও আমাদের সাহায্য করেছে। আমাদের মাথাপিছু আয় সম্প্রতি ভারতকে অতিক্রম করেছে। এ সবই বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের কারণে সম্ভব হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বের কারণেই বিশ্বজুড়ে করোনার মাঝেও অনেক দেশের তুলনায় আমরা ভালো আছি। বিশ্বের ১৩০টি দেশ যখন টিকা দেওয়া শুরু করেনি, তখন বাংলাদেশ টিকা দেওয়া শুরু করেছে। মাঝখানে ভারতের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেরাম থেকে টিকা পাইনি। কিন্তু আমাদের সরকার অন্য দেশ থেকে টিকা সংগ্রহের কথা আগে থেকেই বলে রেখেছিল। পত্র-পত্রিকায় অনেক বিশেষজ্ঞের মতামত দেখি, সরকার যদি সেসব যোগাযোগ করতে না পারতো তবে অন্য সূত্র থেকে টিকা আসতো না।’

‘যখন সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা আসার ঘোষণা দেওয়া হলো, তখন বিএনপি থেকে অপপ্রচার চালানো হলো। এই টিকা কাজ করবে না, মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে, মানুষ মারাও যেতে পারে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাদের সিনিয়র নেতারা এই নিয়ে টেলিভিশনের সামনে অপপ্রচার চালিয়েছেন। টিকা দেশের আসার পর যেন কেউ তা গ্রহণ না করে সেজন্যও অপপ্রচার চালিয়েছেন। তাদের অনেকে আবার গোপনে টিকা নিয়েছেন, কেউবা প্রকাশ্যে টিকা নিয়ে বলেছেন—টিকা নিয়ে স্বস্তিবোধ করছি।’—বলেন হাছান মাহমুদ।

টিকা নিয়ে বিএনপি বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‌‌‘বাংলাদেশ সরকার যখন বিভিন্ন সূত্র থেকে করোনার টিকা গ্রহণ করছে, তখন বিএনপি ভেতরে ভেতরে চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ যেন অন্য দেশ থেকে টিকা না পায়। সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপার থেকে, বিএনপি’র বৈদেশিক শাখা থেকে এই চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কোনও ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। আমাদের সরকার যাদের শরীরে টিকা দিলে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়, সে সব মানুষের টিকা দিতে বদ্ধপরিকর। বিভিন্ন জায়গা থেকে টিকা আসছে, আবারও ব্যাপকহারে টিকা দেওয়া শুরু হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বলরাম পোর্দ্দার, ব্যারিস্টার জাকির আহম্মদ প্রমুখ।