গণভবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা কাঠগড়ায় শোভন-রাব্বানী

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন রাজধানী রাজনীতি

বিশেষ প্রতিবেদক : মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই ছাত্রলীগের কমিটির জন্য নতুন নেতৃত্ব খোঁজার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি চান না বর্তমান কমিটি আর ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করুক। সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের উপস্থিতিতে তিনি এ নির্দেশ দেন।
এদিকে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে ছাত্রলীগের কয়েক নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গত শনিবার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিতে বলেন। সেদিন ক্ষমতাসীন দলটির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা এ কথা জানিয়েছিলেন। তবে এও বলেছিলেন, শিগগিরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা নাও আসতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
গত বছর ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার পর ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
সেদিন রাতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাদের নাম ঘোষণা করেন। তারপর দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও প্রায় ১০ মাস পর ১৩ মে ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। দুই বছর মেয়াদি নতুন এই কমিটি ঘোষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘাতও সৃষ্টি হয়।
গণভবনের এক কর্মকর্তা বলেন, সোমবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংসদে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের ব্যাপারে কথা ওঠান। কাদের প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, নেত্রী ছাত্রলীগের আগাম সম্মেলন দিয়ে দেব? জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, সম্মেলন দিতে হবে না। শোভন-রাব্বানীকে আমি নেতা বানিয়েছি, পুরো ব্যাপারটা আমিই দেখছি। এখন সম্মেলনের আওয়াজ উঠলে জটিলতা আরও বাড়বে। ফলে সম্মেলন নিয়ে তোমাদের ভাবতে হবে না।
গণভবনের আরেক কর্মকর্তা বলেন, শোভন-রাব্বানীকে আপাতত গণভবনে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, গত দুই দিন গণভবনে শোভন-রাব্বানী প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়েও পাননি।
গত শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা আরও জানিয়েছিলেন, সেদিন সন্ধ্যায় দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের প্রসঙ্গ উঠলে কমিটি ভেঙে দিতে বলেন শেখ হাসিনা।
সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা বলেন, শেখ হাসিনা ভীষণ ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের বর্তমান শীর্ষ নেতাদের ওপর। শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে ওই নেতারা আরও জানান, তিনি বলেছেন, আমি ছাত্রলীগের এমন নেতা চাই না, যাদের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ পর্যন্ত উঠেছে।
তারা জানান, ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী শনিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেও দেখা দেননি তিনি। উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তখন দুজনকে গণভবন থেকে চলে যেতে বলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গণভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সামনে পেয়ে সবার সামনেই ‘বকাঝকা’ করেন। পরে তারা বেরিয়ে যান।
বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বলেন, শেখ হাসিনা বৈঠক শেষে ছাত্রলীগের সাবেক দুই নেতা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমানের সঙ্গে ছাত্রলীগ প্রসঙ্গে ১০ মিনিট কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *