খালেদা জিয়া মুক্তি পেলেই গণতন্ত্র মুক্তি পাবে: ফখরুল

জাতীয় ঢাকা রাজধানী রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : খালেদার জিয়াকে গণতন্ত্রের প্রতীক উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি নেত্রী মুক্তি পেলেই গণতন্ত্র মুক্তি পাবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে দেওয়া বক্তব্যে ফখরুল এ কথা বলেন। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালিত হয়। ফখরুল বলেন, আজ দেশে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। নিম্নআদালতে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সাজা দেওয়া হলো, উচ্চআদালত তা বাড়িয়ে ১০ বছর করে দিলেন। অথচ তিনি এ মামলায় জামিনযোগ্য হলেও তাকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। আবার দেখলাম, পাবনার ঈশ্বরদীতে ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যে গুলির ঘটনার এত বছর পর এ মামলায় নতুন করে চার্জশিট দিয়ে নতুন নতুন নাম দিয়ে রায় দেওয়া হলো। যেখানে ৯ জনকে ফাঁসি, অনেককে যাবজ্জীবনসহ একাধিক ব্যক্তিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হলো। এ রায় প্রমাণ করে দেশে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। শাসক দলের যা ইচ্ছে তাই তারা করছে। তিনি বলেন, সরকার নির্বাচিত না, তাই তারা দেশে মেগাপ্রকল্প করছে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করতে। জনগণের জন্য তারা ভাবছে না। এলএনজি আমদানিতে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। জনগণের পকেট কাটার মাধ্যমে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করার ভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে শাসকগোষ্ঠী। বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, আজ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। অথচ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দিয়েছেন খালেদা জিয়া। যে নেত্রী সারাটা জীবন দেশের মানুষের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য ত্যাগ শিকার করেছেন, আজ সেই নেত্রীকে কারাগারে রাখা হয়েছে। জামিনযোগ্য মামলায় সম্পূর্ণ অনৈতিক, অমানবিক এবং বেআইনিভাবে আটক করে রাখা হয়েছে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করতে হবে। মির্জা ফখরুল প্রস্তাবিত নতুন বাজেট প্রস্তাব এবং সম্প্রতি গ্যাসের দাম বাড়ানোর সমালোচনাও করেন। তিনি বলেন, কী কারণে গ্যাসের দাম বাড়ানো হল? এর একমাত্র কারণ হচ্ছে- এই যে এলএনজি আমদানি করা হবে, তাদের লোকগুলোকে সেখানে পয়সা পাওয়ানোর জন্য। দুর্নীতিকে পাকাপোক্ত করার জন্য এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে এবং সেটার ভর্তুকি- যে বেশি দাম দিতে হচ্ছে, গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সেই ভর্তুকি জনগণের কাছে থেকে নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সাধারণ জনগণের ওপর করের বোঝা বাড়ানোর সমালোচনা করে অর্থনীতির সাবেক শিক্ষক ফখরুল বলেন, ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে ভ্যাটের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। জনগণের পকেট কেটে আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী ও সুবিধাভোগকারী ব্যক্তি যারা আছেন, তাদের পকেট ভারী করার জন্য এই বাজেটে তৈরি করা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আজকে কোথাও মানুষের কোনো শান্তি নেই, স্বস্তি নেই। প্রতিটি মানুষ এখন এই অস্বস্তিকর দমবন্ধ করা পরিবেশ থেকে, এই অগণতান্ত্রিক পরিবেশ থেকে মুক্তি চায়। এই মুক্তি এখন পুরোপুরি একাকার হয়ে গেছে এদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির সঙ্গে। ফখরুল বলেন, বেগম জিয়া গণতেন্ত্রর প্রতীক। যদি তিনি মুক্তি পান তাহলেই গণতন্ত্র মুক্তি হবে। সেই মুক্তির জন্য শুধু আইনি লড়াইয়ের ওপর নির্ভর করলে হবে না, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, সমস্ত মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। পরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না অনশনকারীদের অনশন ভঙ্গ করান। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় এই কর্মসূচিতে গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ বিএনপি সমর্থক বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *