র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (ৱ্যাব)কে সকল বিতর্কের উর্ধে রাখা হউক

অন্যান্য এইমাত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ সন্ত্রাসীরা যখন নিরীহ মানুষদের হত্যা করে, ধর্ষন করে, চাঁদাবাজি করে এবং ডাকাতি করে, তখন কি তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না? সন্ত্রাসীদের জন্য মানবাধিকার নাকি সাধারণ জনগণের জন্য মানবাধিকার? সাধারণ জনগণের মানবাধিকার রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব নাকি সন্ত্রাসীদের মানবাধিকার রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব? সন্ত্রাসীদের দমন করে সাধারণ জনগণের জান ও মাল রক্ষা করা ৱ্যাব তথা সরকারের দায়িত্ব।


বিজ্ঞাপন

২৬শে মার্চ ২০০৪ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার সন্ত্রাস দমন করার লক্ষ্যে ৱ্যাব গঠন করে। ৱ্যাব সৃষ্টির শুরু থেকে খুব ক্ষিপ্রতা ও দক্ষতার সাথে সন্ত্রাসীদের দমন করে সাধারণ মানুষের আস্থা ও ভালবাসা অর্জন করেছে। ৱ্যাব বাংলা ভাই, জঙ্গী আব্দুর রহমান, কালা জাহাঙ্গির, পিচ্চি হান্নান, মুরগী মিলন বাহিনীসহ আরও অনেক সন্ত্রাসী বাহিনীকে অত্যন্ত সফলভাবে দমন করে সাধারণ জনগণের জান ও মাল রক্ষা করে আসছে। তাই ৱ্যাব আজ সকল বাংলাদেশীর গর্বের একটি বাহিনী।

যদিও ৱ্যাবের সৃষ্টি হয় সন্ত্রাস নির্মূল করার জন্য, তবে জন্ম লগ্ন থেকে ৱ্যাবের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য অভিযোগ করা হয়। এক সময় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ৱ্যাবের বিরুদ্ধে তাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের দমনের অভিযোগ করেছে। আর এখন ৱ্যাব সৃষ্টিকারী বিএনপি সেই একই ধরণের অভিযোগ করে আসছে। সত্য বা মিথ্যা কোন বিতর্কে যেতে চাই না। জনগণের ভালবাসায় সিক্ত এই ৱ্যাব বাহিনীকে রাজনীতির উর্ধে বা বিতর্কের উর্ধে রাখা হউক এবং শুধু জনগণের কল্যানে ব্যবহার করা হউক।

লন্ডন ভিত্তিক ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (EIU) ১৬৭টি দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পর্যালোচনা করে দেশগুলির শাসন ব্যবস্থাকে মোট চার ভাগে ভাগ করেছে, সেগুলি হল Full Democracy বা পূর্ণ গণতন্ত্র, Flawed Democracy বা ফাটা গনতন্ত্র, Hybrid Regime বা মিশ্র শাসন এবং Authoritarian বা কর্তৃত্ববাদী শাসন। Full Democracy বা পূর্ণ গণতন্ত্রে নরওয়ে, আইসল্যান্ড, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, জাপান, দক্ষিন কোরিয়া ও তাইওয়ানসহ মোট ২৩টি দেশকে দেখানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র Full Democracy বা পূর্ণ গণতন্ত্রে স্থান পায় নাই। Flawed Democracy বা ফাটা গনতন্ত্রে ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, ইটালী, বেলজিয়াম, ইসরায়েল ও ভারতসহ মোট ৫২টি দেশকে দেখানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে Flawed Democracy বা ফাটা গনতন্ত্রে দেখানো হয়েছে। Hybrid Regime বা মিশ্র শাসনে তুরষ্ক, পাকিস্তান, নেপাল, আর্মেনিয়া, লাইবেরিয়া ও সেনেগালসহ মোট ৩৫টি দেশেকে দেখানো হয়েছে। আর Authoritarian বা কর্তৃত্ববাদী শাসনে রাশিয়া, চীন, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, ভেনিজুয়েলা, সৌদী আরব, আমিরাত, ওমান, কাতার ও ইরানসহ মোট ৫৭টি দেশকে দেখানো আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিজ দেশে গনতন্ত্র ও মানবাধিকারের ইতিহাস সন্তষজনক নয় অথচ এই দেশটি নিজের প্রভাব খাঁটিয়ে অপেক্ষাকৃত দূর্বল দেশগুলোকে গনতন্ত্র ও মানবাধিকারের উপর জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র নিজে ইরাক, আফগানিস্তান ও লিবিয়াতে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের গৃহপালিত রাষ্ট্র ইসরায়েল মানবাধিকারের ধার ধারে না। ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েল দীর্ঘ ৭৩ বছর ধরে চালাচ্ছে নারকীয় হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়ন। যুক্তরাষ্ট্র সব সময় ইসরায়েলের জঘন্য রকমের মানবাধিকার লঙ্ঘন দেখেও না দেখার ভান করে যাচ্ছে। তাই বাইডেন সাহেবের উচিৎ নিজের দেশের ও ইসরায়েলের গনতন্ত্র ও মানবাধিকার আগে ঠিক করা।