মো:রফিকুল ইসলাম,নড়াইলঃ
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের চর ব্রাহ্মণডাংগা গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাড়িঘর ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। গত (২৩ এপ্রিল) রবিবার রাতে চর ব্রাম্মনডাংগা গ্রামে এ ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়,ওই গ্রামে সামাজিক ২টি দল বিরাজমান। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দেন,তাইজল হোসেন এবং অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দেন,মোঃ নজির মোল্যা। দীর্ঘদিন ধরে উভায় গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল,কয়েকদিন আগে ব্রাম্মন ডাংগা বাজারে তাইজল মোল্যার দলের এক ব্যাক্তিকে মারপিট করলে দু গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার সুত্রপাত ঘটে। তারই ধারাবাহিকতায় গত (২৩ এপ্রিল) রবিবার সন্ধ্যায় তাইজল গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চরব্রাম্মনডাংগা গ্রামের শহিদুল্লাহ, রমজান,নিয়ামত,মুন্নু আলী,তানু মোল্যা ও হালনা গ্রামের জাকির মোল্যা (ইউপি সদস্য) ও মফিজুর কাজীর বাড়ি ভাংচুর করে। এসময় চর ব্রাম্মনডাংগা গ্রামের মৃত-আছির উদ্দিন মোল্যার ছেলে মোঃ লুৎফর রহমান (৮৭) সহ ৩/৪ জনকে কুপিয়ে গ্রুতর আহত করে ফ্লিম ষ্টাইলে এলাকা ত্যাগ করে। এসময় আহত লুৎফর মোল্যাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক গ্রুপের দলপতি নজির মোল্যার সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। অপরদিকে অন্য দলপতি তাইজলের সংগে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায় নাই। এঘটনায় লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাসির উদ্দিন সংগে কথা হলে তিনি জানান, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে পরিবেশ শান্ত। অভিযোগ দিলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে,নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের কোলা গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিপক্ষের সাজ্জাদ (৩০) নামের এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক যখম ও নার্গিস বেগম (৪২) কে বেধড়ক মারপিট করে। ঘটনার সাথে জড়িত অভিযোগে পুলিশ একজনকে আটক করেছে। বর্তমান ওই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার কোলা গ্রামের মাহাবুর শেখ সমর্থিত লোকজনদের সাথে একই গ্রামের শাহাদত শেখ সমর্থিত লোকজনদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে ঈদের পরের দিন গত রোববার (২৩ এপ্রিল) বিবাদমান ওই দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে । এ ঘটনার পর ওইদিন সন্ধ্যায় লোহাগড়া থানা পুলিশের নির্দেশনায় বিবাদমান দুটি পক্ষ দ্বন্দ্ব সংঘাতে লিপ্ত হবে না মর্মে পুলিশের নিকট মুচলেকা প্রদান করে। সোমবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ওই গ্রামের মৃত-সিরু শেখের ছেলে মাহাবুর শেখের নেতৃত্বে আব্দুল্লাহ,বিল্লাল,
সাগর,সুজন,নাসা,ইমরানসহ ২০/২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী রামদা,লাঠিসোঠা,লোহার রড,ক্ষুর, চাকু নিয়ে প্রতিপক্ষের শেখ সাজ্জাদ (৩০) এর উপর হামলা চালিয়ে তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। আহত সাজ্জাদ ওই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মুজিবর শেখের ছেলে। এলাকাবাসী আহত সাজ্জাদকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করেন। অপরদিকে শাহাদাৎ শেখ সমথিত লোকজন শাহাবুদ্দিন মোল্যার স্ত্রী নার্গিস বেগম (৪২) কে এলোপাতাড়ি ভাবে মারতে থাকলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া হাসপাতালে আনলে শাহাদাৎ সর্মথিত লোকজন হাসপাতালে ওই মহিলাকে আবার ও মারধর করে। ওই মহিলা লোহাগড়া হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন,গ্রামের কতিপয় ৩/৪ জন লোক এই বিরোধ জিইয়ে রেখেছে। লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নাসির উদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের জানান,হামলার ঘটনায় জড়িত থাকায় ওই গ্রামের মৃত-সিরু শেখের ছেলে ইসরাফিল শেখ (৪৮) কে আটক করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোন পক্ষ অভিযোগ করেনি।অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।